January 18, 2025, 3:52 am

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
মাঠে মাঠে হলদে ফুলের চাদরে ঢাকা, বরেন্ত্র অঞ্চলে সরিষার কম আবাদ হলেও বাস্পার ফলন আশা করছেন কৃষক রাজশাহীতে গ্রেপ্তার ৩ ভূয়া সমন্বয়ক কারাগারে দোয়ারাবাজার সীমান্তে ভারতীয় দুই নাগরিক আটক পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে ভুয়া ডিবি চক্রের দুই সদস্য আটক গোদাগাড়ীতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ পুলিশ ও সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করছে একটি সুবিধাবাদী মহল তিতাস গ্যাসের হাজার হাজার অবৈধ সংযোগে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার সেনবাগের ৭নং মোহাম্মদ পুর ইউনিয়ন ছাত্রদলের কর্মীসভা ও মিছিল অনুষ্ঠিত ত্রিশালে তারুণ্য উৎসবে দুর্নীতি না করার শপথ নিলেন ৩৫ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সততা সংঘের ৩৮৫ সদস্য মাধবপুরে আওয়ামী লীগ নেতা মিজান গ্রেফতার
মাঠে মাঠে হলদে ফুলের চাদরে ঢাকা, বরেন্ত্র অঞ্চলে সরিষার কম আবাদ হলেও বাস্পার ফলন আশা করছেন কৃষক

মাঠে মাঠে হলদে ফুলের চাদরে ঢাকা, বরেন্ত্র অঞ্চলে সরিষার কম আবাদ হলেও বাস্পার ফলন আশা করছেন কৃষক

রাজশাহী থেকে মো. হায়দার আলী: রাজশাহীর গোদাগাড়ীর ফসলের মাঠ সরিষার হলুদ ফুলে ছেঁয়ে গেছে। অগ্রহায়ণের হিমেল বাতাসে দোল খাচ্ছে হলুদ সরিষার ফুল। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত যেমন মাঠ, তেমনি বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষকেরা । এক সাথে ফোটা ফল গুলো রোদ ঝলমল আলোয় প্রকৃতির মাঝে অপরুপ সৌন্দর্যর শোভা ছড়াচ্ছে। আর তা দেখতে ভীড় করছেন প্রকৃতি প্রেমীরা ।

কৃষকরা আগে এসব জমিতে শুধু ইরি-বোরো এক ফসলী আবাদ করে হাজার হাজার হেক্টর জমি পতিত রাখত। কালের বিবর্তনের সাথে সাথে এ অঞ্চলের কৃষকদেরও কৃষি ক্ষেত্রে বিপ্লব ঘটেছে।

তারা বিগত দু, যুগ ধরে ইরি-বোরো, আমন, টমেটো করোলা. লাউ, পটল, শীম, ভূট্টা, তরমুজ আবাদের পাশাপাশি সরিষার আবাদেও ঝুঁকেছে। তাই এখন সরিষার হলুদ ফুলে ফুলে ঢাকা বরেন্দ্র অঞ্চলের বিস্তীর্ণ মাঠ।

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলানসহ বরেন্দ্র অঞ্চলে চলতি রবি মৌসুমে সরিষা আবাদ কম হয়েছে। । এবছর ৭৭ হাজার ৩৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ। তবে আবাদ করা হচ্ছে ৬৫ হাজার ২৯৭ হেক্টর জমিতে। গেল বছর তেলবীজ জাতীয় ফসলটি আবাদ হয়েছিল ৭৭ হাজার হেক্টর জমিতে।

রাজশাহী কৃষি অধিদপ্তর জানিয়েছে, চাষের জমি কমলেও উৎপাদনে খুব একটা প্রভাব পড়বে না। এখন পর্যন্ত ছত্রাক বা রোগবালাই না থাকায় এবার উচ্চ ফলন পাওয়া যাবে। গত বছর উৎপাদন হয়েছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৪৬০ টন। এ বছর ফলন ৬০ হাজার টন উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সরিষা চাষে জমির উর্বরতা বাড়ে। প্রতি বিঘা জমি থেকে চলতি মৌসুমে গড়ে ছয়-সাত মণ সরিষা পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বীজ বপন থেকে ৭০-৭৫ দিনে ফসলটিতে তেমন সেচ দিতে হয় না। বপনের সময় মাটির নিচে সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার দিলেই চলে। অন্যান্য ফসলের তুলনায় সরিষা চাষে কম খরচ, কম শ্রম ও দ্রুত ফলন পাওয়া যায়। এ কারণে চাষিরা লাভ বেশি পান। ভোজ্যতেল হিসেবে সরিষার চাহিদা থাকলেও চলতি বছর চাষের জমি কমেছে।

রাজশাহীর গোদাগাড়ীসহ ৯টি উপজেলায় সরিষার চাষ করা হচ্ছে। আমন ধান কাটার পর উপজেলার কৃষকরা বোরো মৌসুমের আগেই সরিষা চাষ করেছেন। চলতি বছর বারি-১৪, বারি-১৫, বারি-১৭, বিনা-৯, বিনা-৪, টরি-৭ জাতের সরিষা চাষ করেছেন তারা।

সরেজমিন গোদাগাড়ী উপজেলার কমলাপুর, ভাজনপুর, রেলগেট বিল, বিলপাতিকলা, দুর্গাদহ বিল, রেলগেট বিল, সুশাডাং, বোগদামারী, কালিদীঘিসহ বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, সরিষার হলুদ ফুলে ভরে গেছে পুরো মাঠ। ভোরের কুয়াশা, সকালের মিষ্টি রোদ কিংবা বিকেলের শীতের স্নিগ্ধতার মধ্যে দিগন্তজোড়া হলুদ সরিষা ফুল এক অন্য রকম সৌন্দর্য ফুটিয়ে তুলছে মাঠে মাঠে। কোথাও কোথাও সরিষাখেতে মৌ-বক্স বসিয়ে মৌমাছির মাধ্যমে মধু সংগ্রহের কাজ চলছে।

গোদাগাড়ীর বালিয়াঘাট্টা গ্রামের চাষি শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছরই তিনি চার বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেন। এবার কৃষি কর্মকর্তারা আরও বেশি জমিতে চাষ করার পরামর্শ দেন। গত বছর ভালো লাভ হওয়ায় তিনি রাজি হয়ে যান। এবার চাষ করেছেন সাত বিঘা জমিতে। এই জমি থেকে ইতোমধ্যে দুই হাজার টাকার শাক বিক্রি করেছেন তিনি।

চব্বিশনগর গ্রামের আব্দুল লতিফ মাষ্টার জানান, এবার তিনি নয় বিঘা জমিতে বারি-১৪ জাতের সরিষা চাষ করেছেন। গত বছর তিনি প্রতি বিঘায় সাত-নয় মণ ফলন পেয়েছিলেন। প্রতি মণ সরিষা শুরুতে ২ হাজার ৩০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকা বিক্রি করেছিলেন। এবারো তেমনটিই আশা করছেন।

চাষী আব্দুল মাতিন জানান, সরিষা চাষে বিঘাপ্রতি খরচ ৫-৬ হাজার টাকা। চাষের ৭০-৭৫ দিনের মধ্যে ফলন পাওয়া যায়। গত বছর সরিষা বিক্রি হয়েছে প্রতি মণ ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা। বাজারে এখনো ভালো মানের সরিষা বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকা। কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করছেন।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক উম্মে ছালমা বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার সরিষার উচ্চ ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এবার চাষের জমি কমেছে। প্রতি হেক্টরে ফলন ধরা হয়েছে ১ দশমিক ৬ টন। সে হিসাবে চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৪ হাজার ৪৭৫ হাজার টন সরিষা উৎপাদন হতে পারে।

মোঃ হায়দার আলী
নিজস্ব প্রতিবেদক,
রাজশাহী।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD