খাল-বিলে পানি কমে যাওয়ায় সুজানগরে চলছে মাছ ধরার উৎসব

 

এম এ আলিম রিপনঃ  সুজানগর উপজেলার খাল বিলে বর্তমানে পানি কমে যাওয়ায় চলছে মাছ ধরার উৎসব চলছে। ভোর হতে হতেই শুরু হয় মাছ ধরার পালা। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে আবাল বৃদ্ধ বণিতা সকলেই  বর্তমানে মাছ ধরার উৎসবে মেতেছে। খেপলা জাল, টাক জাল, ঠ্যালা জালসহ প্রভূতি নিয়ে এবং শিশু-কিশোররা খালি হাতেই খালে-বিলে নেমে পড়ে মাছ ধরতে।যেখানে হঁাটু পানি সেখানে হাত দিয়ে সেচের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর খালে-বিলে মাছ ধরছে মানুষ। বিকাল পর্যন্ত চলে মাছ ধরার এই প্রক্রিয়া। পরে নিজেদের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত মাছ হাটবাজারে বিক্রি করে দেয়। আর মাছ ধরায় সামিল হতে পেরে শিশু-কিশোরদের আনন্দের যেন শেষ নেই। কাদা-পানিতে সারা শরীর মাখামাখি করে তারা মাছ ধরার আনন্দে বিভোর। শীতের এই সময়ে গ্রাম অঞ্চলের খাল, বিল, নদী-নালা, হাওর-বাওড় ও ফসলি মাঠের পানি কমে যায়। আর কম পানিতে মাছ ধরার ধুম পড়েছে এই উপজেলায়। আগেরকার দিনে গ্রামবাসী দল বেঁধে  খাল বিলের পানিতে নেমে মাছ শিকারের আনন্দে মেতে উঠতো। এটা এক সময় উৎসব আর ঐতিহ্য ছিল যা এখন আর আগের মতো নেই। বর্তমানে সুজানগরের বিভিন্ন স্থানের অধিকাংশ নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুরের পানি শুকিয়ে গেছে। কোথাও হঁাটুপানি, আবার কোথাও কাদা-পানি থাকা এসব খাল-বিলে রয়েছে নানা প্রজাতির দেশি মাছ। আর এ মাছ ধরতে দল বেঁধে মানুষ  খাল বিলে নেমেছে । সবার চোখ-মুখে খুশির ঝিলিক। এ যেন কোনো হারিয়ে যাওয়া সময়ের দৃশ্য। সুজানগর প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুস শুকুর জানান,পেশাজীবী জেলে থেকে শুরু করে শৌখিন মৎস্য শিকারি ও শিশু কিশোরেরা বর্তমানে খাল বিলে নেমে মাছ শিকার করছে। শীত মৌসুমেই  উপজেলার গ্রামগঞ্জে মাছ ধরার এই চিত্র চোখে পড়ে। কই, শিং, মাগুর, শোল, টাকি, পুঁটি, টেংরা প্রভূতি দেশি মাছ ধরা পড়ে বেশি। তাছাড়া খইলসা, বোয়াল, চিকরা, বাইন, কাতলা, সিলভার কার্পও ধরা পরে। উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা ফিরোজ হোসেন সবুজ বলেন, এটি গ্রামবাংলার অন্যতম ঐতিহ্য। এলাকার খালে শুকনো মৌসুমে পানি কমে যাওয়ায় মাছ ধরার প্রতিযোগিতা চলছে। এ যেন এক অন্যরকম আনন্দ। ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা হাসান উদ্দিন জানান,বর্তমানে গ্রামগঞ্জের খাল-বিলে মাছ ধরার উৎসব চলছে। হাটবাজারে বেশি পরিমাণে মাছ পাওয়া যাচ্ছে এবং অন্যান্য সময়ের তুলনায় দামও এখন তুলনামূলক কম। উপজেলা  মৎস্য কর্মকর্তা নূর কাজমীর জামান খান বলেন, এক সময় গ্রাম বাংলায় এভাবে মাছ শিকার করা উৎসব ছিল। এমন ঐতিহ্য আজ অনেকটা হারিয়ে গেছে। তারপরও এখন এ দৃশ্য চোখে পড়ে।

এম এ আলিম রিপন
সুজানগর প্রতিনিধি।।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *