December 22, 2024, 2:06 am
আলিফ হোসেন,তানোরঃ
রাজশাহীর তানোরে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ)গভীর নলকূপের দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে রাজনৈতিক পরিচয়ের প্রভাবশালী চক্র। এসবরে পাশাপাশি বিএমডিএ’র একশ্রেণীর কর্মকর্তা-কর্মচারীর নেপথ্যে মদদে। স্থানীয় আওয়ামী মতাদর্শী দালাল চক্র সিন্ডিকেট গভীর নলকুপ অপারেটর নিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিক আবেদনকারীর কাছে থেকে বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তারা তাদের পচ্ছন্দের ব্যক্তিকে অপারেটর নিয়োগ দিতে বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে।এদিকে কৃষকদের দাবি আওয়ামী লীগের খোলসে যারা দীর্ঘ প্রায় ১৭ বছর গভীর নলকূপ নিয়ন্ত্রণে রেখে সাধারণ কৃষকদের শোষণ করে মোটাতাজা হয়েছে, এবার তারা খোলস পাল্টিয়ে বিএনপির খোলসে ফের গভীর নলকুপের নিয়ন্ত্রণ নিতে চাইছে। আবার বিএমডিএ কতিপয় কর্মকর্তা আত্মীয়তার সুত্রে এসব খোলস বদল কারির পক্ষ নিয়েছেন বলে কৃষকেরা মনে করছে। যা নিয়ে কৃষক সমাজ রীতিমত বিক্ষুব্ধ। কৃষকদের দাবি
খোলস বদল কারিরা যেনো কোনো অবস্থাতেই অপারেটর হতে না পারে। তারা বলেন, স্কিম ভুক্ত কৃষকের মতামত উপেক্ষা করে, যদি আওয়ামী মতাদর্শী খোলস বদলকারী কাউকে অপারেটর নিয়োগ করা হয়।তাহলে তারা সেটা কোনো অবস্থাতেই মেনে নিবেন না, প্রয়োজনে আন্দোলনে নামবেন।
উপজেলার পাঁচন্দর, চাঁন্দুড়িয়া, কামারগাঁ ও বাধাইড় ইউনিয়নে(ইউপি) গভীর নলকুপ নিয়ে বেশী অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের (ইউপি) জেল নম্বর ৮০, কচুয়া মৌজার ৪৮৯ দাগে বিএমডিএর গভীর নলকুপ রয়েছে। অপারেটর জিয়া দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছর শান্তিপূর্ণভাবে গভীর নলকুপ পরিচালনা করে আসছেন।সম্প্রতি কচুয়া গ্রামের নজরুল ইসলামের পুত্র যুবলীগ নেতা রুবেল আলী দলবল নিয়ে গভীর নলকুপ জবরদখল করে আলুখেতে পানি সেচ বন্ধ করে দিয়েছে।
ভুক্তভোগী কৃষকরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে যারা গভীর নলকূপের অপারেটর তাদের বাদ দিতে কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।তানোরে এরপর থেকে শুরু হয়েছে গভীর নলকূপ জবরদখলের মহোৎসব।
বিএমডিএর গভীর নলকূপে আধিপত্য নিতে চলছে নানামুখী তৎপরতা। গত ১৭ বছর ধরে যারা গভীর নলকুপের অপারেটর ছিলেন তাদের বাদ দিতে কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরপর থেকে বিভিন্ন এলাকায় গভীর নলকূপ দখলের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ,বিএমডিএ রহস্যজনক কারণে এসব দখলবাজদের বিরুদ্ধে কোনো আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন না, বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে মদদ দিচ্ছেন বলেও ভুক্তভোগী কৃষকদের
অভিযোগ । এতে তারা দিন দিন আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে,উপজেলায় বিএমডিএর ৫৩৬টি ও ব্যক্তি মালিকানাধীন ১৬টি গভীর নলকুপ রয়েছে।উপজেলায় আবাদি জমি রয়েছে প্রায় ২২ হাজার ৩৩২ হেক্টর। গত অক্টোবর মাসের শেষ সপ্তাহে অপারেটর নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এবং গত ৩ নভেম্বর অপারেটর নিয়োগের আবেদন ফরম বিতরণ শুরু করা হয়। প্রতিটি ফরমের জন্য অফেরতযোগ্য এক হাজার টাকা করে আদায় করা হয়।উপজেলায় গভীর নলকূপের অপারেটর পদে এক হাজার ৫৯৬টি আবেদন বিক্রি হলেও জমা পড়েছে এক হাজার ৫৩০টি। চলতি মাসের ১৯ ডিসেম্বর, ২২ ডিসেম্বর ও ২৩ ডিসেম্বর গভীর নলকূপের অপারেটর নিয়োগের মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।এবিষয়ে অপারেটর জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, নতুন অপারেটর নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত তিনি বৈধ অপারেটর, কৃষকেরাও তার পক্ষে রয়েছে। অথচ যুবলীগ নেতা রুবেল আলী তার গভীর নলকুপ জবরদখল করেছে।তিনি বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলীর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।কিন্ত্ত তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি,বরং দখলবাজের পক্ষ নিয়েছে। এবিষয়ে বিএমডিএ তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলী জামিনুর রহমান বলেন, অপারেটর নিয়োগ নিরপেক্ষ হবে, তদ্বির করে কোনো লাভ হবে না বরং কারো তদ্বির করলে সেটা সরাসরি বাতিল হবে। তিনি বলেন, নভেম্বর মাসের পর আর কেউ অপারেটর নাই,কেউ গভীর নলকূপ দখল করলে তাদের করনীয় কি ? তিনি বলেন, নতুন অপারেটর নিয়োগ হলে তাদের দায়িত্ব বুঝে দেয়া হবে।#