পঞ্চগড়ে শালবাহান দাখিল মাদ্রাসায় রাতের আধারে গাছ কর্তনের অভিযোগ

মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম,তেতুলিয়া প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান দাখিল মাদ্রাসা মাঠের গাছ কর্তন ও পতাকা স্ট্যান্ড অপসারণের অভিযোগ উঠেছে সুপারের বিরুদ্ধে। বুধবার (১৩ নভেম্বর) দিবাগত রাতে এই ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শালবাহান দাখিল মাদ্রাসার বাউন্ডারির ভিতরে মাঠে বিশালাকৃতির একটি দেশীয় বট গাছ ছিল এবং তার পাশেই ছিল জাতীয় পতাকা উত্তোলন স্ট্যান্ড। গত বুধবার দিবাগত রাতের অন্ধকারে কতিপয় গাছ কাটা লোক দিয়ে গাছ কেটে অন্যত্র সরিয়ে ফেলেন। সেই সাথে গাছের গোড়াও মাটি সহ উপড়ে ফেলা হয়। পাশেই জাতীয় পতাকা উত্তোলনের স্ট্যান্ডটিও উপড়ে ফেলে মাটি সমান করে ফেলেন রাতের আধারেই। এছাড়া খড়ি গুলো সুপার নিজেই তার বাড়িতে নিয়ে যায়। সকালে গাছ গুলো বিক্রির সময় একটি করাত মিলে জব্দ করেন স্থানীয় লোকজন। সকালে ঘটনাটি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে উৎসুক লোকজন সাদ্রাসায় যান গাছ দেখতে। মাঠের অবস্থা দেখে সুপারের কর্মকান্ডে লোকজন অবাক হয়ে পড়েন। আরও জানা যায়, খোঁজ নিলে মাদ্রাসা সুপার রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বের অনেক অভিযোগ পাওয়া যাবে।

দুপুর পৌনে ৩টায় ওই মাদ্রাসায় সরেজমিনে দেখা হয় অফিস পিয়ন শেখ ফরিদের সঙ্গে তিনি বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) একটু তাড়াতাড়ি মাদ্রাসা ছুটি দেয়া হয়েছে, কিন্তু কেন সেই প্রশ্নের জবাব তিনি দিতে পারেননি। তিনি বলেন, গাছ কাটার বিষয়ে সুপারকে ইউএনও স্যার ডাকছে তিনি সেখানে গেছেন। গাছ কাটার বিষয়ে তিনি বলেন, গাছ কাটা হয়েছে এটি সত্য তবে আমাদের কেউ জানিনা। আর পতাকা স্ট্যান্ডটিও সরানো হয়েছে তাও আমরা কেউ জানিনা। তবে প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও এলাকার ছেলেরাই খেলা করার জন্য মাঠটি প্রস্তুত করতে এমনটি করেছেন। গাছটি কেমন ছিল জানতে চাইলে তিনি বলেন, গাছটি খুব বড় ছিলনা। সেটি পাকুড়ী গাছ ছিল। এসময় কতিপয় বহিরাগত যুবকদের মাঠে মাটি ফেলে সমান করে পানি সেচ দিতে দেখা যায়। এদিকে সচেতন মহল জানান, শিক্ষার্থীরা টিফিনের সময় বা ক্লাসের ফাকে ছায়ায় বিশ্রামের যে বট গাছটি ছিল তা কেটে ফেলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে শিক্ষক আইবুল হক ও ফারুক হোসেন সাংবাদিকদের জানান, গাছ কাটা বা পতাকা স্ট্যান্ড অপসারণের কোন মিটিং হয়নি রেজুলেশনও হয়নি। তবে বিষয়টি বারাবাড়ি না করার অনুরোধ করেন তারা।

এ বিষয়ে মাদ্রাসার সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, আমি কিছুই জানিনা তবে বট গাছটি আমার নিজ হাতে রোপণ করা। আমি তখন সভাপতি ছিলাম গাছটি লালন পালন করে বড় করেছি। কেউ যদি কেটে থাকে তাহলে আমি তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিব।

এ ব্যাপারে মাদ্রাসা সুপার রফিকুল ইসলামের সাথে কথা বলার জন্য মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে কলটি তিনি রিসিভ করেননি।

এ ব্যাপারে মাদ্রাসা সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফজলে রাব্বি সাংবাদিকদের জানান, ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হয়েছে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এদিকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুবুল হাসান বলেন, ইউএনও স্যারের নির্দেশে তদন্ত করতে অফিস থেকে লোক পাঠানো হয়েছিল বিষয়টি আগামী রোববার অফিস চলাকালীন তদন্ত প্রতিবেদন সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম।।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *