মোঃ শহিদুল ইসলাম,
বিশেষ সংবাদদাতাঃ
আদালতের রায়ের পর শপথ নিয়ে আজ দায়িত্বভার গ্রহণ করলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নতুন মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর তিনি নগরীর টাইগার পাস এলাকার চসিক ভবনের প্রথম ফ্লোরে মেয়রের কক্ষে প্রবেশ করেন। এরপর মেয়রের আসনে বসেন তিনি। এসময় চসিকের বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তারা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
এরপর মেয়র চসিকের কর্মকর্তাদের সাথে বিভিন্ন দাপ্তরিক বিষয় নিয়ে কথা বলেন। বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাদের দিক নির্দেশনাও দেন। বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ফাইলও তদারক করেন তিনি। এসময় তার ফেসবুক থেকে লাইভে প্রচার করা হয় দায়িত্ব গ্রহণের পর তার দাপ্তরিক কাজের চিত্র। তিনি উপস্থিত কর্মকর্তাদের মশক নিধনের ব্যাপারে নানা ধরনের নির্দেশনা দেন।
চসিক মেয়র শাহাদাত বলেন, মানসম্মত ওষুধ স্প্রে করতে হবে। ঘণ্টা-খানেক অবস্থানের পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার কিছু সময় আগে তিনি চসিক ভবন ত্যাগ করেন।
চসিকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আজিজ আহমেদ বলেন, মেয়র মহোদয় চসিক ভবনে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার পর পৌঁছেন। এরপর তিনি দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। এ সময় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। কর্মকর্তাদের বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেন তিনি।
এদিকে মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে নগরীর লালদীঘি পাড়ে চসিকের লাইব্রেরি ভবনের সম্মেলন কক্ষে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময় করেন। এরপর তিনি সাংবাদিকদের সাথে নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেন।
চসিকের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময়ে তিনি বলেন, চসিকে প্রয়োজন চার হাজার থেকে সাড়ে চার হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। আছে আট হাজার ৮০০। চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার বললেন ৪৪০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে দায়িত্বভার নিয়েছি। আমরা ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দেব। ডেঙ্গু মশা মারতে মানসম্পন্ন ওষুধ স্প্রে দিতে চাই। আমি নিজেই স্পটে যাব। সকালে আমি বেশিক্ষণ অফিসে থাকব না। পরিচ্ছন্ন কর্মীদের নিয়ে আমি দৈনিক ২/৩ ঘণ্টা বাইরে থাকব। আমি প্রতিটি ওয়ার্ড পরিদর্শন করবো। কারো অবহেলা পেলে দুঃখের সঙ্গে বলতে চাই তাদের চাকরি থাকবেনা। দলীয় কর্মীরা কোন ধরনের রাজনৈতিক কাজে আসবেন না। রাজনীতি হবে বিকেল ৫টার পরে।
বাচ্চাদের খেলাধুলার কিছু নেই জানিয়ে মেয়র বলেন, বাচ্চারা খেলতে পারছে না। আমি প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে মাঠ তৈরি করতে চাই। মোবাইলে চোখ রেখে বাচ্চাগুলোর সুস্থ মন তৈরি হচ্ছে না।
ঢাকায় নগর সরকারের প্রস্তাবনা তুলে ধরার কথা জানিয়ে চসিক মেয়র বলেন, আমি সম্প্রতি বেশ কিছু টকশোতে অংশ নিয়েছি। অনেক মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টাদের সঙ্গে কথা বলেছি। সবখানে আমি একটি কথা তুলে ধরেছি। সেটি হলো নগর সরকার। নগর সরকার যদি প্রতিষ্ঠা হয় তাহলে সমস্ত সেবাদানকারী সংস্থাকে এক ছাতার নিচে আনা যাবে। কাজেই সিটি করপোরেশন যেহেতু এমন একটি প্রতিষ্ঠান যেটি জনপ্রতিনিধিদের অধীনে পরিচালিত হয়। তাই সমস্ত সেবাপ্রদানকারী সংস্থা যদি কাজ করে তাহলে পরিকল্পিত উন্নয়ন সম্ভব।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটি সময় সাধ্য ব্যাপার উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা যেহেতু সময় সাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে আমি আমার আপ্রাণ চেষ্টা করবো যেসব সেবাপ্রদানকারী সংস্থা আছে তাদের সাথে সমন্বয় করার।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৪ সালে এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর ‘নগর সরকার’ প্রস্তাবনা তুলে ধরার পর বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হয়। পরের মেয়র এম মনজুর আলমও মহিউদ্দিনের নগর সরকার নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত নগর সরকারের ধারণা বাস্তব রূপ লাভ করেনি।
Leave a Reply