October 27, 2024, 8:19 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
সুজানগরে ভোক্তা অধিকারের অভিযান,আট প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা ময়মনসিংহ সদরের নতুন এসিল্যান্ড সাঈদ মোহাম্মদ ইব্রাহীম তারেক রহমানের নেতৃত্বে গঠিত হবে বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত, সুন্দর ও সুশৃঙ্খল রাষ্ট্র তানোরে তিন দিনব্যাপী ফ্রি ট্রিটমেন্ট ক্যাম্প ও ওষুধ বিতরণ নড়াইলে ইয়াবা ট্যাবলেটসহ একজন গ্রেফতার ঝিনাইদহে ফুটবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতিকে প্রত্যাখান করে বিক্ষোভ মিছিল ঝিনাইদহে ভারতীয় ফেনসিডিলসহ দুইজন আটক দোয়ারাবাজারে জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৪৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত কালীগঞ্জে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ও বাতাসে উঠতি আমন ধানের ক্ষতি  বাবুগঞ্জে যুগ্মসচিব বজলুর রশিদের কাছ থেকে টাকা ছিনতাই অতপর মোটা অংকের চাঁদা দাবি
তারেক রহমানের নেতৃত্বে গঠিত হবে বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত, সুন্দর ও সুশৃঙ্খল রাষ্ট্র

তারেক রহমানের নেতৃত্বে গঠিত হবে বৈষম্যহীন, দুর্নীতিমুক্ত, সুন্দর ও সুশৃঙ্খল রাষ্ট্র

মোঃ হায়দার আলীঃ চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলন চলাকালে রাজধানী ঢাকার উত্তরা ও মিরপুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গুলিতে নিহত শহীদ পরিবারগুলোর সাথে সাক্ষাৎ করেছে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর একটি প্রতিনিধি দল। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান পৃষ্ঠপোষক তারেক রহমানের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি দলটি রাজধানীর উত্তরায় শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধসহ ঊনিশটি শোকাহত পরিবারের সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করেছেন। গত শনিবার রাজধানী ঢাকার উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টরের প্রিয়াঙ্কা সিটিতে শোকাহত এসব পরিবারের সদস্যদের সাথে মতবিনিময় করা হয়। মতবিনিময় অনুষ্ঠানে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি সহমর্মিতার বার্তা পৌঁছে দেন বিএনপি’র কোষাধ্যক্ষ ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা এম. রশিদুজ্জামান মিল্লাত।
সভাপতিত্ব করেন- ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর আহবায়ক ও বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য আতিকুর রহমান রুমন। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, বিএনপি’র চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক আলী আব্বাস, ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমিন মিথুন প্রমূখ।
শহীদ ঊনিশটি শোকাহত পরিবারগুলো হলো : শহীদ মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ, শহীদ মো. সাইফুল ইসলাম, শহীদ আসাদুল্লাহ, শহীদ মো. আলী হোসেন, শহীদ নাজিমুদ্দিন, শহীদ রবিউল ইসলাম, শহীদ মো. জসিমউদদীন, শহীদ আব্দুল্লাহ বিন জাহিদ, শহীদ রাহাত হোসেন শরীফ, শহীদ জাহিদুজ্জামান তানভিন, শহীদ আসিফ হাসান, শহীদ মাহমিন জাফর, শহীদ সাংবাদিক নূর, শহীদ জুবায়ের, শহীদ ইঞ্জিনিয়ার শাহরিয়ার, শহীদ তাজুল ইসলাম, শহীদ কবির, শহীদ রিদোয়ান শরীফ রিয়াদ জয় ও শহীদ সাগর গাজী। তারেক রহমানের বিভিন্ন কার্যক্রমে সাধারণ মানুষের মাঝে সাড়া পড়েছে। মানুষ তার প্রশাংসা করছেন। তীর্থের কাকের ন্যয় চেয়ে আছেন কবে দেশে ফিরে আসবেন তারেক জিয়া।

গণবিপ্লবে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলে গেছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান পরিণত হয়েছেন দেশের মানুষের কাছে সবচেয়ে কাঙ্খিক্ষত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। দেশ এখন তাঁর দিকেই তাকিয়ে। সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হলে দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি যে ক্ষমতায় আসবে, তা সবাই বুঝতে পারছে। তারেক রহমান হবেন রাষ্ট্র নায়ক। ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করা বিএনপি এখন রাজনীতিতে এক ঐতিহাসিক অধ্যায়ে রয়েছে। মানুষের মাথার উপর ছায়া হয়ে রয়েছে। আর এই ছায়ার উৎস হচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তাঁর মাধ্যমেই বাংলাদেশের মানুষের আশা-আকাক্সক্ষা পূরণ হতে পারে। তাঁর বক্তব্যগুলো নিয়ে এখন গবেষণা হচ্ছে, বিভিন্ন কলাসিষ্ট কলাম লিখছেন। মানুষ অনুপ্রাণিত হচ্ছেন তাঁর প্রত্যেকটি কথায়। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেছেন, তারেক রহমানের নির্দেশনায় ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দলসহ আমরা সবাই মানুষের পাশে থাকার জন্য অঙ্গীকারাবদ্ধ। এর মাধ্যমে বিএনপি রাজনৈতিক সংস্কারের পাশাপাশি সামাজিক পরিবর্তন এবং জনগণের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ করছে।

তারেক রহমানের দৃঢ় নেতৃত্বে, বিএনপি জনগণের আশা-আকাক্সক্ষাকে প্রতিনিধিত্ব করে এবং একটি সুন্দর ও সুশৃঙ্খল রাষ্ট্র গড়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিএনপির নেতাকর্মীরা মানুষের বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন, মানুষকে অভয় দিচ্ছেন, কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পসে যাচ্ছেন, ছাত্রছাত্রীদের মনের কথা শোনার চেষ্টা করছেন। নতুন রাজনৈতিক সংস্কৃতির রূপরেখা মানুষের কাছে তুলে ধরছেন। তারা বিভিন্ন জায়গায় গাছ লাগাচ্ছেন। বিএনপির যেকোনো কর্মসূচি শেষে এখন রাস্তাঘাট, সমাবেশের স্থল পরিষ্কার করা হয়। এই পরিবর্তনের কারিগর তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, আমরা সংগ্রামের মাধ্যমে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছি। এখন জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে হবে। তিনি বলেনেন, বিএনপির প্রত্যাশা রাজনীতিতে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা, মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন করা। তারেক রহমানের উক্তিটি দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি স্পষ্ট সংকল্প ব্যক্ত করে, যেখানে তিনি জনগণের প্রত্যাশা ও ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে সংগ্রামের কথা উল্লেখ করেছেন। তাঁর নেতৃত্বের মূল ভিত্তি হচ্ছে, একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়। এ কথা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যে সংগ্রাম চলমান, তা কেবল একটি রাজনৈতিক প্রয়াস নয়, বরং একটি জাতীয় দায়িত্ব। এই দৃঢ় অবস্থান ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সুষ্ঠু ও সমৃদ্ধ সমাজ নির্মাণের জন্য তাঁর অঙ্গীকারকে প্রমাণ করে। তারেক রহমানের বক্তব্যের গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, দলের মধ্যে স্বচ্ছতা ও সততার জোরালো আহ্বান। তিনি স্পষ্ট করেছেন, যদি কেউ বিএনপির নাম ভাঙিয়ে নিজের স্বার্থ হাসিল করতে চায়, তাহলে তার বিরুদ্ধ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তাঁর এই দৃঢ় অবস্থান দলের শৃঙ্খলা ও নৈতিকতার প্রতীক। ইতিমধ্যেই বিএনপির উচ্চ পর্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত অনেক নেতাকর্মী শাস্তির সম্মুখীন হয়েছে।

কিন্তু রাজশাহী ১ আসনে শুধু ব্যতিক্রম, এখানে আওয়ামীলীগের সময় কিছু বিএনপির সুবিধাবাদী নেতা, যাদের কার্যক্রমে বিগত দিনে এবং বর্তমানে বিএনপিকে বিতর্কিত করেছেন এখনও অব্যাহতভাবে বিতর্কিত করছেন, মাঠপর্যায়ে বিএনপি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এখনই তাদেরকে থামানো না গেলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী ১ আসনটি বিএনপির হাতছাড়া হওয়ার আশাংকা করা হচ্ছে। শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড হলে শিক্ষকরা শিক্ষার মেরুদন্ড। কিন্তু আজ শিক্ষক সমাজ অবহেলিত ও বিভিন্নভাবে হয়রানি -নির্যাতনের শিকার। শিক্ষকদের চাকরির নিরাপত্তা, আর্থিক স্বচ্ছলতা, সামাজিক মর্যাদা নেই বলে মেধাবীরা এই পেশায় আসতে চান না। বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিক্ষকরা রাজনৈতিক হয়রানির শিকার হয়ে চাকরি হারিয়ে পথে পথে ঘুরছেন। এলাকার কিছু বিএনপির কুচক্রী মহল, তথাকথিক কিছু শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ভুল বুঝিয়ে, প্রভাবিত করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধানদের পদত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে তাদেরকে ফিরিয়ে আনছে। স্থানীয় প্রশাসন, সেনাবাহনী বিষয়টি বুঝতে পেরে শিক্ষা উপদেষ্টার নির্দেশে এ ব্যপারে কঠোর অবস্থানে থাকায় বিষয়টি অনেকটা কমে গেছে। একশ্রেণীর সুবিধাবাদী, মামলাবাজ, চাঁদাবাজ নেতা মোটা অংকের চাঁদাবাজি করতে ২০১৮ ইং সালের ঘটনা উল্লেখ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান যাদের কোন আওয়ামীলীগের পদ পদবী নেই, এমন কী আওয়ামীলীগের প্রাথমিক সদস্য পদ নেই তাদেরও মামলায় হয়রানি ও মোটা অঙ্কের চাঁদাবাজি করার জন্য আসামী করা হয়েছে। তবে কিছু কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগণ, সহকারী প্রধান, সহকারী শিক্ষক আওয়ামীলীগ দলীয় পদপদবী গ্রহন করে মাদার অফ ম্যাফিয়া অধীনে অনুষ্ঠিত সকল নির্বাচনে নিয়ম ভঙ্গ করে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেছেন। লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে হাজার হাজার ব্যালট পেপারে আগাম নৌকায় সীল মেরে আওয়ামীলীগ প্রার্থীদের বিশাল ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে ( আওয়ামীলীগের সময়) ওইসব সুবিধাবাদী বিএনপির নেতারা রহস্যজনক কারনে কোন কথা বলছেন না। মামলা করলেও তাদের আসামী করছেন না। এমনকি পদপদবীধারী আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা লীগের নেতারা নিয়োগবানিজ্য, টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজী, হাটঘাট, করিডোর, কাষ্টম, সাব-রেজিষ্টার অফিস, বালুমহল, জলমহল, খাসপুকুরসহ বিভিন্নভাবে কোটি কোটি কাল টাকার সম্পদ গড়েছেন তাদেরকে আসামী না করে বিএনপির ত্যাগি নেতাকর্মী, সিনিয়ার সাংবাদিক, কলামিষ্টসহ তৃনমূল বিএনপির নেতা, কর্মী, শ্রমিক, কলেজ শিক্ষকেও আসামী করেছেন ফলে দলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। এ নজীরবিহীন ঘটনাটি ঘটেছে রাজশাহীর গোদাগাড়ী মডেল থানায় দায়েরকৃত ২টি মামলায়। রাজশাহী জেলা কৃষকদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হামিদ বাবলু গত ২৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ প্রায় ৪৫ জন নামসহ অজ্ঞাত আরো ৫০০-৬০০ জনের নামে মামলা করেন। বাদী নিজের স্বার্থ হাসিলের জন্য ও ব্যাক্তিগত আক্রোশের জেরে বিএনপির ৬-৭জন নেতাকর্মীর নামে মামলা দিয়েছেন, সেখানে বিএনপির নেতা কলেজ শিক্ষক সুমনকে আসামী করা হয়েছে। একই কায়দায় গত ২৮/০৮/২৪ ইং তারিখে গোগ্রাম ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আব্দুর রউফ দিলীপ গোদাগাড়ী মডেল থানায় মামলা করেন যার নম্বর ৩২, ওই মামলায় ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে ৫০/৬০ কে আসামী করা হয়েছে। এ মামলায়
ব্যাক্তিগত আক্রোশের জেরে, স্বার্থ হাসিলে জন্য
বিএনপি পরিবারের সদস্য, সিনিয়র সাংবাদিক, কলামিস্ট, প্রধান শিক্ষক মোঃ হায়দার আলীসহ কয়েকজনকে অসৎ উদ্দেশ্যে জড়ানো হয়েছে।

রহস্যজনক কারনে এ মামলায় উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, সহ-সভাপতি, সাংগঠনিক সম্পাদক, যুবলীগ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, ছাত্রলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ সাবেক মেয়র কাউন্সিলর, উপজেলা চেয়ারম্যান, আওয়ামীলীগ নেতা ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানসহ আওয়ামীলীগ নেতাদের আসামী করা হয়নি। মাঠ পর্যায়ের নেতা কর্মী এলাকার সাধারণ মানুষের অভিযোগ মোটা অঙ্কের চাঁদাবাজি করে তাদেরকে আসামী করা হয় নি।

রাজশাহী বারের বিএনপি পন্থী একজন আইনজীবি নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, আমি যখন তাদের এজাহার কপি লিখে দি তখন সাবেক মেয়র ও উপজেলার চেয়ারম্যানের আসামীতে নাম ছিল। পরবর্তীতে তাদের নাম বাদ দিয়ে সাংবাদিক ও কলেজ শিক্ষককে আসামীতে করা হয়েছে। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক, এর জন্য দল ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এ মামলার ভিলেন তথাকথিত বিএনপির নেতা প্রভাষক অব্দুল মালেক। যিনি প্রায়াত ব্যারি. আমিনুল হকের প্রকাশ্যে বিরোধীতা করার কারণে কলেজ থেকে সোকজ পান এবং পরবর্তী হাতে পায়ে ধরে ক্ষমা চেয়ে মাফ পেয়েছিলেন। ওই তথাকথিক বিএনপির নেতা মামলাবাজ, চাঁদাবাজ প্রভাষক আব্দুল মালেকের কুটকৌশলে হাতিয়ে নিচ্ছেন যারা লাখ লাখ টাকা। আঙ্গুল ফুল কলাগাছ হয়েছেন। তিনি বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে গোদাগাড়ী মডেল থানা, উপজেলা নির্বাহী, ভূমি অফিস, খাদ্য অফিস, সাব রেজিষ্টি দিপিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে ব্যপক অফিযোগ রয়েছে। আওয়ামীলীগের সময় সে লেবাসধারী সুবিধাবদী থাকার কারণে তাকে আওয়ামীলীগ কোন মাললায় আসামী করেন নি।
কোনা হয়রানিও হয় ন। এ কারণেই আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, কৃষকলীগ, আওয়ামীলীগের নেতা ও মেয়র, উপজেলার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন চেয়ারম্যান, এমপি ফারুর চৌধুরীর ডান হাত বাম বলে খ্যাত, থিম ওমর প্লাজায় বসে কোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ রয়েছে তাদেরকে আসামী করা হয় নি।

এ সব মামলা নিরীহ ব্যক্তি বিএনপির ত্যাগি নেতাকর্মী, আওয়ামীলীগের সদস্য পদ না থাকা শিক্ষক, সাংবাদিক, প্রধান শিক্ষককে আসামী করার ব্যপারে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য মেজর জেনারেল (অঃ) শরিফ উদ্দিনের সাথে কথা হলে তিনি জানান, কোন সমস্যা নেই তদন্তে এরা বাদপড়ে যাবে। তিনি আরও জানান, এধরনের নিরীহ ব্যক্তিদের আসামী করা পতিত শেখ হাসিনার দোসর, বিগত ১৬ বছরে লুটপাট, নির্যাতনকারীদের আসামীতে নাম না দেয়ার ব্যপারে, অনৈতিক আর্থিক কিছু সুবিধা ও দলকে বির্তকিত করার অপচেষ্টা করার কারনে ওইর নেতা কর্মীদের কোন ধরণের মামলা করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছি বলে তিনি জানান। দলীয় কোন্দেলের ব্যপারে তিনি বলেন কিছু দিনের মধ্যে সব বিরোধ মিটে যাবে। সবাই তারেক জিয়ার নির্দেশে বাড়ী বাড়ী গিয়ে মানুষকে বুঝিয়ে বিএনপির পক্ষে জনমত সৃষ্টিতে কাজ নির্দেশ দিয়েছি। ভুক্তভোগী ও সচেতন মহল গোদাগাড়ী মডেল থানার দায়েরকৃত এ মামলা দুটির ব্যপারের তারেক জিয়ার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

ব্যক্তিগত আক্রোশ সহ নানা কারনে বিএনপির অন্তদ্বন্দ্ব, সংঘর্ষে বিএনপির নেতা, মারা গেছেন, আহত হয়েছেন অনেকে, কিছু সুবিধাবাদী নেতা বহিষ্কার হচ্ছে, সুযোগ্য সেনাবাহনী তাদের গ্রেফতার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে হত্যা, লুটপাট, চাঁদাবাজীসহ বিভিন্ন মামলা হচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগও বিস্তর যা পত্রিকা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, আনলাইন নিউজ পোটাল, টিভি নিউজসহ বিভিন্ন মাধ্যমে জানা গেছে।

তারেক রহমানের নেতৃত্বে, বিএনপি শুধু রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে নয়, বরং জনগণের আশা ও আকাঙ্খার প্রতীক হয়ে উঠতে চায়। এই প্রক্রিয়ায়, তিনি একটি শক্তিশালী, সমৃদ্ধ এবং বৈষম্যহীন ভবিষ্যতের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন, যা আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণা। বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল ও উদ্বেগজনক। কিন্তু তারেক রহমানের নির্দেশনা সমগ্র জাতির জন্য একটি শক্তিশালী প্রেরণা হয়ে উঠেছে। তিনি সবসময় বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে সাহস ও মানসিকতা বজায় রাখার আহ্বান জানাচ্ছেন, যা সংগ্রামের এই সময়ে একান্ত প্রয়োজন। আওয়ামী লীগ শাসনামলে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর যে হামলা, মামলা এবং শারীরিক নির্যাতন হয়েছে, তার বিরুদ্ধে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে থাকা তারেক রহমানের সাহসিকতা নেতাকর্মীদের অনুপ্রাণিত করেছে। তিনি প্রতিটি চ্যালেঞ্জকে সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করছেন এবং তাঁর নেতৃত্বে দলটি কেবল রাজনৈতিক লড়াই নয়, বরং মানুষের অধিকার ও স্বাধীনতার জন্য একটি সংগ্রামী অবস্থান গ্রহণ করছে। সংকটময় সময়ে, তারেক রহমানের নেতৃত্ব জাতির জন্য আশার প্রদীপ হয়ে রয়েছে, যা সামনের দিকে এগিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা যোগায়। তিনি বলেছেন, স্বৈরাচারের দোসররা ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে। তাঁর এই বক্তব্য বাস্তবসম্মত। কারণ, ষড়যন্ত্র থেমে নেই। এ প্রেক্ষিতে, তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি যে ধৈর্য্য ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দিচ্ছে, তা সাধুবাদযোগ্য।

দুর্নীতি বলতে ব্যক্তিগত স্বার্থ সিদ্ধির জন্য অর্পিত ক্ষমতার অপব্যবহারকে বোঝানো হয়। এটি কেবল আর্থিক ক্ষেত্রে সংঘটিত হয় এমন নয় বরং আপাতদৃষ্টিতে আর্থিক লাভ দৃষ্টিগোচর না হলেও চিন্তা-ভাবনা, আচরণ এবং অযাচিত হস্তক্ষেপে নৈতিকতা বিরোধী কর্মকা-ও দুর্নীতি হিসেবে চিহ্নিত। দুর্নীতি আস্থা নষ্ট করে, গণতন্ত্রকে দুর্বল করে, অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে এবং বৈষম্য, দারিদ্র্য, সামাজিক বিভাজন এবং পরিবেশগত সংকটকে আরও বাড়িয়ে দেয়। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পরিষেবার বিনিময়ে অর্থ বা সুবিধা দাবি বা গ্রহণ করলে নীতিবিরুদ্ধ কাজ হবে। রাজনীতিবিদরা জনগণের অর্থের অপব্যবহার করলে বা তাদের পৃষ্ঠপোষক, বন্ধুবান্ধব এবং পরিবারকে রীতি-নীতির ব্যত্যয় ঘটিয়ে সরকারি চাকরি বা টেন্ডার বা চুক্তি প্রদান করলে কিংবা লোভনীয় চুক্তি পেতে কর্মকর্তাদের ঘুষ দিলে তা হবে নিয়মবহির্ভূত কর্মকান্ড। দুর্নীতিতে যে কেউ জড়িত থাকতে পারেন। রাজনীতিবিদ, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যবসায়ী বা জনসাধারণের সদস্যরা যে কোনো জায়গায় বিধিবর্হিভূত কাজ করে আইনের দৃষ্টিতে অপরাধী হতে পারেন। পলাতক ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা অন্যায় ও অন্যায্য কাজ করে দেশের সর্বস্তরে দুর্নীতির সুধাসদন তৈরি করেছিলেন। সেই পরিস্থিতি উত্তরণের জন্য এবং একটি স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক, দুর্নীতিমুক্ত ও বৈষম্যহীন ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার উপযোগী রাষ্ট্রকাঠামো ও পরিবেশের প্রয়োজনে দেশনায়ক তারেক রহমানের স্টেট রিফরমেশন ভাবনার গুরুত্ব অনস্বীকার্য।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে দেশনায়ক তারেক রহমান বলেছেন, ‘ঘোষিত ৩১ দফাই শেষ কথা নয়। বিএনপি মনে করে, রাষ্ট্র কিংবা রাজনীতি, সব ক্ষেত্রেই সংস্কার কার্যক্রম একটি ধারাবাহিক এবং চলমান প্রক্রিয়া। সুতরাং রাষ্ট্র এবং রাজনীতি সংস্কারে বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচির আরও প্রয়োজনীয় পরিবর্তন পরিমার্জনকেও বিএনপি স্বাগত জানায়।’ গণতান্ত্রিক সাংবিধানিক সংস্কার, রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ, অর্থনৈতিক উদারীকরণ, এবং পাবলিক দায়বদ্ধতা প্রতিষ্ঠা প্রভৃতি সংস্কারের জন্য ৩১-দফা রূপরেখা প্রণীত হয়। সূচনায় বলা হয়েছে‘গণতন্ত্র, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচারের আদর্শে নিহিত বাংলাদেশের জনগণ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে বিপুল রক্তপাতের মাধ্যমে রাষ্ট্রের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু, ২০০৯ সাল থেকে, কর্তৃত্ববাদী শাসন নিছক দুঃশাসন, অবিচার এবং নৃশংসতার মাধ্যমে বাংলাদেশীদের এই মালিকানা থেকে বঞ্চিত করেছে, বাংলাদেশের ভিত্তি কাঠামোকে ভেঙে দিয়েছে। তাই রাষ্ট্রকে মেরামত ও পুনর্গঠন করতে হবে। দেশের জনগণের ন্যায্য মালিকানা পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণআন্দোলনে জড়িত সব গণতন্ত্রপন্থী দলকে টেনে ‘জাতীয় ঐকমত্যের জনকল্যাণমুখী সরকার’ প্রতিষ্ঠা করা হবে। এটি কেবলমাত্র একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে অর্জন করা যেতে পারে, যা প্রয়োজনীয় সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য জনগণের ম্যান্ডেটসহ একটি নির্বাচিত সরকার অর্জন করবে।’

রূপান্তরমূলক সংস্কার ব্যবস্থার অন্যতম হলো দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা। ৩১ দফার একটি অংশে বলা হয়েছে‘দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স থাকবে। গত দেড় দশকের মানি লন্ডারিং ও দুর্নীতির তদন্তের জন্য একটি শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে, যাতে দায়ীদের জবাবদিহি করা হবে। বাংলাদেশের বাইরে পাচারকৃত অর্থ ফেরত আনতে পর্যাপ্ত প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দুর্নীতি দমন কমিশন এবং দুর্নীতিবিরোধী আইন সংশোধনের পাশাপাশি পদ্ধতিগত সংস্কারের মাধ্যমে দুর্নীতি দমন কমিশনের মধ্যে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। এই তদারকিকে আরও জোরদার করতে সংবিধানের অধীনে একজন ‘ন্যায়পাল’ নিয়োগ করা হবে।’

আসলে সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে বিএনপি কার্যকর প্রস্তাবনা প্রদান করেছে। আর ন্যায়ভিত্তিক সমাজ এবং হয়রানিমুক্ত রাষ্ট্র গড়তে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যথাযথ নির্দেশনা দিয়েছেন দেশনায়ক তারেক রহমান। কারণ অন্যায্য কাজ আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ও চেতনাকে আঘাত করে, দেশের উন্নয়নকে ব্যাহত করে, সামাজিক অবক্ষয় ও সামাজিক বৈষম্য সৃষ্টি করে। এ কারণে অনেক পেশা থেকে দূরে সরে যাচ্ছে সে পেশার আদর্শ ও নৈতিকতা। তাই কঠোর নিয়ম-কানুন দিয়ে আমাদের দুর্নীতি দমন করতে হবে।

বলাবাহুল্য, শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে ক্ষমতাসীন হওয়ার পর বাংলাদেশে দুর্নীতির ডালপালা মেলতে শুরু করে। এরপর প্রায় দুই দশকে দুর্নীতি সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করে। ২০২৪ সালে এসে আমরা দেখতে পাচ্ছি, দেশে দুর্নীতের মাত্রা চরম আকার ধারণ করেছে। বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। যে দেশের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর পিওন ৪০০ কোটি টাকার মালিক সেখানে সাধারণ মানুষের বিস্ময়বোধ আতঙ্কে পরিণত হয়। ধীরে ধীরে জনগণের কাছে প্রকাশ পেতে থাকে এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর, সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ, সাবেক আইজিপি বেনজির প্রভৃতিসহ গ্রেফতারকৃত মন্ত্রী-এমপিদের অর্থ আত্মসাৎ ও অর্থ পাচারের ব্যাপক তথ্য-উপাত্ত। এজন্য অন্তর্বর্তী সরকার শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশের ব্যাংকিং ব্যবস্থা থেকে বিদেশে পাচার হওয়া প্রায় ২ লাখ কোটি টাকার সন্ধানে তদন্তে যুক্তরাজ্য এবং অন্যান্য দেশের সরকারের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে। কেবল অর্থপাচার করে দেশের ক্ষতিসাধন করেননি ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেশবাসীকে পঙ্গু করে গেছেন হাসিনা। সম্ভবত ফ্যাসিস্ট মুসোলিনি কিংবা হিটলার তাদের দেশের এ ধরনের ক্ষতি করেননি।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুয়ায়ী, ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা যখন ক্ষমতা গ্রহণ করেন, তখন সরকারের ঋণ স্থিতি ছিল মাত্র ২ লাখ ৭৬ হাজার ৮৩০ কোটি টাকা। সে হিসাবে আওয়ামী লীগের দেড় দশকের শাসনামলেই সরকারের ঋণ স্থিতি ১৫ লাখ ৫৮ হাজার ২০৬ কোটি টাকা বেড়েছে, যা সরকারের মোট ঋণের প্রায় ৮৫ শতাংশ। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত দেড় দশক ধরে ঘোষিত বাজেটে সরকারের পরিচালন ব্যয় মেটানো ও উন্নয়ন কর্মকা-ের কথা বলে দেশি-বিদেশি উৎস থেকে এ ঋণ নেয়া হয়েছে। যদিও শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে সীমাহীন অনিয়ম-দুর্নীতির বেশুমার অভিযোগ রয়েছে। এ সময়ে অবাধ লুণ্ঠনের শিকার হয়েছে দেশের ব্যাংক খাত। জনগণের লুণ্ঠিত এসব অর্থ পাচার হয়েছে ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে।

২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভেও ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এর মধ্যে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চলে যায় ফিলিপাইনে। বাকি ২ কোটি ডলার যায় শ্রীলঙ্কায়। ২০১০ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে সোনালী ব্যাংক হোটেল রূপসী বাংলা শাখা (বর্তমানের হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টাল) থেকে কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে হল-মার্ক নামের একটি অখ্যাত প্রতিষ্ঠান ব্যাংকটির ২ হাজার ৬৬৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে। জালিয়াতির আরেকটি বড় শিকার বেসিক ব্যাংক। ২০১২ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৩ সালের মার্চ পর্যন্ত মাত্র ১১ মাসে নজিরবিহীন অনিয়মের মাধ্যমে এই ব্যাংক থেকে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে বিভিন্নজনকে দিয়ে দেওয়া হয়। প্রায় একই সময়ে বিসমিল্লাহ গ্রুপ নামের একটি প্রতিষ্ঠান একাধিক ব্যাংক থেকে ঋণের নামে ১ হাজার ১৭৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এম এইচ গোল্ডেন জুট মিলসহ আটটি কাগুজে প্রতিষ্ঠান জনতা ব্যাংক থেকে হাতিয়ে নেয় ৮৫৭ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। নিয়মনীতি না মেনে এক গ্রাহককেই মাত্র ৬ বছরে জনতা ব্যাংক দিয়েছে ৫ হাজার ৫০৪ কোটি টাকার ঋণ ও ঋণসুবিধা।

আসলে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিমানুষকে সৎ হতে হবে। একইসঙ্গে জনগণকেও। তাহলে বেআইনি কাজ দূর করা সম্ভব। যেমন, সৎ শাসক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাসনামলে দুর্নীতির সকল দুর্নাম ঘোচানোর জন্য কার্যকর বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়।(তাঁর ঐতিহাসিক ১৯ দফা কর্মসূচি ছিল দুর্নীতিমুক্ত ন্যায়নীতিভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা কায়েম করা।) দুর্নীতি প্রতিরোধে আমাদের সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে এ ভাবনা আমরা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সততা ও নীতিবোধ থেকে পেয়েছি। দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। শুধু দুর্নীতিবাজদের শাস্তি দিলেই হবে না এ জন্য প্রয়োজন গণসচেতনতা, দেশপ্রেম এবং তারুণ্যের অঙ্গীকার। প্রতিজ্ঞা করতে হবে আমি দুর্নীতি করবো না, অন্যকে দুর্নীতি করতে দেবো না।

খুনি হাসিনার বিদায়ের পর তারেক রহমান দেশের জনসাধারণকে মানবিক রাষ্ট্র গড়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। উপরন্তু ড. ইউনূস সরকারের যে কোনো সংকট উত্তরণে পথ বাতলে দিচ্ছেন। বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যেও বাংলাদেশকে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করার জন্য সুচিন্তিত মতামত ব্যক্ত করেছেন। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিজের দলীয় লোকজনকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়ে সুকৌশলে বিরোধী দলের বিশেষত বিএনপি’র ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়েছে দুর্নীতি ও প্রতারণার অভিযোগগুলো। এমনকি গ্রেফতার করে বিনাবিচারে জেলে ঢুকিয়েছে বিশিষ্ট নেতৃবর্গকে। তাঁর আমলে করোনা মহামারি মোকাবিলায় স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি সর্বজনবিদিত। ২০২০ সালের শেষের দিকে এবং ২০২১ সাল জুড়ে স্বাস্থ্যখাত ছিল প্রধান বিতর্কের বিষয়। সে সময় দুস্থ মানুষের ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের বিরুদ্ধে তারেক রহমান কথা বলেছেন বারবার; যথাযথ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মানুষকে সহযোগিতা করার নির্দেশ দিয়েছেন দলীয় নেতা-কর্মীদের। আসলে নিশিরাতে ভোট চুরি করে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর হাসিনা সরকার গঠন করেন ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাসে। কিছু দিন যেতেই দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হন সরকার প্রধান ও তাঁর মন্ত্রীবর্গ।

তারেক রহমান মনে করেন, কেবল আইন এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে দুর্নীতি ও অপরাধ দমন করা সম্ভব নয়; এ জন্য সামাজিক সচেতনতাও সৃষ্টি করতে হবে। ক্ষমতায় এলে বিএনপি সরকার জনগণের কল্যাণ এবং দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ৩১ দফার ভিত্তিতে জিরো টলারেন্স নীতি নেবে। এ জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) শক্তিশালী করা, জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার এবং আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দুর্নীতির পরিধি ক্রমান্বয়ে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার পরিকল্পনা করতে হবে সরকারকে।

শুধু কথায় নয়, কাজেও তারেক রহমান প্রমাণ করেছেন, তিনি একজন প্রকৃত নেতা। তিনি যে পরিকল্পনাগুলো তুলে ধরছেন, সেগুলো বাংলাদেশকে একটি আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আবশ্যক। তার ফ্যামিলি কার্ডের ধারণা, রপ্তানিমুখী কৃষির উন্নয়ন এবং জাতীয় সরকার গঠনের পরিকল্পনা বাংলাদেশের জন্য কল্যাণকর। তারেক রহমান যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজের বিরুদ্ধে করা কার্টুন শেয়ার করেন, তখন তিনি যে সমালোচনা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে মনেপ্রাণে ধারণ করেন, তার নজির। একজন নেতা হিসাবে, তিনি নিজের প্রতি উঁচু মানসিকতা বজায় রাখছেন এবং সমালোচনাকে সানন্দে গ্রহণ করেছেন। তাঁর এই সহিষ্ণু মনোভাব বাংলাদেশের জনগণ ভালোবাসার সাথে গ্রহণ করছে। জনগণ যখন দেখে, তাদের নেতা সমালোচনা বা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে ভয় পান না, তখন তাদের মধ্যে একটি শক্তিশালী সংহতি সৃষ্টি হয়।

আমরা অনেকেই বুঝতে পারছি না যে, অন্তর্বর্তী সরকারের সফল্য আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এই সরকার ব্যর্থ হলে ব্যর্থ হবে বাংলাদেশ, এটা অনুভব করেছেন তারেক রহমান। এই সরকার ব্যর্থ হলে পরাজিত শক্তির পুনরুত্থান ঘটবে। তাই অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরন্তর সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তারেক রহমান বলেছেন, ধর্ম যার যার নিরাপত্তা পাবার অধিকার সবার। স্বাধীন দেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য তাঁর এই চিন্তা সার্বজনীন। তিনি তৃণমূল পর্যায়ে মানুষকে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন, আর্থিক সহায়তা দিচ্ছেন। বিভিন্ন এলাকার মানুষের শিক্ষা, চিকিৎসা, গৃহ নির্মাণ থেকে শুরু করে নানা কাজ করছেন। এমনভাবে তিনি কাজগুলো করেছেন, যা দলের অনেক নেতাকর্মীও জানে না।

তারেক রহমানের রাষ্ট্রচিন্তা অতুলনীয়। দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, জাতীয় সরকার গঠন, এক ব্যক্তির দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী না হওয়া আমাদের দেশের জন্য নতুন ভাবনা। এই ভাবনা নিয়ে তিনি নিরন্তর কাজ করছেন। মানুষের কাছে যাচ্ছেন। বাংলাদেশকে আধুনিক ও উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করার চিন্তা তিনিই করছেন। তিনি একটি বিখ্যাত শ্লোগান দিয়েছিলেন, ‘টেইক ব্যাক বাংলাদেশ’, যা জনগণকে ফ্যাসিস্ট হাসিনার কবল থেকে বাংলাদেশকে উদ্ধার করতে অনুপ্রেরণা জাগিয়েছে। ফলে জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতীক হয়ে উঠছেন তিনি, যেখানে দেশের সার্বভৌমত্ব এবং সমৃদ্ধির পথ সুরক্ষিত থাকবে।

স্বৈরাচারের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দলদাস সদস্যদের বন্দুকের সামনে শিক্ষার্থী-জনতা জীবনের মায়া তুচ্ছ করে, রাজপথে রক্ত দিয়ে বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। তারা জাতির গর্বিত সন্তান। লুটপাট, সন্ত্রাস ও মাফিয়াতন্ত্রের অস্ত্রধারি লাঠিয়ালদের পরাজিত করেই যুগে যুগে মুক্তিযোদ্ধারা জাতির স্বাধীনতার স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখতে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারে ব্রতী হন। গণবিপ্লবে স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ও তার অপকর্মের সহযোগীরা পালিয়ে গেলেও ফ্যাসিবাদের তার রেখে যাওয়া দোসররা এখনো নানাভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করছে। ১৬ বছরের দুর্নীতি-দুঃশাসন, দলবাজি, দখলবাজির জঞ্জাল দুই-তিন মাসের মধ্যে পরিস্কার করা সম্ভব নয়া। এতে সময় লাগবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে সময় দিতে হবে। ইতোমধ্যে বিএনপিসহ অন্য রাজনৈতিক দল অন্তর্বর্তী সরকারকে সহায়তায় দ্ব্যর্থহীন সমর্থন দিয়েছে। ইতোমধ্যে গণহত্যায় অভিযুক্তদের বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল পুর্নগঠন শেষ হয়েছে। শীঘ্রই বিচার শুরু হতে যাচ্ছে বলে সরকার ও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। তবে একটি বিপরীতমুখী প্রবণতাও দেখা গেছে। দেশের কয়েকটি স্থানে আন্দোলনে নাশকতা ও পুলিশ হত্যার মামলায় আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের জড়িত করে গ্রেফতারের খবর পাওয়া গেছে। বিচারহীন কোনো হত্যাকাণ্ড, নাশকতা কিংবা মব জাস্টিস কারো কাম্য নয়। তবে জাতির মুক্তির স্বার্থে প্রবল স্বৈরাচারের খুনি বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো গণআন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার একধরনের প্রবণতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। কোন ভাবে বর্তমান সরকারকে ব্যর্থ হতে দেয়া যাবে না।

মোঃ হায়দার আলী।।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD