কুমিল্লা থেকে, তরিকুল ইসলাম তরুন।।
নাম জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগের দলীয় নেতা, তার ওপর স্থানীয় চেয়ারম্যানের আত্মীয়। তাই তাঁর বিরুদ্ধে কথা বলার লোক এলাকায় নেই, জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরাসহ কামাল্লা গ্রামের অর্ধশতাধিক পরিবার, জাহাঙ্গীর একটি আতংকের নাম,
চেহারা-সুরত ‘নুরানি’। দাড়ি মেহেদিরাঙা। মুখে লেগে থাকে অমলিন হাসি আর নোংরা চিন্তা, দেখে মনে হবে ভাজা মাছ উল্টে খেতে জানেন না। কিন্তু তাঁর ভয়ে নাকি এলাকার মানুষ কাঁপে, কুমিল্লার মুরাদনগরের কামাল্লা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এলাকার ‘বাদশাহ’ বনে গেছেন, নাম তাঁর জাহাঙ্গীর আলম। সঙ্গে আছে তাঁর প্রতাপশালী আরো তিন আপন ভাই। মানুষকে ভয় দেখানো, হয়রানি, বিচার-সালিসের নামে টাকা কামানো ওই চার ভাইয়ের তখন নিত্য কাজ ছিল, অবৈধ পথে উপার্জিত অর্থে ভাইদের বাড়িতে সারি সারি অট্টালিকা, বৈষম্য বিরোধী মতাদর্শের ছাত্র আন্দোলনের পর দেশ পরিবর্তন হলেও এদের ক্ষমতা কমেনি,স্থানীয় নাম ধারী সন্ত্রাসীদের আঁতাত করে পূর্বের ন্যায় অত্যাচার অনাচার, চাঁদাবাজি, আপন চাচা,চাচাতো ভাই রেহাই দেয়নি জাহাঙ্গীর পরিবার। একে তো আওয়ামী লীগের নেতা তার ওপর স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বাশার মাষ্টারের আত্মীয় হওয়ায় এখনো মুখ খুলতে নারাজ অনেকে। এমনই জানালো অর্ধ শতাধিক পরিবারের পক্ষে ভুক্তভোগী জসিম,কুদ্দুস, নসু মিয়া,রেমিট্যান্স যুদ্ধা মুকবুল,জসিম চৌ,এসময় কান্নায় ভেঙে পড়ে জাহাঙ্গীরের আপন চাচারা বলেন জাহাঙ্গীরের অনিয়ম, দূর্নীতি, চাঁদাবাজির কারনে অনেকে সবকিছু হারিয়েছি।,নিরহ মানুষদের বিরুদ্ধে মিথ্যা রাজনৈতিক মামলা করিয়ে হয়রানিসহ জমি দখল,জমি বিক্রি করে দলিল না দিয়ে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে হয়রানি করেছে , পরের জায়গা দখল করা,বিচারের নামে অর্থ বানিজ্য সহ নানান অপরাধের ঘট ফাদার জাহাঙ্গীর, আমরা তার বিচার চাই, তাকে আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানাচ্ছি। সরেজমিন ঘুরে ভুক্তভোগী মানুষের সঙ্গে কথা বলে এমনই ছবি উঠে আসে। গত বুধবার সকালে মুরাদনগরের কামাল্লা ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক পরিচয়ধারী জাহাঙ্গীর আলমের বাড়িতে গিয়ে খোজ নিলে জাহাঙ্গীর বাড়িতে নেই বলে জানায় তার স্কুল পড়োয়া ছেলে জাহিদুল ইসলাম। বাড়ি জরোহওয়া লোকজনের নালিশ বিষয়ে জাহাঙ্গীরের ছেলে জানায় সব মিথ্যা বানোয়াট তার বাবা ভদ্রলোক, জাহাঙ্গীরের মুঠো ফোনে কল দিয়ে যোগাযোগ করলে তিনি জানান রাজনৈতিক কারনে এসব হচ্ছে আমি কারো ক্ষতি করি নি, এগুলো অপবাদ, কিন্তু স্থানীয়রা বলেন এ যেন ওই এলাকার সব কিছু দেখাশোনার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। গত ১৯ শে অক্টোবর ২০২৪ ইং বিভিন্না অপরাধে মুরাদনগর থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে তিনটি অভিযোগ হয়েছে। অভিযোগ তদন্তে মুরাদনগর থানা পুলিশ গত ২৩ শে অক্টোবর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এবিষয়ে মুরাদনগর থানা ইনচার্জ মাহবুবুল হক জানান ঘটনার স্থলে পুলিশ পরিদর্শন করেছে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তবে আগের বিষয়ে কোন কিছু করতে পারবো না,এগুলো আদালতের বিষয়, স্থানীয়রা আরো জানায় জাহাঙ্গীর তাঁর লোকজনকে দিয়ে এলাকায় একের পর এক অপকর্ম করে তার দায়ভার অন্যের কাঁধে চাপাতে সিদ্ধহস্ত। পরে হুমকি দিয়ে ওই ব্যক্তির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের আর্থিক সুবিধা নেন। এলাকার ‘প্রধান সালিসিয়ান’ হিসেবে তিনি নিরীহ অপরাধী সাব্যস্ত করে জরিমানা ‘আদায় করা তাঁর নেশা। ইতি মধ্যে কয়েকটি ঘটনায় গত ১৯ শে অক্টোবর মুরাদনগর থানায় নতুন করে অভিযোগ দাখিল করেন ভুক্তভোগীরা। অতীতের আগুনের মামলা বিষয়ে আওয়ামী নেতা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সমাজে বিচার- আচার করি বলে অনেকেই আমাকে বাঁকা চোখে দেখে। আমার চাচা যে অভিযোগ করেছেন, তা মিথ্যা। সুজন টাকার বিনিময়ে মানুষের বাড়িতে আগুন দিয়েছে, তা সে সালিসে স্বীকার করেছে। আলাউদ্দিন নিরপরাধ, ঘটনাক্রমে সে জেল খাটছে। ভুক্তভোগী
আব্দুল কুদ্দুস মিয়া বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে এলাকায় অনৈতিকভাবে প্রভাব খাটিয়ে চলে। এলাকার কেউ জমি কিনলে বা বাড়ি বানালে তাকে চাঁদা দিতে হয়। আমার মেজ ছেলে একখন্ড জমি কিনতে গিয়ে তাকে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হয়েছে। কয়েক মাস আগে আমার কাছে মোটা অঙ্কের টাকা চাইলে আমি তাতে অপারগতা প্রকাশ করি। এ কারণে সে আমার পিছে লাগে। আমাকে অপদস্থ করতে একজনকে টাকা দিয়ে অন্যের বাড়িতে আগুন লাগায়। পরে ওই আগুন আমি লাগিয়েছি বলে এলাকায় প্রচার করে। এলাকায় গেলে আমাকে পুলিশে দেওয়ার হুমকি দিলে তখন আমি আদালতে মামলা করি। পেপে গাছ কাটার অপরাধে ৮০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাহাঙ্গীর,২০১৪ সালের অবৈধ ফ্যাসিবাদ আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা আসার পর জাহাঙ্গীর আলমের অপকর্ম পরিমাণ আরো বেড়ে যায়।
সমাজের মধ্যে বিচারের নামে জুলুম -অত্যাচার, নির্যাতন,অবিচার ইত্যাদি শুরু করে।তার আরো তিন ভাই সমাজের মধ্যে বাহু শক্তি খাটিয়ে অন্যায় করে শুরু।বাজারের মধ্যে সম্মানিত ব্যক্তিদের মার-ধর এবং হেনস্থা করার ছিল তিনভাইয়ের কাজ।আর এই সুবিধা খাটিয়ে জাহাঙ্গীর সৃষ্টি করে একটা অপরাধ জগত।সেই জগতের রাজা হচ্ছে সে।
তার ওই অপকর্ম থেকে রেহাই পাইনি আপন চাচা এবং চাচাতো ভাইয়েরা।২০১৬সালের মিথ্যা জজ্ঞিমামলা দিয়ে সমাজের মেধাবী শিক্ষার্থীর জীবন নষ্ট করেছে জাহাঙ্গীর। এমনি অনেকের পরিবার কাজ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে জাহাঙ্গীর এবং তার গ্যাং এর লোকেরা।
তার ভাই এবং অস্ত্র ধারী গ্যাং এর লোকেরা মিলে সমাজের মধ্যে আগুন লাগিয়ে মানুষকে ভয় দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়।
সে ২০১৬সাল থেকে তার লোক দিয়ে আগুন লাগায় এবং অন্য ছেলেদের নাম দিতে বাড়িতে নিয়ে টর্চার এবং লাটিপিটা করে।এমনি কান্না গলায় বর্ননা দিচ্ছিলেন ভুক্তভোগী বাবা শাহ-আলম বেপারী।
২০১৭সালের ডিসেম্বর মাসে তার দুই চাচাতো ভাই দেশে আসলে তাদের কাছে অধিক পরিমান চাঁদা চাই জাহাঙ্গীর এবং তার ভাইয়ের।চাঁদা দিয়ে অস্বীকার জানালে মিথ্যা অপকর্মে ফাসিয়ে দিবে বলে জানায় জাহাঙ্গীর এবং তার গ্যাং এর লোকেরা।
পূর্বের আগুন লাগানো পরিমান ২০১৮সালে জানুয়ারি মাসে বাড়িয়ে দিয়ে তার দুই প্রবাসি চাচাতো ভাইয়ের নাম প্রকাশ করে জাহাঙ্গীর এবং তার তিন ভাই। চাচা নসু মিয়া চাদা দিতে অস্বীকার করায় গলায় ধালালো অস্ত্র ধরে জাহাঙ্গীর আলমের তিন ভাই আল-আমীন, আলম এবং আলমগীর। তাই সে ভয়ে রাজি হয়। এসময় নসু মিয়ার কাছ থেকে ৭লক্ষ টাকা এবং একটি স্বর্নের নেকলেস নিয়ে যায় জাহাঙ্গীর। অপর চাচা আব্দুল কুদ্দুস মিয়াও অস্বীকার করলে তাকে মার-ধর করে এবং তার বাড়ি দা এবং ধাঁলালো অস্ত্র দিয়ে বেড়া নষ্ট করে।আব্দুল কুদ্দুস মিয়া এবং ছেলেরা জীবন রক্ষা করতে বাড়ি থেকে পালিয়ে যায় এবং আদালতের মামলা দায়ের করে।
কিন্তু প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতা কারনে তৎকালীন পুলিশ বার বার রিপোর্ট দিতে ব্যার্থ হয় জাহাঙ্গীর বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিতে। রেমিট্যান্স যুদ্ধা মুকবুল তাদের বিচার দাবি করেন প্রশাসনের কাছে।স্থানীয় অর্ধ শত পরিবার প্রশাসনের কাছে জাহাঙ্গীরের অপকর্মের বিচারের দাবি করে বলেন তাকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা হোক।
Leave a Reply