December 21, 2024, 5:03 pm
আলিফ হোসেন,তানোরঃ
রাজশাহীতে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিএ) রাজশাহীর উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, বিগত ২০২৩ – ২৪ অর্থবছরে আলু বীজ সরবরাহ নিয়ে তিনি নানা অনিয়ম-দুর্নীতি করেছেন।
আলু চাষীদের অভিযোগ, লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চুক্তিবদ্ধ চাষীদের উৎপাদিত আলু বীজ সরবরাহ করার কথা বিএডিসির। সে অনুযায়ী চাষীদের কাছ থেকে প্রতি বস্তায় ৫০ কেজির স্থলে ৫৩ কেজি করে আলু বীজ সরবরাহ করতে বাধ্য করেছেন উপসহকারী পরিচালক। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল কাদের বলছেন, লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী চুক্তি বদ্ধ চাষী রবি এডিসিতে আলু বীজ সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
এসব বিষয়ে বিএডিসি আলু বীজ চুক্তিবদ্ধ কৃষক ফোরাম রাজশাহীর সাংগঠনিক সম্পাদক হাসিবুর রহমান বিএডিসির চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি কৃষি উপদেষ্টা, বিএডিসি বীজ ও উদ্যান পরিচালক, বিএডিসি আলু বীজ প্রকল্প পরিচালক এবং রাজশাহী আলু বীজ (কৃষি) উপ-পরিচালক বরাবর অভিযোগের অনুলিপি প্রেরণ করেছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক আলু চাষী বলেন, সহকারী উপ-পরিচালকের নানামুখী অনিয়ম-দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারে তারা রীতিমতো অতিষ্ঠ। তারা এই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার দ্রুত অপসারণ চান।
এদিকে বিএডিসি আলুবীজ চুক্তিবদ্ধ কৃষক ফোরাম রাজশাহীর সাংগঠনিক সম্পাদক হাসিবুর রহমানের লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, চলতি বছর রাজশাহী জোনের আওতাধীন চাষীরা এক হাজার ৭০০ মেট্রিকটন আলু বীজ বিএডিসিতে সরবরাহ করেছেন।
কিন্তু এ বীজ সংগ্রহ করতে আলু বীজ চাষীদের পড়তে হয় শুভঙ্করের
ফাঁকিতে। প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি করে আলু দেয়ার কথা থাকলেও চাষীদের কাছ থেকে ৫৩ কেজি করে আলু নেয়া হয়েছে। এতে প্রত্যেক চাষীকে বস্তাপ্রতি ৩ কেজি করে আলু বেশি দিতে হয়েছে। চাষীরা অভিযোগ করেন, প্রতি মেট্রিক টনে
হয় ২০ বস্তা আলু। সেই হিসেবে এক হাজার ৭০০ মেট্রিক টনে হয় ৩৪ হাজার বস্তা আলু। প্রতি বস্তায় ৩ কেজি করে আলু বেশি নেয়া হলে কৃষকদের কাছ থেকে বিএডিসি রাজশাহীর উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল কাদের এক লাখ ২ হাজার কেজি আলু বেশি নিয়েছেন। যার বাজার মূল্য প্রায় ৫১ লাখ টাকা। উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল কাদেরের কারণে এই অঞ্চলের বীজ আলু চাষীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন।তারা এর প্রতিকার চান। অভিযোগে আরো বলা হয়, কৃষকদের কাছ থেকে ৩ কেজি করে আলু বস্তা প্রতি বেশি নিলেও দাম শোধ করেছেন ৫০ কেজির। শুধু তাই না, চুক্তিবদ্ধ চাষীদের বস্তা, ট্যাক করা, ওজন দেয়া, লোড করা, বাছাই, শ্রমিকমূল্য সব কিছুই বহন করতে হয়েছে চাষীদের। বিএডিসির পক্ষ থেকে এসব খরচের জন্য প্রতি কেজিতে ১
টাকা ৫ পয়সা করে প্রদান করার কথা থাকলেও তা দেয়া হয়নি। এদিকে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী যেসব চাষী বীজ আলু দিতে পারেননি তাদেরকে অবশিষ্ট বীজ আলু সরবরাহের জন্য চিঠিও দিয়েছেন রাজশাহী বিএডিসির (হিমাগার)
উপ-পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) কেএম গোলাম সরওয়ার। যাদের এই চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে তাদের কয়েক জন জানিয়েছেন তারা এই ধরণের কোনো চিঠি পাননি। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিএডিসি রাজশাহীর উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল কাদের বলেন, ২০২৩-২৪ মৌসুমে
রাজশাহী বিএডিসির অধীনে ১৮টি ব্লকে চুক্তিবন্ধ মোট ২৮০ জন চাষী বীজ আলু চাষাবাদ করেন। এর মধ্যে কিছু কৃষক লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বিএডিসিতে আলু বীজ সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। যেসব চাষী ব্যর্থ হয়েছেন মূলত তারাই আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। এছাড়া বস্তা প্রতি ৩ কেজি করে আলু বেশি নেয়ার অভিযোগও সঠিক নয় বলে দাবি করেন তিনি।#