শার্শার কায়বা ইউনিয়নের ঠেঙামারী বিলের করুন দশা, হাজার হাজার চাষী এখন নিঃস্ব

আজিজুল ইসলাম,যশোরঃ যশোরের শার্শা উপজেলার কায়বা ইউনিয়নের ঠেঙামারী বিল একটি অভিশপ্ত নাম। ১৯ ৭১ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত ঠেঙামারী বিলের ৫শ একর আমন ধানের জমি ৬ মাস ধরে পানির নিচে তলিয়ে থাকে। ফলে দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতার কারনে শত শত চাষি আজ পথের ফকির। টানা ৫৩ বছর ধরে এই বিলে কোনো আমন ফসল হয়না। যে কারনে কৃষকরা তাদের জায়গা জমি হারিয়ে এখন দিশে হারা। এক কালে যারা ধনী চাষি পরিবার ছিলো আজ তারা অসহায় পড়েছে। ঠেঙামারী বিলসহ আসপাশের আওয়ালী বিল ও গোমর বিল সহ বেশ কয়েকটি বিল আষাঢ়মাস থেকে পানির নীচে ডুবে থাকে। যার দরুন রুদ্রপুর, দাউদখালী, ভবানীপুর, কায়বা, পাঁচকায়বা, গাজীর কায়বা,পাড়ের কায়বা ও বাইকোলাসহ কায়বা ইউনিয়নের ৮ গ্রামের হাজার হাজার চাষী আমন ধানের চাষ করতে না পেরে পথের ফকির বনে গেছেন। তারা এখন শুধু ইরিচাষের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। অনেক সময় বিলের পানি সময়মতো নিষ্কাসিত না হওয়ায় ইরি বোরো চাষেও মার খেয়ে যায় চাষীরা।

জলাবদ্ধতার আজও কোনো সমাধান করেনি কোনো সরকার। জানা গেছে ভারত বাংলাদেশ সীমানা নির্ধারণী নদীর সাথে সংযোগ খাল রয়েছে ঠেঙামারী বিলের মাঝ দিয়ে। যেটা চলে গেছে শার্শার উত্তর অঞ্চলে। বর্ষা মৌসুমে ঐ অঞ্চলের সমুদয় বিলের পানি জমা হয় ঠেঙামারী বিলে। এবং এই পানি নামতে নামতে ইরি মৌসুমে শেষ হয়ে যায়। চাষীরা আমন ধান তো লাগাতেই পারেনা। এমনকি ইরি বোরো ধানও লাগাতে পারেনা চাষীরা। ৮০ ও ৯০ দশকের শেষ দিকে রুদ্রপুর ও দাউদখালী গ্রামের জিরো পয়েন্টে দুটি স্লুইসগেট নির্মান করা হয়েছিলো। নির্মানে ত্রুটি থাকায় তা কোনো কাজে আসছে না। গত বছর পরীক্ষা মুলক ভাবে খালের মুখ বন্ধ করে দেয়া হয়। এবং বিলের পানি সেচে ইরিধান রোপন করা হয়। খালের মুখ বন্ধ করার ফলে নদীর জোয়ারের পানি এবার প্রবেশ করতে পারেনি। যেকারণে পানির চাপ এবছর একটু কম ছিলো। তার পরেও বিলে জমে থাকা এপানি বেরুনোর কোনো রাস্তা না থাকায় জলাবদ্ধতার কোনো নিরসন হয়নি। এলাকাবাসীর দাবী গোমর বিলের ভেতর দিয়ে নতুন খাল কেটে কলারোয়া উপজেলার সোনাই নদীর সাথে সংযোগ ঘটালে ও ইছামতী নদীর সংযোগস্থলে বাঁধ দিয়ে মোটর গেট চালু করতে পারলে স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতার নিরসন হতে পারে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *