December 21, 2024, 5:24 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
ঝিনাইদহে ৩ দিন ব্যাপী বেসিক জার্নালিজম বিষয়ক প্রশিক্ষণ শুরু তানোরে হিমাগার ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে প্রতিবাদ সভা তানোরে জামায়াতের স্মরণকালের সর্ববৃহৎ কর্মী সভা দুর্বার তারুণ্যের বংকিরার পক্ষ থেকে শীত বস্ত্র বিতরণ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে পাইকগাছার জনজীবন বিপর্যস্ত খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদে বড় দিন উপলক্ষে বান্দরবানের থানচি উপজেলায় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছে সেনাবাহিনী ময়মনসিংহের বিদায়ী পুলিশ সুপারকে বিদায় সংবর্ধনা ও নবাগত পুলিশ সুপারকে বরণ হারিয়ে গেছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য “ধানের গোলা” মধুপুরে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে পিতাপুত্রের মৃ-ত্যু কালীগঞ্জে ফেন্সিডিলসহ মাদক ব্যবসায়ী জামিনী কান্ত, গ্রেফতার 
ঘুঘু পাখি বিলুপ্তি প্রায়

ঘুঘু পাখি বিলুপ্তি প্রায়

মোঃ হায়দার আলী।। মরণ বাঁধ ফারাক্কার কারণে বর্ষার সময় দেশের মানুষকে পানিতে ডুবিয়ে মারছে ভারত, কোটি কোটি টাকার আবাসস্থল, ঘরবাড়ি, গরুছাগল, হাঁস মুরগি, রাস্তাঘাট, ব্রিজ কালভাট ভেঙে যাচ্ছে নদী গর্ভে। আর খরা মৌসুমে পদ্মায় পানি কমে যাচ্ছে, ধুধু বালু চর, নদীতে ডুব চরের সংখ্যাও কম নয়। পদ্মার কোল ঘেষে উঠা চরে কৃষক সমাজ আম, পেয়েরা, পটল, চিনা, করলা, পুট্টাসহ নানা সবজির আবদ করেছেন এ নিয়ে লিখার জন্য খাতা কলম, তথ্য – উপাত্ত, নিয়ে ল্যাপটপের সামনে বসলাম, এমন সময় এক জোড়া ঘুঘু পাখি ঘরের বারান্নায় অসলো, সুন্দরভাবে খেলা করা শুরু করলো। বাইরে রিমঝিম করে বৃষ্টি হচ্ছে, খুব সুন্দর লাগছিল ঘুঘু পাখির ডাক। তাই তো লেখার থিম পরিবর্তন করে আল্লাহর নাম নিয়ে লেখা শুরু করলাম।

দেশের রাজশাহীরসহ উত্তরাঞ্চলের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ঘুঘু পাখি বিলুপ্ত প্রায়। দেশের অন্য স্থানের চিত্র প্রায় একই। এর প্রধান কারণ অবাধে ঘুঘু শিকার ও আবাস স্থলের দারুণ অভাব।
এক সময় উত্তরাঞ্চলসহ দেশে প্রচুর ঘুঘু পাখি দেখা যেত। আবার অনেকে খাঁচায় করে বাসাতেও পুষত। গ্রাম বাংলার একসময়ের চির পরিচিত ঘুঘু পাখি এখন হারিয়ে যেতে বসেছে। এ পাখি সংরক্ষণে কোন কার্যকরি পদক্ষেপ গ্রহন করা হয় না।

অর মাঠের ধান, গম, মুসরী, সরিসা, কলাই প্রভূতি ফসল ঘরে উঠছে এই আনন্দে ঘুঘুর ডাকে মুখরিত হয়ে উঠত পরিববেশ। ঝোপ-জঙ্গল, খোলা মাঠ, গ্রাম বা আশপাশে বড় বড় গাছ আছে এমন কৃষি জমিতে, বাড়ী ছাঁদ, চালে এদের দেখা মিলত।

এ দেশের প্রায় সর্বত্রই লাল ঘুঘুর বিচরণ। সাধারণত জোড়ায় বা ছোট দলে বিচরণ করে। কৃষিজমি, খামার, ঘাসপূর্ণ মাঠ, ঝোপ, বনের প্রান্ত বা গ্রামে হেঁটে হেঁটে খাবার সংগ্রহ করে এরা। ঘাস ও আগাছার বিচি, শস্যদানা, গাছের কুঁড়ি ও কচি পাতা খায়। মূলত সরিষা, গম, মুসরী, ধানই ছিল ঘুঘুর প্রধান খাদ্য।

বেগুন, সরিষা, মসুরী,ধানসহ বিভন্ন ফসলে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারের ফলে যেমন ঘুঘুর প্রজনন কমে গেছে। খাস পুকুরগুলি মাছ চাষ করায় সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করায় খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে এখন প্রতিনিয়ত মারা যাচ্ছে ঘুঘু পাখি। রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার গ্রামাঞ্চলে সর্বত্র একসময় মেঠে ঘুঘু, তিলি ঘুঘু, রাম ঘুঘুর দেখা মিলত। এখন সেই ঘুঘু দেখা তো দূরের কথা ঘুঘু পাখির ঘু.. ঘু.. শব্দের পরিচিত ডাকও শোনা যায় না। ফলে একালের শিশু কিশোরা ঘুঘু পাখির ডাক শুনে না, এ পাখিও চিনতে পারে না।

পাখি বিশেষজ্ঞদের মতে, ছোট বড় দেশী গাছ অবাধে নিধন, ঝোপ, জঙ্গল নষ্ট হয়ে যাওয়া, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক যুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে পাখির পরিমাণ হ্রাস পাওয়া ও ডিম পাড়ার হার কমে যাওয়াসহ নিরাপদ আশ্রয়ের অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতির পাখি বলে পরিচিত ঘুঘু পাখি। তাছাড়া পাখি শিকার ও বিক্রির কারণেও প্রতিদিন নিধন হচ্ছে এই পাখি। ঘুঘু অত্যন্ত ভিতু ও লাজুক প্রকৃতির পাখি।

সাধারণত বছরে এক জোড়া ডিম পাড়ে। সেই ডিমে তা দিয়ে নিজেই বাচ্চার জন্ম দেয়। বিস্তীর্ণ জমির গাছের ডালে, আড়ালে আবডালে এরা বাসা করে ডিম থেকে বাচ্চা দিত। এখন এই পাখিটি বিলুপ্ত প্রায়। এক সময় প্রচুর সংখ্যায় দেখা গেলেও শিকারিদের কবলে পড়ে ও ঝোপ-জঙ্গল কমে যাওয়ায় বর্তমানে এদের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। বিপন্ন হয়ে পড়েছে এই সুন্দর পাখিটি।
তবে গোলাপি-মেরুন ডানার পুরুষটি দেখতে অত্যন্ত সুন্দর। লাল ঘুঘু ছোট আকারের পাখি। লম্বায় ২৩ সেন্টিমিটার, যার মধ্যে লেজই নয় সেন্টিমিটার। স্ত্রী পাখিটি পুরুষটির চেয়ে কিছুটা ছোট। পুরুষটির মাথা নীলচে-ধূসর। পিঠ ও ডানার পালক গোলাপি-মেরুন। ডানার পেছনের অংশ কালচে। লেজের পালক ধূসর। লেজের নীচটা সাদা। বুক ও পেট হালকা গোলাপি। স্ত্রীটির রং পুরোপুরি আলাদা। দেহের ওপরের অংশ গাঢ় হলদে বাদামি ও নীচের অংশ হালকা হলদে-ধূসর। উভয়েরই গলার পেছনে একটি কালো চিকন কলার আছে। উভয়ের চোখ বাদামি, ঠোঁট কালো, পা বেগুনি-লাল বা বেগুনি-কালো। এরা ‘গুউ-গুউ-গুউ’ স্বরে ডাকে।
লাল ঘুঘু সারাবছর প্রজনন করতে পারে। সাধারণত গাছের পাতাওয়ালা শাখায় ঘাস ও কাঠিকুঠি দিয়ে বাসা বানায় এবং তাতে স্ত্রী পাখিটি দুটি সাদা রঙের ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয় মাত্র ১৮দিনে। বাসা বানানো থেকে শুরু করে ডিমে তা দেয়া ও বাচ্চাদের খাওয়ানো সবকিছুই স্ত্রী-পুরুষ একত্রে মিলেমিশে করে।
সচেতন মহল ঘুঘু পাখিটিকে রক্ষা করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা উচিৎ বলে মনে করেন, সে সাথে পরিবেশের ভাল হবে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের এ পাখিটির সাথে পরিচিতি থাকবে।

মো. হায়দার আলী
গোদাগাড়ী,রাজশাহী।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD