ধোপাজান নদীতে প্রশাসনের চোখের সামনে প্রতিদিন চলছে কোটি টাকার বালু পাথর লু*টপাটের তা*ন্ডব

কে এম শহীদুল সুনামগঞ্জ:
সুনামগঞ্জের ইজারা বিহীন ধোপাজান নদীতে চলছে অবৈধ ভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রভাবশালী সিন্ডিকেটের বালু ও পাথর উত্তোলনের মহোৎসব। প্রতি রাতে শত শত বাল্কহেড ষ্টিলবডি নৌকা দিয়ে কোটি টাকার বালু ও পাথর অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যরা। জানা যায় আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পর অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠনের পর সুনামগঞ্জ ইজারা বিহীন ধোপাজান নদীতে চলছে হরিলুঠ। যে যেমন করে পারছে ইচ্ছে মত লুঠপাট করে নিয়ে যাচ্ছে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে ইজারা বিহীন ধোপাজান নদীর পারকেটে কোটি কোটি টাকার বালু ও পাথর । আর এসব কিছু হচ্ছে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন এবং নৌ পুলিশের চোখের সামনে। জানা যায় ৪/৫ বছর যাবৎ মামলা জটিলতার কারণে ধোপাজান চলতি নদীর বালু ও পাথর মহালটির ইজারা বন্ধ রয়েছে। এবং পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধোপাজান নদীর খালের মুখে ইব্রাহিম পুর এলাকায় অস্থায়ী একটি চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। পাশাপাশি সদর থানাধীন টুকের বাজারে নৌ পুলিশের একটি কেম্প ও রয়েছে। কিন্তু এসব চেকপোস্ট গুলোর চোখের সামনে লুঠপাট হচ্ছে ইজারা বিহীন ধোপাজান নদীর বালু ও পাথর। অবৈধ ড্রেজার মেশিনের তান্ডবের কারনে ধোপাজান নদীর ভারসাম্য যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি নদীর পারে থাকা মসজিদ মন্দির, স্কুল, মাদ্রাসা ও অসহায় মানুষের বাড়িঘর ভেঙে ইতি মধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হতে চলছে। একদিকে যেমন সরকার হারাচ্ছে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব অন্যদিকে কয়েকটি সিন্ডিকেট চক্র সক্রিয় ভাবে ডিউটিতে অবস্থানরত পুলিশ চেকপোস্টের নির্দেশনা অমান্যকরে বল প্রয়োগ করে একসঙ্গে প্রায় শতাধিক নৌকা উশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি করে পুলিশের উপর হামলার প্রস্তুতির নাটক তৈরি করে হাওউল্লাস করে গভীর রাতে নদী পথে নিয়ে যাচ্ছে লাখ লাখ টাকার বালু ও পাথর। জানা যায় আওয়ামীলীগের ডালাস নামে এক নেতা প্রতিটি নৌকা থেকে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা নিচ্ছেন নৌকা পাস দেওয়ার নামে । এমন অভিযোগ জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন নৌকার মাঝি। তাছাড়াও প্রতিটি রাজনৈতিক দলের কিছু নেতারা এবং সাংবাদিক সমাজের কয়েক জন গণমাধ্যম কর্মীসহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের কিছু ব্যক্তি ও জড়িত রয়েছেন এই ধোপাজান নদীতে বালু ও পাথর উত্তোলনের সিন্ডিকেট সদস্যদের সাথে। অধিক মুনাফার লোভে পড়ে সব সেক্টরের লোকেদের সমন্বয়ে চলছে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু পাথর উত্তোলনের মহোৎসব। পুলিশের নিয়মিত অভিযানে প্রতি নিয়ত ৫ /৭ টি বল্বহেড নৌকা আটকের দৃশ্য দেখা গেলেও শত শত বাল্বহেড ষ্টিলবডি নৌকা প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার বালু ও পাথর বুঝাই করে নিয়ে যাচ্ছে প্রকাশ্যেই । যা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হচ্ছেন সুনামগঞ্জ জেলার সকল সেক্টরের আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। মাঝে মধ্যে কিছু নৌকা আটক করে মামলা জড়িমানা করেও থামানো যাচ্ছে না ধোপাজান নদীর বালু পাথর লুঠপাটের দৃষ্য। সাংবাদিকদের ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশ হলেও জেলা প্রশাসন ও নৌপুলিশের কোন দৃশ্যমান অভিযান এখনো চোখে পড়েনি রহস্যময় কারনে? অন্যদিকে ডিবি পুলিশ ও থানা পুলিশ ধোপাজান নদীর ভারসাম্য রক্ষায় অবস্থানে থাকলেও নিজেদের নিরাপত্তার ভয়ে কঠোরভাবে দমন করতে পারছেন না হামলার ভয়ে? সবাই শুধু অবাক চোখে তাকিয়ে দেখছেন এমন দৃশ্য। মামলা হামলার ভয়ে মুখ খুলতে এবং প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেন না সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গসহ পরিবেশ বাদীরা। জেলা প্রশাসকের নিকট অনেকেই ধোপাজান নদীর পরিবেশ ও ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য মানববন্ধন করে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। ইজারা বিহীন ধোপাজান নদী রক্ষা করতে জেলা প্রশাসকের কঠোর হস্তক্ষেপের আশায় তাকিয়ে আছেন সাধারণ মানুষেরা। জেলা প্রশাসক কেন ধোপাজান নদীতে বালু পাথর লুঠপাট বন্ধে কার্যকর কোন পদক্ষেপ নিচ্ছেন না সেই ভাবনা অনেকের মনে রহস্যময় ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে। জেলা প্রশাসন খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল সেক্টরের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিয়ে ধোপাজান নদীর পরিবেশ ও ভারসাম্য রক্ষা করতে এবং সরকারের কোটি কোটি টাকার রাজস্ব রক্ষা করতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিবেন এমনটাই আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন নদীর তীরে অবস্থিত সাধারণ মানুষসহ সুশীল সমাজের লোকেরা।##

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *