December 22, 2024, 6:23 am
আলিফ হোসেন,তানোরঃ
রাজশাহীর তানোরের কামারগাঁ ইউনিয়নের (ইউপি) হাতিশাইল উচ্চ বিদ্যালয়ের কম্পিউটার ল্যাব থেকে রহস্যজনকভাবে চুরি হওয়া সাতটি ল্যাবটপ পরিত্যক্ত অবস্থায় বিদ্যালয় থেকেই উদ্ধার হয়েছে।এদিকে চুরি হওয়া ল্যাবটপ স্কুল থেকেই উদ্ধার হওয়া নিয়ে,জনমনে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে, বইছে মুখরুচক নানা গুঞ্জন।স্থানীয়রা জানান, ল্যাবটপ চুরির সঙ্গে স্কুলের কেউ না কেউ জড়িত থাকতে পারে। কারণ চুরির ঘটনার শুরু থেকেই প্রধান শিক্ষক আয়নাল হক রহস্যজনক ভুমিকা পালন করে চলেছে।
অন্যদিকে গত ২১ আগষ্ট বুধবার
সরেজমিন হাতিশাইল উচ্চ বিদ্যালয়ে দেখা গেছে, স্কুলে প্রবেশের সব দরজা বন্ধ করে মেম্বারসহ শিক্ষকরা দুজন মিস্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এসময় স্কুলের মাঠে মালবোঝাই ট্রাক আটকিয়ে রাখা হয়। স্কুলের অফিস কক্ষের চেয়ারে পাঁচটি ল্যাবটপ ও টেবিলের উপরে ব্যাগে মাউসসহ কিছু তার রাখা আছে। সেই ব্যাগ নিয়ে বের হওয়ার সময় সন্দেহ হলে শিক্ষকরা তল্লাশি শুরু করেন। তল্লাশির পর ব্যাগে মাউসসহ তার পেয়ে তাদেরকে আটকে করা হয়।
স্কুলের অফিস সহকারী মাসুদ রানা জানান, ল্যাবটপ চুরি হওয়ার পর থেকে মিস্ত্রিদের সন্দেহ করা হয়েছিল। যে চারজন মিস্ত্রি চুরি করে তারা গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ল্যাবটপগুলো স্কুলে রেখে দুজন মিস্ত্রীকে বলে যায়। আমরা স্কুল থেকে স্কুলে থাকা দুজন মিস্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও তারা শিকার করছিল না। দুপুরের পরে তারা শিকার করেন দুজন গোদাগাড়ী উপজেলার ও দুজন নাটোর জেলার মিস্ত্রী চুরি করেছে। যেহেতু চোরের নাম বলেছে এজন্য এদুজনকে ছেড়ে দেয়া হয়। চোরদের নাম চাইলেও দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহকারী মাসুদ।মেম্বার বুলু জানান, চুরি হওয়ার পর থেকে স্কুল সংস্কার কাজের ঠিকাদারকে বলা হয়। ঠিকাদার মিস্ত্রিদের মোবাইল ট্যাগ করে চুরির বিষয়ে নিশ্চিত হন। এবিষয়ে প্রধান শিক্ষক আয়নাল হক জানান, চুরি হওয়া ট্যাবটপ পাওয়া গেছে এটাই অনেক বড় ব্যাপার। ঠিকাদারের সাথে কথা হয়েছে সে বৃহস্পতিবারে এসে সমাধান করবে। বাকি দুই মিস্ত্রিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেয়ার কারনকি জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে চুপ থাকেন। এঘটনায় মামলা করা হয়েছে কি প্রশ্ন করা হলে উত্তরে বলেন অভিযোগ দেয়া হয়েছিল।
স্থানীয়রা জানান, মিস্ত্রিরা দীর্ঘ প্রায় তিন মাস ধরে স্কুল মেরামত কাজ করছেন তাদের আচার-ব্যবহার অনেক সুন্দর। তাছাড়া তারা তো চুরি করতে চাইলে অনেক আগেই চুরি করতে পারতো। আবার তারা যদি চুরি করে থাকে তাহলে আইনগত ব্যবস্থা না নিয়ে ছেড়ে দেয়া হলো কেন। অবশ্যই চুরির নেপথ্যে অন্যকিছু রয়েছে। সরকারি ল্যাবটপ চুরি হয়েছে মামলা না করে অভিযোগ কেন ? হয়তো প্রধান শিক্ষকের অনুগত কেউ জড়িত থাকতে পারে, বিষয়টি নিয়ে অধিকতর তদন্তের দাবি জানান এলাকাবাসী।
ওদিকে আবার যে দুজন মিস্ত্রী ছিলো তাদেরকে মারপিট করে শিকারোক্তি নিয়ে ঠিকাদারের কথামত ছেড়ে দেয়া হয়েছে। ঠিকাদার যদি না আসে তাহলে কার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবে এমনও প্রশ্ন জনসাধারণের। স্কুলেরসব গেট বন্ধ করে নিজেরাই সবকিছু করে ছেড়ে দিয়েছে। তারা যদি চোরের নাম করে তাহলে এদুজন মিস্ত্রি কিভাবে ছাড় পায়। সবকিছুর হোতা প্রধান শিক্ষক ও মাসুদ। তারা ঘটনা ধাঁমাচাপা দিতে মরিয়া হয়ে পড়েছেন।
এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, মিস্ত্রি দেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর ছেড়ে দিলে বুঝতে হবে প্রধান শিক্ষকের ইন্ধন আছে। চুরি ও উদ্ধার হওয়ার পর প্রধান শিক্ষক অবিহিত করেনি। সে একজন গোড়া ব্যক্তি নিজে যেটা বুঝে সেটাকেই সঠিক মনে করে। তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।এবিষয়ে
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপসহকারী প্রকৌশলী (তানোর) শরিফুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, চুরি হওয়া ল্যাবটপ উদ্ধার হয়েছে। চোরের বা ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান স্কুলের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্তের বিষয়ে কিছু বলা যাবে।এবিষয়ে
ঠিকাদার সোহেলের ০১৭৩০১৭৮৪৪৮ মোবাইল নম্বরে ফোন দেয়া হলে একজন রিসিভ করে বলেন ভাই বাহিরে আছে। তার পরিচয় জানতে চাইলে সে জানায় আমি তার ম্যানেজার। এবিষয়ে
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোস্তাফিজুর রহমানকে মোবাইলে বিষয়টি অবহিত করা হলে তিনি জানান, এমন ঘটনা ঘটে থাকলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#