গোদাগাড়ীর দেওপাড়া ইউনিয়নে নবনির্মিত শহীদ মিনার উদ্বোধন করলেন উপজেলা চেয়ারম্যান সোহেল

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহীঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে নবনির্মিত শহীদ মিনার উদ্বোধন করেন নতুন প্রজন্মের গর্ব গোদাগাড়ী উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোঃ বেলাল উদ্দীন সোহেল।

বুধবার দেওপাড়া ইউপির চেয়ারম্যান ( ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আত্তাব উদ্দিনের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন বীরমুক্তিযোদ্ধা মোঃ কাবাজ উদ্দিন, জেলা কৃষকলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইমন মন্ডল, সহঃ সভাপতি আব্দুল মান্নান, উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ। ওয়ার্কপটি রাজশাহী জেলার সভাপতি রফিকুল ইসলাম পিয়ারুল, দেওপাড়া ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল রাজ্জাক বাবলু, আদিবাসীনেতা বিমল রাজওয়ার, পালপুর ধরমপুর জাগরনী ক্লাবের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল হাকিম, কৃষকলীগ নেতা হেলাল উদ্দিন, মিনারুল ইসলাম কালু প্রমূখ।

বেলাল উদ্দিন সোহেল বলেন, শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনার নির্মান করা হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে ৯ লক্ষ টাকা, জেলা পরিষদ বরাদ্দকৃত টাকার পরিমান ৫ লাখ টাকা, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ব্যয় করা হয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, উপজেলা চেয়ারম্যান ব্যক্তিগত অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা। তিনি আরও বলেন, শহীদ মিনারের ইতিহাস সবার জানা, তার পরেও একটু বলতে হয়, প্রথম শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ রাজশাহী নামে খ্যাত স্তম্ভটি ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রাজশাহী কলেজ মুসলিম হোস্টেলের এফ ব্লকের সামনে ইট-কাদা দিয়ে নির্মান করা হয়। এই স্মৃতিস্তম্ভটি ২২ ফেব্রুয়ারি পুলিশ প্রশাসন দ্বারা ভেঙে ফেলা হয়। ফেব্রুয়ারি রাতে আবার ঢাকা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকাতে প্রথম বারের মত শহীদ মিনার নির্মাণ করেছিলেন। একটি কাগজের উপর ‘শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ’ শব্দদুটি লিখে এতে গেঁথে দেওয়া হয়েছিলো।আন্দোলনে নিহত শফিউর রহমানের পিতা এই শহীদ মিনারের উদ্বোধন করেন। তবে ২৬ ফেব্রুয়ারি পুলিশ ও পাকিস্তান সেনাবাহিনী কর্তৃক এই শহীদ মিনার ভেঙে ফেলা হয়। পরবর্তীতে ঢাকা কলেজেও শহীদ মিনার তৈরি করা হয়েছিলো, সেটিও সরকারের আদেশে ফেঙ্গে ফেলা হয়। এরপরে বাংলা ভাষাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার পর ১৯৫৭ সালে সরকারিভাবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের কাজ শুরু হয়। ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মাহামুদ হোসেনের নেতৃত্বে এটির কাজ সম্পন্ন হয়। এইসময় শহীদ আবুল বরকতের মা হাসিনা বেগমকে দিয়ে এই শহীদ মিনারের উদ্বোধন করা হয়।

শিক্ষায়তনসূত্রে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারকে ঘিরে অনেক স্মৃতি আছে, অনেক গল্প আছে, শহীদ মিনারকে দেখেছি দিনের উদীয়মান সূর্যের আলোয় আবার দেখেছি একুশের প্রথম প্রহরে, প্রতিবারের দেখায় মেলে নিত্য-নতুন অনুভব। কখনো অধিকার আদায়ের মিছিল নিয়ে, কখনো প্রতিবাদী সমাবেশে আমাদের গন্তব্য ছিল শহীদ মিনার। বীরমুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধার সন্তান, শিক্ষক, ছাত্র ছাত্রী, কৃষক, শ্রমিক, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক, সুধীজনসহ সাড়ে তিন হাজার বিভিন্ন পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

মোঃ হায়দার আলী
রাজশাহী।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *