মোংলা প্রতিনিধি।
মোংলা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকার (ইপিজেড) ভারতীয় মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে শুরু হওয়া বিক্ষোভের পর সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। সোমবার (২৫ মার্চ) রাতে ভিআইপি ইন্ড্রাস্ট্রিজ বাংলাদেশ লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানটির মানবসম্পদ ও প্রশাসন বিভাগের কর্মকর্তা মো. মাইদুল ইসলাম রাজু বাদি হয়ে মোংলা থানায় ওই মামলা দায়ের করেন। এতে চার নারীসহ ১০ শ্রমিকের নাম উল্লেখসহ আন্দোলনকারী অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারনামীয় ১০ আসামিকে সোমবার দুপুরে সংঘর্ষের সময় আটক করেছিল পুলিশ। তখন জানানো হয়েছিল তাদের জিজ্ঞাসা বাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়েছে। রাত সোয়া ১২টার দিকে এজাহার দাখিলের পর তাদের ওই মামলা গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) দুপুরে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এরা হলেন উপজেলার মিঠাখালী এলাকার সুমন হাওলাদার (২০), অমৃত মণ্ডল (২৩) ও রহিমা বেগম (২৩), উপজেলার উত্তর চাঁদপাই গ্রামের সিফাত উল্লাহ শেখ (২২), মোংলা শহরের বাতেন সড়কের নাসরিন জাহান ইভানা (২২), সুন্দরবন ইউনিয়নের বাঁশতলা গ্রামের গ্রামের লিপি বেগম (৩৫), রামপাল উপজেলার ফয়লা এলাকার রুমানা আক্তার (১৮), তেলিখালী এলাকার শেখ আবু ফাহাদ (২০), ডাকরা গ্রামের আজিজুল ফকির (২০) গোপীনাথপুর গ্রামের মো. মাসুদ হাওলাদার (২১)। তারা সবাই ভিআইপি ইন্ড্রাস্ট্রিজের ছাঁটাই হওয়া কর্মী।
মমলার এজাহারে বলা হয়েছে, এজাহারনামীয় ১০ আসামি ও তাদের সহযোগী অজ্ঞাতনামা ৪০০-৫০০ জন পূর্ব পরিকল্পিতভাবে বেপজার মেইন গেটে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু করে। তাদের বোঝানের চেষ্টা করা হলেও শ্রম আইন না মেনে দুপুর সোয়া ১টার দিকে লাঠি সোটা ও ইট পাটকেল নিয়ে বেপজা সিকিউরিটি এবং ভিআইপি কর্তৃপক্ষের স্টাফদের উপর হামলা করে। একপর্যায়ে ভিআইপির ৭ নম্বর প্লান্টের ভেতর থাকা মূল্যবান মালামাল লুট করে যার মূল্য আনুমানিক ৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। এছাড়া মালামাল ও জানালার গ্লাস, দুটি কন্টেইনার ট্রাক, বেপজা সিকিউরিটি রুমে ভাংচুর করে। এতে সর্ব মোট ৫০ লাখ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
মোংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কেএম আজিজুল ইসলাম বলেন, ১০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪-৫‘শ জনকে আসামী করে ভিআইপি কোম্পানির পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে। এজাহার নামী ১০ আসামীকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
মোংলা ইপিজেডে থাকা ভারতীয় মালিকানাধীন ভিআইপি ভিআইপি লাগেজ ফ্যাক্টরীর ১ হাজার ৭৭৭ জন শ্রমিকদের ১ মাসের অগ্রিম বেতন ও বোনাস দিয়ে সোমবার সকাল সাড়ে ৯ টা থেকে ছাঁটাই কার্যক্রম শুরু করে। এর পেক্ষিতে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে আন্দোলন শুরু করে। এক পর্যায়ে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শ্রমিকদের সাথে পুলিশ, আনসার ও বেপজা নিরাপত্তাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এতে ৩০ শ্রমিক আহত হয়।

Leave a Reply