তালতলীতে অবাধে রেনু পোনা নিধনের মহোৎসব, প্রশাসন নিরব

নাঈম ইসলাম, বিশেষ প্রতিনিধিঃ বরগুনার তালতলীতে নৌ পুলিশ ও মৎস্য বিভাগের যোগসাজসে পায়রা নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট চলছে চিংড়ির রেণু পোনা নিধনের মহোৎসব। এর ফলে গড়ে প্রতিদিন ধ্বংস হচ্ছে দেশীয় প্রজাতির লাখ লাখ মাছের পোনা। মৎস্য বিভাগ এসব নদ-নদীর রেনু পোনা আহরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ হওয়া সত্বেও তা বন্ধে নিচ্ছে না কোন কার্যকরী পদক্ষেপ। সরেজমিনে দেখা যায়, তালতলী উপজেলার তেতুলবাড়িয়া, ফকিরহাট, নিশানবাড়িয়া, পচাকোড়ালীয়া ও ছোটবগী এলাকায় প্রতিদিন কয়েক শত নারী-পুরুষ ও শিশুরা মশারি জালের মাধ্যমে বাগদা চিংড়ির রেনু শিকার করছে। বিশেষ এক ধরনের সাদা চামচের পাত্র থেকে বাগদা রেণু বাছাই করে অন্য পাত্রে মজুদ করছে। এক একটি রেণু পোনা মহাজনের কাছে বিক্রি হয় ২ থেকে ৩ টাকায়, মহাজন বিক্রি করছেন ৬ থেকে ১০ টাকায় এ পেশায় অনেকটা লাভজনক হওয়ায় জেলে পরিবারের নারী-পুরুষ ও শিশুরা ঝুকে পরছেন এ পেশায়। রেনু পোনা শিকারি মজিদ বলেন, সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত রেণু সংগ্রহ করলে প্রতিদিন জন প্রতি ৮শ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত উপার্জন করা যায়। শিশু বাগদা শিকারি তানিম বলেন, শুনছি, রেনু পোনা ধরা নিষেধ, কিন্তু কেউ কোন দিন আমগোরে বাধা দেয় নাই। বেশি লাভ হওয়ায় সারা দিন নদীতেই পইড়া থাকি। স্থানীয় সাংবাদিক শাহাদাৎ হোসেন বলেন, স্থানীয় সাংবাদিক সংগঠন তালতলী প্রেসক্লাবসহ বিভিন্ন সাংবাদিকদের প্রতিমাসে মাশোহারা দিয়ে এ অবৈধ ব্যবসা টিকিয়ে রাখছেন অবৈধ ব্যবসায়ীরা। তালতলী উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে গভীর রাতে মিনিট্রাক, ট্রলারযোগে রেনু পোনাগুলো বরিশালে নিয়ে যান আড়ৎদার। সেখান থেকে খুলনা, বাগেরহাট, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হয়। পায়রা নদী সহ উপজেলার তিন শতাধিক পয়েন্টে প্রায় ২০ হাজার জেলে প্রতিদিন এই রেনু আহরণ করছেন। পাশাপাশি লাখ লাখ অন্য মাছের রেনু ও ডিম নিধন করছেন। তেঁতুলবেড়িয়া এলাকার অবৈধ রেনু পোনা ব্যবসায়ী মোঃ বশির, ফকিরহাট বাজারের মোঃ খালেক হাওলাদার বাজার সভাপতি,ছগির খলিফা,সালাম হাওলাদার,মজিবর ফরাজি, মোঃরিপন ফকির,আরিফ শিকদার,জালাল খা,বাদল হাওলাদার, নাসির সিকদার,জসিম খা বলেন, বাগদা চিংড়ি আহরণ নিষিদ্ধ হলেও জেলেরা শিকার করে বলে আমরা কিনে রাখি। অবৈধ হলেও কি আর করুম। তাছাড়া নৌ-পুলিশ ও মৎস বিভাগ থানা পুলিশ সব জানে। এ বিষয়ে নিদ্রার নৌ- ফাড়ির ইনচার্জ আশরাফুল আলম বলেন,তবে রেনু পোনার বিষয় আমি এখনো জানিনা তবে কালবেলার সাংবাদিকের কাছে শুনেছি খোজ খবর নিয়ে আমি দেখবো। এবিষয় তালতলী উপজেলা মৎস কর্মকর্তা ভিক্টর বাইন বলেন,আমাদের অভিযান চলমান এরমধ্যে তিনটি অভিযান দেওয়া হয়েছে এক লক্ষ রেনু পোনা আটক করেছি পরে নদীর মোহনায় অবমুক্ত করেছি আশা করি আমাদের এই অভিযান চলমান থাকবে আমরা অবশ্যই বন্ধ করতে পারবো। তালতলী থানার (ওসি) শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন,রেনু পোনা আমার নজরে পড়েনি যদি আমার নজরে পড়ে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তালতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন,রেনু পোনা পুরোপরি অবৈধ আমরা কিছুদিন আগে মোবাইল কোড পরিচালনা করেছি যাদের পেয়েছি জেল দিয়েছি জরিমানা করেছি এবং মালামাল জব্দ করা হয়। প্রশাসন শক্ত ভুমিকায় আছে আপনারা মৎস্য ডিপার্টমেন্টেকে জানাবেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *