ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
কখন আসবে গাড়ি, তারপর থামবে। গাড়ির চালক ও যাত্রীর হাতে এক প্যাকেট ইফতার তুলে দিতে পারলেই পরম স্বস্তি।
এভাবেই ময়মনসিংহ নগরীর ৭নং ওয়ার্ডের সড়কের অংশে রোজাদার যাত্রীদের জন্য অপেক্ষায় ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ৭নং ওয়ার্ড থেকে বার-বার নির্বাচিত কাউন্সিলর ও সদ্য সাবেক প্যানেল মেয়র আসিফ হোসেন ডন।
তার নেতৃত্বে ও ব্যবস্থাপনায় রমাজান মাস এলেই পথচারী ও দরিদ্র রিকশা চালকদের জন্য মাসব্যাপী ইফতারের এমন ব্যতিক্রমী আয়োজন শুধু এ বছরই নয়, কাউন্সিলর হওয়ার আগে থেকেই তার এ প্রয়াস।
নিয়মিতই প্রতি রোজায় সড়কের রোজাদারদের জন্য থাকছে তার এ আয়োজন। চলতি বছর যোগ হয়েছে ইফতারের পর আরো ব্যতিক্রমী আয়োজন। তার কার্যালয়ের সামনে করা হয়েছে এ আয়োজন। যে কেউ ইচ্ছে করলেই এখানে এসে তার এই কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন। বিনামূল্যে করা যাবে চা-নাস্তা। কাউন্সিলরের ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রতিদিন ৫ শতাধিক রোজাদারের জন্য তৈরি করা হয় ইফতার।
রোজায় প্রতিদিন ব্রীজ-টাউনহল সড়কের জিরো পয়েন্টের এক পাশে রোজাদারদের জন্য অপেক্ষা করেন জনবান্ধব এই কাউন্সিলরের স্বেচ্ছাসেবক টিম। সড়কে চলাচলরত বিভিন্ন গাড়ির চালক ও যাত্রীদের গাড়ি থামিয়ে প্রত্যেকের হাতে তুলে দেওয়া হয় ইফতার।
প্রতিদিন এখানেই বিতরণ হয় তিন শতাধিক প্যাকেট ইফতার। বাকি ইফতারের প্যাকেটগুলো বিতরণ হয় বিভিন্ন মসজিদ, এতিমখানা ও এলাকার অসহায়- গরিবদের মধ্যে। আসিফ হোসেন ডন জানান, প্রথম রোজা থেকে শুরু হয়ে ইফতারের এ আয়োজন প্রতিবছরের মতো শেষ রোজা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
জানা যায়, বিকেল থেকেই ব্রীজ-টাউনহল অংশের সড়কে ইফতারের ব্যাগ নিয়ে রোজাদারদের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে আছেন কাউন্সিলরসহ তার স্বেচ্ছাসেবক টিম। বিভিন্ন গাড়ির চালক ও পথচারী ও যাত্রীদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে নানা পদের ইফতারির প্যাকেট ও পানির বোতল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর আসিফ হোসেন ডন জানান, রোজাদারদের ইফতার করানো সওয়াবের কাজ। সেই চিন্তা থেকেই ব্যক্তিগত উদ্যোগে এ ক্ষুদ্র আয়োজন। আমি চাই আমার এ আয়োজন দেখে সারাদেশে এমন আরও আয়োজন হোক। গাড়িতে চলাচলরত রোজাদারদের জন্য এক প্যাকেট ইফতার অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তিনি বলেন, আমার ব্যক্তিগত কার্যালয়ের পাশেই ব্রীজ-টাউন হল সড়ক। প্রতিদিন এ পথে অসংখ্য যানবাহন ও পথচারী চলাচল করে থাকে। সড়কে রোজাদার গাড়িচালক ও পথচারীরা ইফতার করতে অসুবিধায় পড়েন। তাদের কথা চিন্তা করে বিগত কয়েক বছর ধরে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ইফতারের আয়োজন করে আসছি।যে কেউ চাইলে আমার কার্যালয়ের সামনে বসে ইফতার করতে পারবে। যারা নিতে চায় তাদের দেওয়া হচ্ছে প্যাকেট।
তিনি বলেন, সমাজের সব বিত্তবানরা যদি নিজ নিজ অবস্থান থেকে সামর্থ্য অনুযায়ী এগিয়ে আসেন তাহলে কোনো রোজাদার ইফতারের সময় অভুক্ত থাকবে না।
স্থানীয়রা জানান, কাউন্সিলর হওয়ার আগ থেকেই গত কয়েক বছর ধরে তিনি সড়কে যাতায়াতকারী রোজাদারদের ইফতার করিয়ে থাকেন। এছাড়া সিটি এলাকার কর্মহীন মানুষদের সাধ্যমত সহযোগিতা করে যাচ্ছেন তিনি। শহরের সবকটি মসজিদের সামনে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করার জন্য পানির ট্যাংকের ব্যবস্থাও করেছেন তিনি।
ইফতার বিতরণের দায়িত্বে থাকা স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, কাউন্সিলর আসিফ হোসেন ডন ভাইয়ের অর্থায়নে প্রতিদিন রোজাদার গাড়িচালক ও পথচারীদের মধ্যে ইফতারি বিতরণ করা হয়। সড়কে যাতায়াতকারীরা তার এ ইফতার পেয়ে অনেক উপকৃত হচ্ছেন।
সড়কের এক অটোচালক বলেন, সড়কের পাশে বেশিরভাগ মানুষ ব্যবসায় মগ্ন থাকে। এক গ্লাস পানিও বিনামূল্যে পাওয়া যায় না। সেখানে ভিন্ন চিত্র ময়মনসিংহের জিরো পয়েন্ট ও বুড়া পীড়ের মাজার সংলগ্ন এ জায়গার। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে এখানে রোজাদারদের ইফতার করানো হয়। এমন উদ্যোগের জন্য তিনি কাউন্সিলরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

Leave a Reply