ইউএনও’র প্রচেষ্টায় সাবলীলভাবে বাংলা পড়ায় শিক্ষার্থীদের সাফল্য

ষ্টাফ রিপোর্টারঃ
ময়মনসিংহে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম এর মেধা ও গৃহীত পরিকল্পনায় সাবলীলভাবে মাতৃভাষা বাংলা শুদ্ধ ভাবে লিখতে ও পড়তে সক্ষম হয়েছে সদর উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার মানোন্নয়ন ও মেধাবী জাতি গঠনে ইউএনও’র কর্মপরিকল্পনার অংশ হিসাবে নেওয়া এমন উদ্যোগের সুফল বইছে উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে।

এর আগে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘুরে-ফিরে শিক্ষার মানোন্নয়নে পরিদর্শন করে সেখানে তিনি নিজে শিক্ষক হিসাবে ক্লাশ নিতেন। যেখানে তিনি বুঝতে পারেন শিশুরা বাংলা ভাষাতে ঝিমিয়ে আছে। অথচ
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে প্রতি দুই বছর অন্তর একটি মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে, যেখানে দেখা হয় শিশুরা প্রাথমিক শিক্ষা পর্যায়ে বাংলা ও গণিত বিষয়ে কী শিখছে। যা শিখছে, তা কতটা দক্ষতার সঙ্গে শিখছে। তাই তিনি প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের এই পদক্ষেপ বাস্তবায়নে উদ্যোগ নিয়ে কাজ শুরু করেন। বর্তমানে এসব বিদ্যালয়গুলো সাবলীলভাবে মাতৃভাষা বাংলা শুদ্ধ ভাবে লিখতে ও পড়তে সক্ষম হয়েছে বলে জানান বয়ড়া সালাকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক বিলকিস আক্তার রুমা।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান-২০১৫ সালের মূল্যায়নে দেখা যায় যে বাংলা বিষয়ে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ৩৫ শতাংশ এবং পঞ্চম শ্রেণির ৭৭ শতাংশ শিক্ষার্থী নির্ধারিত দক্ষতার চেয়ে পিছিয়ে আছে। আর গণিত বিষয়ে তৃতীয় শ্রেণির ৫৯ শতাংশ এবং পঞ্চম শ্রেণির ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী নির্ধারিত দক্ষতার চেয়ে পিছিয়ে আছে। ফলে দেখা যাচ্ছে যে আমাদের প্রাথমিক শিক্ষায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের একটি বিরাট অংশ বাংলা ও গণিত বিষয়ে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় দক্ষতা অর্জন করতে পারছে না।

কিন্তু গত বছরও আমাদের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় ৯৫ শতাংশ পাসের হার ছিল। অর্থাৎ শিক্ষার্থীরা কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় দক্ষ না হয়েও পরীক্ষায় পাস করে যাচ্ছে। ভালো ফলের পাশাপাশি তারা যেন ভাষা শিক্ষায় দক্ষতা অর্জন করতে পারে, সে বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ প্রয়োজন ছিলো বলেই আমি এমন উদ্যোগ নিয়েছি।

তিনি বলেন-বর্তমানে যেভাবে আমাদের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হচ্ছে, সেটি তাদের মুখস্থের প্রবণতার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের মূল্যায়নের পদ্ধতিকে বিদ্যালয়ভিত্তিক করতে হবে।

পঠনদক্ষতা হচ্ছে মৌলিক দক্ষতা, যা প্রতিটি শিক্ষার্থীর থাকা উচিত। প্রাথমিক পর্যায়ে শিশুদের শেখার দক্ষতা বৃদ্ধি করতে হলে বাংলায় পড়তে পারার দক্ষতা বাড়াতে হবে। আর এটি করতে হলে আমাদের প্রাথমিক শিক্ষার পাঠ্যক্রম নিয়ে নতুন করে ভাবতে হবে বলে তিনি মনে করেন।

এদিকে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ইউএনও’র প্রচেষ্টায় সাবলীলভাবে বাংলা পড়ায় শিক্ষার্থীদের সাফল্যে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন অভিভাবকগণ।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *