নাজিম উদ্দিন রানাঃ লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষে প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে লক্ষ্মীপুরের ৪টি আসনে জামানত হারিয়েছেন যে ২৪জন প্রার্থী। জেলায় এ নির্বাচনে ৩১জন প্রার্থী প্রতিদ্ধন্ধিতা করেন। এরমধ্যে লক্ষ্মীপুর-১ আসনে ৬জন প্রার্থীর মধ্যে ৪জন, লক্ষ্মীপুর-২ আসনে ১৩জন প্রার্থীর মধ্যে ১২জন, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে ৬জন প্রার্থীর মধ্যে ৪জন এবং লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে ৬জন প্রার্থীর মধ্যে ৪জন প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।
নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, নির্বাচনে কোনো আসনে প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগ ভোট কোনো প্রার্থী যদি না পান, তাহলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।
লক্ষ্মীপুর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে ঘোষিত ফলাফল বিশ্লেষণ করে জানা যায়, লক্ষ্মীপুর-১ আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আনোয়ার হোসেন খান পেয়েছেন ৪০হাজার ৯৪ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্ধন্ধি বাংলাদেশ যুব লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য (স্বতন্ত্র) হাবিবুর রহমান পবন পেয়েছেন ১৮হাজার ১৫৬ ভোট।
এ আসনে জামানত হারিয়েছেন এমএ গোফরান (স্বতন্ত্র) ৩৪০ভোট, নিয়াজ মাখদুম ফারুকী (বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট) ৪১০ভোট, মোশারফ হোসেন (ন্যাশনাল পিপলস পার্টি) ২৭৬ ভোট এবং মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান মাহমুদ (জাতীয় পার্টি) ৭৬৭ভোট পেয়েছেন।
লক্ষ্মীপুর-২ আসনে নৌকা মার্কায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন ১ লাখ ৩০ হাজার ২১১ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। এ আসনেই তার স্ত্রী লুবনা পেয়েছেন ৩৪৫ ভোট। নয়নের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ঈগল প্রতীকের সেলিনা ইসলাম জামানত হারিয়েছেন। তিনি ৯ হাজার ২৮ ভোট পেয়েছেন। অন্য ১০ প্রার্থীর মধ্যে তৃণমূল বিএনপির আবদুল্লাহ আল মাসুদ ৩২০ ভোট, ট্রাক প্রতীকের এএফ জসিম উদ্দিন আহমেদ ৯০৩ ভোট, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির জহির হোসেন ৩৫২ ভোট, জাতীয় পার্টির বোরহান উদ্দিন আহমেদ মিঠু ২ হাজার ৩৮৬ ভোট, মশাল প্রতীকের আমির হোসেন ২৩৯ ভোট, ছড়ি প্রতীকের ইমাম উদ্দিন সুমন ৭১ ভোট, হাতঘড়ি প্রতীকের ফরহাদ মিয়া ৩২৮ ভোট, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনসুর রহমান দাদন গাজী ৮৮ ভোট, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশের মোরশেদ আলম ৫৪৫ ভোট ও বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের শরীফুল ইসলাম ৬০১ ভোট পেয়েছেন। এর মধ্যে ভোটের একদিন আগে বাংলাদেশ কংগ্রেসের মনসুর ও ছড়ি প্রতীকের সুমন নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। লুবনাসহ এ আসনে ১২ প্রার্থীই জামানত হারিয়েছেন।
লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে নৌকা প্রতীকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ গোলাম ফারুক ৫২হাজার ২৯৩ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্ধিন্ধি মোহাম্মদপুর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি (স্বতন্ত্র) এম এ সাত্তার পেয়েছেন ৩৫হাজার ৬২৮ভোট।
এ আসনে জামানত হারিয়েছে মুহাম্মদ রাকিব হোসেন (জাতীয় পার্টি) ৪৭৩ভোট, মোহাম্মদ আব্দুর রহিম (বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি) ৩৮২ ভোট, মোহাম্মদ নাঈম হাসান (তৃণমূল বিএনপি) ২৮৯ভোট, মোহাম্মদ মাহবুবুল করিম টিপু (বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি) ১১৫ভোট। এ আসনে ভোটের একদিন আগে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ রাকিব হোসেন।
লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীকে নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল্লাহ ৪৬ হাজার ৩৭২ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এ আসনে ভোট করে তার স্ত্রী মাহমুদা বেগম ৩৫৫ ভোট পেয়েছেন। আবদুল্লাহর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ ইনু) সহসভাপতি মোশারফ হোসেন পেয়েছেন ৩৩ হাজার ৮১০ ভোট। আসনটির অন্য ৩ প্রার্থীর মধ্যে ট্রাক প্রতীকের ইস্কান্দার মির্জা শামীম ৭ হাজার ৪৭৪ ভোট, রকেট প্রতীকের আবদুস সাত্তার পালোয়ান ৬৪৯ ভোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির মোহাম্মাদ ছোলায়মান ৩২০ ভোট পেয়েছেন। মাহমুদাসহ এ আসনে ৪ জন প্রার্থী জামানত হারিয়েছেন।
জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শফিকুর রহমান বলেন, বিধি অনুযায়ী প্রদত্ত ভোটের ৮ ভাগের এক ভাগ ভোট কম পেলে জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। যারা কম ভোট পেয়েছেন তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সুরাইয়া জাহান বলেন, জামানত বাজেয়াপ্ত নিয়ে এখনো কাজ শুরু করিনি। তবে যারা পর্যাপ্ত ভোট পাননি, নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী তাদের জামানত বাজেয়াপ্ত করা হবে।

Leave a Reply