রাজশাহী-১ চেনা পথে থাকতে চাই ভোটারগণ

আলিফ হোসেন,তানোরঃ
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-১ (তানোর-গোদাগাড়ী) ভিআইপি এই সংসদীয় আসনে প্রার্থীদের গণসংযোগ ও প্রচার-প্রচারণা জমে উঠেছে। প্রতিদিন কাক ডাকা ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রার্থীরা ভোট প্রার্থনা করে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে, চায়ের কাপেও ঝড় উঠেছে। এলাকার কর্মী-সমর্থক ও সাধারণ ভোটারগণ নিজ নিজ পচ্ছন্দের প্রার্থীর পারিবারিক ঐতিহ্য, সামাজিক মর্যাদা, আর্থিক স্বচ্ছলতা ও রাজনৈতিক দুরদর্শিতা ইত্যাদি যোগ্যতা তুলে ধরে আলোচনায় মুখর।এদিকে আলোচনায় আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী নৌকা প্রতিক নিয়ে অন্যদের থেকে যোজন যোজন দুরুত্বে এগিয়ে রয়েছেন।
অভিজ্ঞ মহলের অভিমত ফারুক চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত, পরীক্ষিত ও আদর্শিক নেতৃত্ব এবং চেনা পথ। এখানে ফারুক চৌধুরী দীর্ঘ প্রায় আড়াই দশক ধরে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। রাজনীতি থেকে শুরু করে সরকারের অলিগলি সব পথ তারা চেনা। মানুষ চেনা পথের সঙ্গে থাকতে চাই। আর উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত থেকে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে চেনা পথের কোনো বিকল্প নাই। ফলে মানুষ নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত করার মতো ঝুঁকি নিবেন না। কারণ সরকার দলীয় প্রার্থী ব্যতিত এলাকার উন্নয়ন হবে না। যার জ্বলন্ত উদাহরণ রাজশাহী সিটি কর্পোরেসন। নৌকার বিপক্ষে ভোট দিয়ে কিভাবে উন্নয়ন বঞ্চিত হয়েছিল। আবার
নতুন নেতৃত্ব নির্বাচিত হলে তার পথ ঘাট অলিগলি চিনতেই ৫ বছর পেরিয়ে যাবে। তাহলে এলাকার উন্নয়ন হবে কি ভাবে ? এছাড়াও এই আসন দুর্গম ও প্রত্যন্ত পল্লী বেষ্টিত আয়তনের দিক দিয়ে দেশের অস্টম বড় এলাকা। অধিকাংশক্ষেত্রে তানোরে দুএক জন প্রার্থীর কিছু সমর্থক বা ভোটার থাকলেও গোদাগাড়ীতে তেমন উল্লেখ করার মতো সমর্থক বা ভোটার নেই। এমনকি গোদাগাড়ীর অনেক এলাকার মানুষ তাদের কখানো চোখে দেখেননি বা চেনেন না। অনেকের পক্ষে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে এজেন্ট দেবার মতো সক্ষমতা নাই। একজন প্রার্থীর জামানত ফেরত পেতে গেলেও প্রায় ৫০ হাজার ভোট প্রয়োজন। তাছাড়া গোদাগাড়ীর প্রতিটি গ্রামে গণসংযোগ বা পরিচিতি হতে গেলেও একজন ব্যক্তির ৫ বছর পেরিয়ে যাবে।
অন্যদিকে দীর্ঘ প্রায় আড়াই দশকে ফারুক চৌধুরী এই আসনের প্রতিটি পাড়া-মহল্লায় গিয়েছেন। প্রতিটি বাড়ির মানুষ তাকে চেনেন জানেন। দলমত নির্বিশেষে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের মাঝে পরিচ্ছন্ন রাজনৈতিক নেতৃত্ব হিসেবে ফারুক চৌধুরীর আলাদা পরিচয় রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এমপি ফারুক চৌধুরী এবার দিয়ে একটানা ৬ বার দলীয় মনোনয়ন পেয়ে একটানা তিনবার সাংসদ নির্বচিত হয়েছেন এবং একবার শিল্প প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে দাযিত্ব পালন করেছেন। তার দীর্ঘ প্রায় আড়াই দশকের রাজনৈতিক জীবনে তিনি হয় তো সবার উপকার করতে পারেন নি, এটা যেমন সত্য, ঠিক তেমনি সত্য তার দ্বারা কোনো মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। তিনি করো জমিদখল করেননি, কারো নামে মিথ্যা মামলা করননি, অফিস পাড়ায় কোনো দালাল রাখেননি, নাই স্বজনপ্রীতি তবে আদর্শচ্যুত একশ্রেণীর রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে তার মতবিরোধ রয়েছে যেটা
রাজনৈতিক মতবিরোধ যার সঙ্গে ভোটার ও সাধারণ মানুষের কোনো সম্পৃক্ততা নাই।
স্থানীয় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল এবারের নির্বাচনে ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে অন্যদের তুলনা করতেই নারাজ। কারণ হিসেবে বলছে, এমপি ফারুক চৌধুরী তার দীর্ঘ প্রায় দুই দশকের রাজনৈতিক জীবনে তানোর-গোদাগাড়ী থেকে তিনি প্রতিদিন যদি ৫ জন করে মানুষের উপকার করে থাকেন, তাহলে ৩৬৫ দিনে ১৮২৫ জন এবং ২০ বছরে ৩৬ হাজার ৫০০ জন মানুষের সরাসরি উপকার করেছেন।
তাহলে উপকারভোগী এই মানুষগুলো তো এখানো এমপির পক্ষে মাঠে আছে। এছাড়াও এই আসনের দুটি উপজেলা, ৪টি পৌরসভা এবং ১৬টি ইউনিয়নের (ইউপি) আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের প্রতিটি ওয়ার্ডের সাংগঠনিক নেতাকর্মী ফারুক চৌধুরীর সঙ্গে রয়েছেন।
রাজশাহী-১ আসনে আওয়ামী লীগের ওমর ফারুক চৌধুরী (নৌকা), বিএনএমের শামসুজ্জোহা (নোঙর), বিএনএফের আল-সাআদ (টেলিভিশন), তৃণমূল বিএনপির জামাল খান দুদু (সোনালী আঁশ), এনপিপির নুরুন্নেসা (আম), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের বশির আহমেদ (ছড়ি), জাতীয় পার্টির শামসুদ্দীন (লাঙল), মাহিয়া মাহি (ট্রাক), গোলাম রাব্বানী (কাঁচি) ও আয়েশা আক্তার জাহান ডালিয়া (বেলুন) প্রতীক নিয়ে প্রতিদন্দীতা করছেন।
রাজশাহী-১ আসনে ৪টি পৌরসভা ও ১৬ টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। এই আসনে ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৪০ হাজার ২১৮ জন। দুই উপজেলা মিলে ভোটকেন্দ্র ১৫৮টি। ভোটকেন্দ্রের কক্ষের সংখ্যা ৯৯৪ টি। অস্থায়ী ভোট কক্ষের ৫১ টি। নতুন ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১৩ টি। এআসনে পুরুষ ভোটার ২ লাখ ১৯ হাজার ৬৫৩ জন, নারী ভোটার ২ লাখ ২০ হাজার ৫৬৪ জন। একজন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *