গোদাগাড়ীতে কাকডাকা ভোরে খেজুরের রস নিয়ে ছুটছেন এক গাছি

রাজশাহী থেকে মোঃ হায়দার আলীঃ শীতকালের হাড় কাঁপানো ঠাণ্ডার মধ্যে কাঁচা খেজুরের রস খেতে পছন্দ করেন না এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না। । কেউ আবার এ রসকে প্রক্রিয়াজাত করে পিঠা-পুলি, পায়েস, গুড় তৈরি করে খেয়ে থাকেন। আদিবাসীরা এ রস মাতিয়ে নেশা করে থাকেন। সারা বছর খেজুরের রস সংগ্রহ করা যায়। তবে শীতকালের খেজুরের রসই বেশি সুস্বাদু। শীত কমার সঙ্গে সঙ্গে রসের পরিমাণ ও মানও কমতে থাকে।

খেজুরের রস প্রচুর খনিজ ও পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ। বাংলাদেশে যে খেজুর হয় তাতে যথেষ্ট শাঁস থাকে না বলে অনেকেই এটা খেতে খুব একটা পছন্দ করেন না। তাই খেজুরের রসই আসল আকর্ষণ। খেজুরের রস থেকে তৈরি গুড় অনিদ্রা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। খেজুরের গুড়ে আয়রন বা লৌহ বেশি থাকে এবং হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায়তা করে। শারীরিক দুর্বলতা কাটিয়ে কর্মস্পৃহা ফিরিয়ে আনতে খেজুরের রস দারুণ উপকারী।

এসব কারনে অন্যান্য এলাকার মতো রাজশাহী গোদাগাড়ীতে এক গাছি কাক ডাকা ভোরে ( সকালে) কলসিতে খেজুরের রস সংগ্রহ করে উপজেলার গোলাইয়ের মেঠো পথ ধরে ছুটে চলেছেন বিক্রির আশায়, প্রতিদিন সর বিক্রি করে তাকে সংসার খরচ যোগাতে হয়। তার মত অনেকেই এ কাজটি করে থেকেন।

গোদাগাড়ীতে খেজুর গাছের সংখ্যা দিন দিন কমছে, ইটভাটার মালিকগন কিনে নিয়ে গিয়ে ইট পুড়াচ্ছেন। এ অবস্থা চলতে থাকলে খেজুর গাছ শূন্য হয়ে যাবে শিশু কিশোরদের নিকট খেজুরের সর রুপকথার গল্পের মতো হয়ে যাবে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার (প্রেমতলী) ডা. রাশেদুল হাসান শাওন বলেন, খেজুরের রস প্রচুর খনিজ ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ। এতে ১৫-২০% দ্রবীভূত শর্করা থাকে, যা থেকে গুড় ও সিরাপ উৎপাদন করা হয়। খেজুরের গুড় আখের গুড় থেকেও বেশি মিষ্টি, পুষ্টিকর ও সুস্বাদু। ঘ্রাণ ও স্বাদের জন্য এ গুড়ের রয়েছে বিশেষ চাহিদা। খেজুরের গুড়ে আখের গুড়ের চেয়ে বেশি প্রোটিন, ফ্যাট ও মিনারেল রয়েছে। সকালের নাশতায় খেজুর রসের সিরাপ দিয়ে রুটি খেলেই বেশি তৃপ্তি পাওয়া সম্ভব।

উপজেলা কৃষি অফিসার মরিয়ম আহমেদ বলেন, আমরা গোদাগাড়ী এলাকায় হাজার হাজার তাল ও খেজুর গাছ রোপন করেছি, কিছু গাছি খেজুরের সর সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে থাকেন, ফলে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। মানুষ এ রসকে প্রক্রিয়াজাত করে পিঠা-পুলি, পায়েস, গুড় তৈরি করে খেয়ে থাকেন, কেউ গুড়ও করে থাকেন, দিন দিন খেজুরের রসের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

মোঃ হায়দার আলী
রাজশাহী।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *