মান্দা-৪ আসনে নৌকার পালে ঈগলের থাবা

আলিফ হোসেন,তানোরঃ
রাজশাহীর তানোরের সীমান্তবর্তী নওগাঁর মান্দা-৪ আসনে এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকাডুবির আশঙ্কায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা শঙ্কিত বলে গুঞ্জন বইছে, জনমনেও দেখা দিয়েছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া। এবারের নির্বাচনে জয়-পরাজয়ে সাবেক মন্ত্রী ও সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক মেইন ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছে বলে মনে করছে তৃণমুল। কারণ হিসেবে তারা বলছে, মান্দায় বর্ষীয়ান রাজনৈতিক নেতা সাংসদ ইমাজ উদ্দিনের একটা নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে। ফলে এখানো ইমাজ উদ্দিন সাধারণ মানুষের কাছে পচ্ছন্দের শীর্ষে রয়েছেন। কিন্ত্ত কোনো কারণে তার বিজয় নিয়ে শঙ্কা দেখা দিলে সে গামাকে সমর্থন দিবেন বলে ভোটারগণ মনে করছে। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন নিয়ে সাংসদ ইমাজ উদ্দিন ও নাহিদ মোর্শেদ বাবুর মধ্যে মতবিরোধ নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে এসব ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার সুত্রপাত হয়েছে।
জানা গেছে, নওগাঁ-৪৯ মান্দা-৪ সংসদীয় আসনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে
ভোটযুদ্ধে নেমে আলোচনায় রয়েছেন ৩ জন হেভিওয়েট প্রার্থী। তারা হলেন এ্যাডঃ নাহিদ মোর্শেদ বাবু (নৌকা), সাংসদ ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক (ঈগল) ও ব্রহানী সুলতান মাহামুদ গামা(ট্রাক) প্রতিক নিয়ে প্রতিদন্দীতা করছেন। এবার আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক এ্যাডভোকেট নাহিদ মোরশেদ বাবু। কিন্ত্ত এ্যাডভোকেট নাহিদ মোরশেদ বাবুকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছেন দলের হেভিওয়েট দুজন স্বতন্ত্র প্রার্থী। তাঁরা হলেন বতর্মান সাংসদ ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক এবং নওগাঁ জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্রুহানী সুলতান মাহামুদ গামা। দুজনই শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে লড়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে মাঠ কাঁপাচ্ছেন।
ইতিমধ্যে সাধারণ জনগণ এবং ভোটারদের নজর কেড়েছেন ব্রুহানী সুলতান মাহামুদ গামা ও ইমাজ উদ্দিন।
স্থানীয়রা জানান, বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইমাজ উদ্দিন প্রামানিকের বিরুদ্ধে মাঠে তেমন শক্ত কোনো প্রতিদন্দী প্রার্থী ছিলো না। ফলে সহজ জয় পেয়েছিলেন তিনি। কিন্ত্ত এবার নৌকার প্রার্থীকে জয় পেতে হলে কঠিন পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে।
বিশেষ করে দলের হেভিওয়েট কর্মী ও জনবান্ধব দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীকে সামাল দেওয়া কঠিন হবে নৌকার মনোয়ন প্রার্থী এ্যাডঃ নাহিদ মোরশেদ বাবুর । কারণ, মান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের একাংশের নেতা ও কর্মী-সমর্থকগণ স্বতন্ত্র দুই প্রার্থীর পক্ষে রয়েছেন।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের অভিমত,
এখানে সাংসদ ইমাজ উদ্দিনের একটা নিজস্ব বড় ভোট ব্যাংক রয়েছে। এদিকে মনোনয়ন নিয়ে ইমাজ উদ্দিন ও নাহিদ মোর্শেদ বাবুর মাঝে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। ফলে ইমাজ উদ্দিন নিজে বিজয়ী হতে না পারলে তিনিও চাইবেন না নাহিদ বিজয়ী হোক। কোনো কারণে ইমাজ উদ্দিন বিজয়ী হতে পারছেন না এটা বুঝতে পারলে। তিনি নিজের আধিপত্য ধরে রাখতে ও নাহিদের বিজয় ঠেকাতে গামাকে সমর্থন করবেন। এমন হলে গামার বিজয় প্রায় নিশ্চিত।
এবিষয়ে ব্রুহানী সুলতানা মাহামুদ গামা বলেছেন, শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী যুদ্ধে লড়ে যাবেন তিনি, মান্দা উপজেলাকে মাদকমুক্ত দেখতে চান মান্দা উপজেলার সাধাারণ মানুষ। শিক্ষা ও যোগাযোগ ব্যবস্থারও পরিবর্তন চান মানুষ। সঠিক নেতৃত্ব না থাকার কারণে সৃষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় লোকজনও উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না। এলাকায় পরিবেশ-পরিস্থিতিও খারাপের দিকে যাচ্ছে। এসব পরিস্থিতি বিবেচনা করে জনগণের প্রত্যশা পুরুণে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। এছাড়া ভোটাররাও তাঁর পক্ষে আছেন বলে জানান তিনি। এবিষয়ে এ্যাডঃ নাহিদ মোরশেদ বাবু বলেন, মান্দা উপজেলার জনগন নৌকাকে ভোট দিয়ে অবশ্যই তাকে জয়যুক্ত করবে। এবিষয়ে সাংসদ ইমাজ উদ্দিন প্রামানিক জানান, মান্দায় তিনি যে পরিমাণ উন্নয়ন কাজ করেছেন তাতে মান্দাবাসী তাকে ভুলবেন না তাকে আবারো ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।
এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের একটা বড় অংশ গামার (ট্রাক) পক্ষে প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগ শুরু করেছেন। পরিচ্ছন্ন ব্যক্তি ইমেজ, আদর্শিক-পরীক্ষিত, ত্যাগী-নিবেদিতপ্রাণ, কর্মী-জনবান্ধব রাজনৈতিক নেতা হিসেবে গামা দলমত নির্বিশেষে সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের মাঝে সমান জনপ্রিয় বলে মনে করছেন তৃণমূল।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *