September 8, 2024, 2:40 am

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
মধুপুর পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সভা অনুষ্ঠিত পীরগঞ্জে সাংবাদিক কাজী নুরুলের স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল র‌্যাব-১২’র অভিযানে ১৮৫০ পিস বুপ্রেনরফিন ইনজেকশনসহ ২ জন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার নেছারাবাদে দুইশত সাতচল্লিশ কেজি হরিনের মাংস উদ্ধার গ্রেফতার-২ জাতীয় সঙ্গীত পরিবর্তন ইস্যুতে রাজশাহীতে যা বললেন ধর্ম উপদেষ্টা দ্বীনের কাজে অর্থ ও সময় দিতে হবে গোদাগাড়ীতে নায়েবে আমীর অধ্যাপক মুজিবুর রহমান আরএমপি’র নতুন পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ানের যোগদান মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের প্রতিবাদে বিএনপির সংবাদ সন্মেলন খাগড়াছড়িতে বিএনপির সম্প্রীতির সমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত কাল‌কি‌নি‌তে অ‌বৈধ‌ ড্রেজা‌রের বিরু‌দ্ধে অ‌ভিযান
নড়াইলে ভোঁদড় দিয়ে মাছ শিকার ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রেখেছে তারা

নড়াইলে ভোঁদড় দিয়ে মাছ শিকার ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রেখেছে তারা

উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে//

নড়াইলে ভোঁদড় দিয়ে মাছ শিকারের প্রায় ৫শ বছরের ঐতিহ্য এখনও টিকে আছে। তবে নদীতে আগের মতো মাছ না পাওয়ায় এখন তা বিলুপ্তির পথে। যারা এ ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রেখেছেন তারা এখন আর ভালো নেই। খেয়ে না খেয়ে কোনোমতে দিন কাটছে তাদের।
মূলত নদীতে মাছের পরিমাণ কমে যাওয়া ও ভোঁদড় লালন-পালনে ব্যাপক খরচের কারণে মাছ শিকারের প্রাচীন এ পদ্ধতিতে থেকে সরে আসছেন জেলেরা। বেশি সংখ্যাক জেলে তাদের ভোঁদড় বিক্রি করে দিয়েছেন। এদিকে জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে নানা উদ্যোগের কথা বললেও ভোঁদড় দিয়ে মাছ শিকারের প্রাচীন পদ্ধতি টিকিয়ে রাখতে তেমন কোনো কার্যক্রম নেই মৎস্য বিভাগের। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান, সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, শত শত বছর আগে থেকে ভোঁদড় দিয়ে মাছ শিকারের প্রচলন আছে নড়াইল সদর উপজেলার গোয়াইলবাড়ি, পংকবিলা ও রতডাঙ্গা গ্রামে। এক সময় এসব অঞ্চলের বিপুল সংখ্যক জেলেরা এ পদ্ধিতে মাছ শিকারের সঙ্গে জড়িত থাকলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা কমতে থাকে। মূলত নদীতে মাছের পরিমাণ কমে যাওয়া ও ভোঁদড় লালন-পালনে ব্যাপক খরচের কারণে মাছ শিকারের প্রাচীন এ পদ্ধতিতে থেকে সরে আসছেন জেলেরা। বেশি সংখ্যাক জেলে তাদের ভোঁদড় বিক্রি করে দিয়েছেন। বর্তমানে শুধু গোয়াইলবাড়ির ২০টি পরিবারার এই পেশায় জড়িত রয়েছেন। তাদের অধীনে ৫টি নৌকায় মাত্র ১৬টি ভোঁদড় আছে। প্রাণীটির প্রধান খাবার মাছ। তবে ব্যাঙ ও ছোট আকৃতির জলজ পোকাও খায়। এদের জীবনকাল ৯-১০বছর।
গোয়াইলবাড়ি গ্রামের জেলে ভবেন বিশ্বাস জানান, তার বাপ-ঠাকুরদা ভোঁদড় দিয়ে মাছ শিকার করত। এখন তিনি এ পদ্ধতিতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। তবে এখন নদীতে যে মাছ পাওয়া যায় তাতে কোনোদিন সংসার চলে, আবার কোনোদিন চলে না। শীত মৌসুমে একটু বেশি মাছ পাওয়া যায়। তখন সংসার চালাতে সমস্যা হয় না। কিন্তু বছরের বাকি সময় ঘাটতি।
তিনি আরও জানান, ভোঁদড়দের প্রতিদিন অন্তত ৩০০ টাকার মাছ কিনে (ক্রয় করে) খাওয়াতে হয়। স্থানীয় বাজারে মাছ না পাওয়া গেলে নড়াইল শহর থেকে মাছ এনে খাওয়াতে হয়। দিনে দুইবার খাবার দেওয়া দরকার হলেও টাকার অভাবে একবারই দেন তিনি।
গোপীনাথ বিশ্বাস নামে আরেক জেলে বলেন, আগে তারা সুন্দরবনে যেতেন মাছ ধরতে। প্রচুর পরিমাণ মাছ পেতেন। এখন সুন্দরবনে যাওয়ার অনুমতি দেয় না। এখানে অল্প কয়ডা মাছ হয়। দাম আছে বলে যাইহোক কিছু আয় করেন। না হয়ত তাদের সংসার চলে না ভালোভাবে।
হৃদয় বিশ্বাস বলেন,পাটা জাল ও চায়না জাল দিয়ে মাছ মারাসহ বিভিন্ন কারণে নদীতে মাছ কমে গেছে। ভোঁদড় দিয়ে বর্তমানে যে মাছ পাওয়া যায় তা বিক্রি করে সংসার চলে না। আয় কম হওয়ায় ভোঁদড়কে পর্যাপ্ত খাওয়াতেও পারেন না। দিন খুব কষ্টে যায়।
নড়াইল সদর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. এনামুল হক,
এ প্রতিবেদক উজ্জ্বল রায়কে জানান, দীর্ঘদিন ধরে ভোঁদড় দিয়ে মাছ ধরা জেলেদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন তারা। মাছ ধরার পাশাপাশি বিকল্প কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে কার্ডধারী জেলেদের দুইটি করে ছাগল ও তাদের জন্য খাদ্য সামগ্রী প্রদান করা হয়েছে। জেলেদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেওয়ার চেষ্টা করছেন বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য অফিসার এইচ.এম. বদরুজ্জামান, এ প্রতিবেদক উজ্জ্বল রায়কে জানান, ভোঁদড় দিয়ে মাছ শিকারের পদ্ধতি টিকিয়ে রাখতে আলাদা তেমন কোনো কার্যক্রম নেই তাদের। বাস্তবতা হচ্ছে মুক্ত জলাশয়ে মাছের পরিমাণ কমে গেছে। এ কারণে জেলেদের বিকল্প কর্মসংস্থানে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করছেন তারা।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD