দোয়ারাবাজারে বিয়ের দাবীতে কথিত সাংবাদিক মুন্নার বাড়িতে পরকিয়া প্রেমিকার অনশন

হারুন অর রশিদ,

দোয়ারাবাজার (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে দীর্ঘ ৫ বছর পরকীয়ার পর বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অনশন শুরু করেছেন এক সন্তানের জননী আছমা বেগম (২৬)। বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর ) সকাল থেকে উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রামের রহমত আলীর পুত্র ও কথিত সাংবাদিক, তিন সন্তানের পিতা এনামুল কবীর মুন্নার বাড়িতে অবস্থান নেন ওই মহিলা । তিনি একই ইউনিয়নের টিলাগাঁও গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী ও লক্ষীপুর ইউনিয়নের চকবাজার গ্রামের আবুল কালামের মেয়ে।

দীর্ঘ ৫ বছর পরকিয়ার পর আছমা বেগম বিয়ের দাবিতে বাড়িতে প্রবেশ করার পর এনামুল কবীর মুন্নার বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়, পরে মুন্নার স্ত্রী ও মা তার উপর চড়াও হয়ে তাকে বেধড়ক মারপিট করে। অবস্থা বেগতিক হলে স্থানীয়রা এসে মহিলাকে এক ঘন্টার মধ্যে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার বাড়ি থেকে সুরমা ইউপি চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ এর ছোট ভাই আব্দুর রশীদের বাজারের বাসায় জিম্মায় নিয়ে আসেন।

জিম্মাদার আব্দুর রশীদ ও স্থানীয় সালিশ ব্যক্তিত্ব আব্দুল কুদ্দুস (মামুন শাহ) বলেন, মহিলাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘ ৫ বছর ধরে এনামুল কবীর মুন্না’ তার সাথে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত রয়েছে। সম্প্রতি সে ওই মহিলাকে তার স্বামীকে ডিভোর্স দিতে বললে মহিলা স্বামীকে ডিভোর্সও দেয়। পরে মুন্না মহিলার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিলে ওই মহিলা বৃহষ্পতিবার সকালে বিয়ের দাবিতে তার বাড়ি চলে আসে। এসময় পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে গেলে আমরা জিম্মায় নিয়ে আসি।

আছমা বেগম বলেন, আগে থেকেই আমার স্বামীর সঙ্গে বনিবনা ছিল না। এরই মধ্যে এনামুল কবীর মুন্না সাংবাদিক পরিচয়ে আমার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পরে। দীর্ঘ ৫ বছর ধরে বিভিন্ন সময়ে সে আমাকে বিয়ের প্রলোভনে আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়। শেষমেশ সে আমাকে স্বামী ত্যাগ করতে বললে আমি তার কথা মত আদালতে গিয়ে স্বামীকে ডিভোর্স দেই। ডিভোর্সের পর সে আমার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। আমি কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে তার বাড়িতে চলে আসি। আমার মান সম্মান সব শেষ এখন সে আমাকে বিয়ে না করলে আমাকে আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই।

স্থানীয়রা জানান, এনামুল কবীর মুন্না এলাকায় গ্লোবাল টিভির প্রতিনিধি এবং বিভিন্ন ওয়েব পোর্টালের সাংবাদিক পরিচয়ে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজিসহ লোকজনকে সরকারি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে স্ট্যাম্পে চুক্তিনামা করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। এ নিয়ে একাধিক সালিশ বিচারও হয়েছে। সাংবাদিক পরিচয়ে সে প্রকাশ্যে থানার দালালি করে পুলিশ ও প্রশাসনের নাম ভাঙিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয়। তার বিরুদ্ধে বর্তমানে তথ্য প্রযুক্তি আইন, বখাটেপনাসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকায় প্রায় ৭/৮ টি মামলার রয়েছে। একটি মামলায় তার ৬ মাসের সাজাও হয়েছিল।

এনামুল কবির মুন্নার বাবা রহমত আলী শালীশীদের কাছে বলেন, এসব বিষয়ে আমি কিছু জানিনা তবে আমার ছেলে যদি অপরাধী হয় তাহলে ঐ মহিলার সাথে যদি তার সম্পর্ক থাকে তাহলে সে বিয়ে করতে হবে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *