পানছড়িতে ১০ বছর ধরে নিঃস্বার্থভাবে ধর্মীয় শিক্ষার আলো বিস্তারে ভুমিকা রাখায় নয়ন দেবনাথ’কে সম্মাননা প্রদান

মিঠুন সাহা, খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা

সমাজে যখন অনেকে ব্যক্তিগত কাজে ও ব্যক্তিস্বার্থে ব্যস্ত সময় পার করে। তখন কেউ কেউ নিয়োজিত থাকে সমাজ কল্যাণে। যাদের ধ্যান জ্ঞান থাকে সমাজকে নিয়ে। তাদের একজন হলো নয়ন দেবনাথ।সনাতনী সমাজের জন্য একজন নিবেদিত প্রাণ বলা যায় তাকে।নিজের কাজ ও ব্যস্ততাকে এক পাশ রেখে অভিভাবকদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ছেলেমেয়েদের গীতা শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করতে নানামুখী ভূমিকা গ্রহণ করে এই সনাতনী সমাজকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অহর্নিশি ভূমিকা রেখে চলেছে।

খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার কেন্দ্রীয় দেবালয় মন্দিরে দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎকাল ধরে ধর্মীয় জ্ঞানের আলো ও গীতা শিক্ষার আলো ছড়ানো ও চলমান রাখার উদ্যোক্তা ও সাঁওতাল পাড়া,কানুনগো পাড়ায় গীতা স্কুল এর প্রতিষ্ঠাতা শ্রী নয়ন দেবনাথ।

বর্তমানে সনাতন সমাজের মূলধারার সনাতনী ধর্মীয় চর্চা তেমন ভাবে পরিলক্ষিত হয়না বললেই চলে।আর তাছাড়া অভিভাবকদের মাঝেও তেমন সচেতনতা বিদ্যমান দেখা যায় না।

সেখানে নয়ন দেবনাথ দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎকাল কিংবা তারও বেশি সময় পূর্ব থেকে অভিভাবকদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে ছেলেমেয়েদের গীতা শিক্ষার জন্য উদ্বুদ্ধ ও সচেতনতা সৃষ্টি কর‍তে নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করে সমাজকে আলোকিত করতে ভূমিকা রেখে চলেছে।

কানুনগো পাড়া, সাঁওতাল পাড়া থেকে পানছড়ি বাজার কেন্দ্রীয় মন্দিরে ছেলেমেয়েরা আসতে দূরে হওয়ার বিষয়টি উপলব্ধি করে সাঁওতাল পাড়া ও কানুনগো পাড়ায় গীতা স্কুল প্রতিষ্ঠার একমাত্র উদ্যোক্তাও ছিলো সে।

সচেতনতার অভাবে যখন সাঁওতাল ছেলেমেয়েরা ধর্মীয় শিক্ষা ও চর্চা থেকে দূরে তখনই প্রায় ৫ বছর পূর্বে তার আন্তরিক প্রচেষ্টায় সাঁওতাল সনাতনী ধর্মালম্বী ছেলেমেয়েদের গীতা শিক্ষার আলোয় আলোকিত করার জন্য সে উদ্যোগ গ্রহণ করে।কানুনগো পাড়া ও সাঁওতাল পাড়া শ্রী শ্রী লোকনাথ বাবার মন্দিরে সেই প্রথম গীতা স্কুল প্রতিষ্ঠা করে।তার প্রচেষ্টায় সনাতন সমাজের ছেলেমেয়েরা আজ গীতা শিক্ষার আলোয় আলোকিত হচ্ছে।

নানা বাধাবিপত্তি ও অনেকের বিরাগভাজন হওয়া সত্ত্বেও সে এই গীতা শিক্ষার কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে । তার এই মহৎ উদ্যোগ এর জন্য ও
নিঃস্বার্থভাবে সনাতন সমাজের কল্যাণে অবদান রাখায় আজ শুক্রবার ( ১৭ নবেম্বর) সকাল ১১ টার সময় পানছড়ি কেন্দ্রীয় দেবালয় মন্দিরে তাকে এই সম্মাননা স্বারক প্রদান করা হয়।

এই সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাঁওতাল পাড়া শ্রী শ্রী লোকনাথ ব্রক্ষ্মচারী সেবা আশ্রম এর সভাপতি উৎপল চৌধুরী উজ্জ্বল ,সাংবাদিক মিঠুন সাহা, কেন্দ্রীয় মন্দিরের গীতার শিক্ষক বিভু চক্রবর্ত্তী ,ফাল্গুনী সাঁওতাল।

নয়ন দেবনাথ এর সাথে আলাপ কালে জানায়, একজন মানুষ তার নিজেকে জানার জন্য ও চেনার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষার জ্ঞান অবশ্যই প্রয়োজন। ধর্মীয় জ্ঞান,ধর্মীয় সংস্কৃতি,কৃষ্টি একজন মানুষের অন্তরে বিশুদ্ধতা তৈরি করে।ধর্মীয় মূল্যবোধ এর কারণে মানুষ সঠিক পথটি খুঁজে পায়।তাই শৈশব কাল থেকে ধর্মীয় জ্ঞান অর্জন করা অবশ্যই একজন সন্তান বা শিশুর জন্য অত্যন্ত কর্তব্য।এর ফলে তার মাঝে নৈতিকতার ভিত্তি সুদৃঢ় হয়।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *