গৌরনদী ডাকাতের হাতে নিহত ব্যক্তির নাম শহীদ মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাতিলের দাবী

বি এম মনির হোসেনঃ-

ডাকাতের হাতে নিহত হয়ে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার খেতাব পাওয়া ব্যক্তির নাম বাতিলের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছেন এক বীর বিক্রম। শহীদের খেতাব পাওয়া ব্যক্তি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর গ্রামের বাসিন্দা। বিষয়টি মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় আমলে নিয়ে বরিশালের জেলা প্রশাসককে সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে আবেদনকারী একই উপজেলার সাহাজিরা গ্রামের বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা এমএ হক (বীর বিক্রম) আবেদন উল্লেখ করেন, ১৯৭১ সালের ২৬ এপ্রিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বরিশাল আক্রমন করার পূর্বে বাটাজোরের তৎকালীণ চেয়ারম্যান সোনামদ্দিনের বাড়িতে ডাকাতরা আক্রমন করে সবকিছু লুটপাট করে এবং ডাকাতের বল্লমের আঘাতে সোনামদ্দিন নিহত হয়। ওই সময়ে আমি (এমএ হক) ও সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল ওয়াদুদ বরিশালের উত্তর বাবুগঞ্জ ও গৌরনদীর দায়িত্বে ছিলাম। ওই চেয়ারম্যান ডাকাতদের হাতে নিহত হওয়ার বিষয়টি আমরা তৎকালীণ সময়ে সরেজমিন পরিদর্শন করি। বর্তমানে তাহার প্রতারক মুক্তিযোদ্ধা সন্তানগন শহিদ সোনামদ্দিন চেয়ারম্যানকে পাক হানদার হত্যা করেছেন মর্মে বিভিন্ন অপকৌশলে শহিদ মুক্তিযোদ্ধা বানিয়েছে। যাহার গেজেট নং- ৪৮। আবেদনে সোনামদ্দিনের শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সনদসহ সকল সুবিদা বাতিলের দাবী জানানো হয়। মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ে আবেদন করার সত্যতা স্বীকার করে সোমবার দুপুরে বীর বিক্রম এমএ হক বলেন, যুদ্ধের সময়ে ডাকাতদের হাতে নিহত সোনামদ্দিন কোন যুদ্ধ করেননি। শহীদ মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় তার নাম থাকায় শুনেছি রাষ্ট্রীয় অর্থে তার কবর সংরক্ষণ করা হয়েছে। যা আমরা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধার মেনে নিতে পারিনা। এজন্য তার গেজেট ও মুক্তিযুদ্ধের সকল সুবিধা বাতিলের জন্য সরকারের প্রতি দাবী জানাই।
এবিষয়ে শহীদ মুক্তিযোদ্ধার খেতাব পাওয়া সোনামদ্দিনের ছেলে ইসমাত হোসেন রাসু বলেন, ১৯৭১ সালের ২৯ এপ্রিল আমাদের বাড়ির পাশের কর্মকার বাড়িতে স্বাধীনতা বিরোধীরা হানা দেয় এবং হামলা করে। ওই বাড়ির লোকজনদের ডাকচিৎকার শুনে আমার বাবা বের হলে এসময় তাকে (সোনামদ্দিন) হত্যা করে স্বাধীনতা বিরোধীরা। তিনি আরও বলেন, আমার বাবাকে যারা হত্যা করেছে তারা সবাই এই দেশেরই নাগরিক এবং রাজাকার-লুটার। তারা এখনো স্বাধীনতা বিরোধী এবং সরকার বিরোধী। এবিষয়ে গৌরনদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবু আবদুল্লাহ খান জানান, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে এ সংক্রান্ত বিষয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলে জন্য একটি চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *