ভাতিজার বিয়েতে অংশ নিতে সৌদি মালিককে হেলিকপ্টারে নিয়ে গোপালগঞ্জে আসলেন সৌদি প্রবাসী

স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ : ভাতিজার বিয়ে তাই অংশ নিতে সৌদি আরবের মালিকের (কফিল) ইচ্ছায় তাকে সাথে নিয়ে হেলিকপ্টারে চড়ে গোপালগঞ্জের নিজ গ্রামের বাড়িতে এসেছেন লালন শেখ (৪৫) নামে এক সৌদি প্রবাসী। তাই সৌদি মালিক ও হেলিকপ্টার দেখেতে পল্লী মঙ্গল ইউনাইটেড একাডেমি এন্ড কলেজে মাঠে ভীড় করে শিশু, নারীসহ নানা বয়সের মানুষ। এসময় সৌদি নাগরিককে ফুলেল অভ্যার্থনা জানায় গ্রামবাসী। সেই সাথে হেলিকপ্টার দেখে খুশি তারা।

গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার কাজুলিয়া উত্তরপাড়া গ্রামের মোসলেম শেখের ছেলে লালন শেখ দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবের রিয়াদের নাদিম শহরের বাসিন্দা বন্দর এনাজি আশসাই মালিকানাধীন একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। চাকরির সুবাদে মালিক বন্দর এনাজি আশসাই সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রবাসী লালন শেখ তার ভাতিজার বিয়েতে মালিক বন্দর এনাজি আশসাইকে দাওয়াত দিলে তিনি বাংলাদেশে আসার আগ্রহ প্রকাশ করে।

এতে আজ বুধবার সকাল ৭টায় সৌদি আরবের বিমানে করে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামেন তারা। পরে বেলা ১২টার দিকে হেলিকপ্টারে করে ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জের পল্লী মঙ্গল ইউনাইটেড একাডেমি এন্ড কলেজে মাঠের অস্থায়ী হেলিপ্যডে অবতারণ করেন। এসময় স্থানীয়রা বন্দর এনাজি আশসাইকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। পরে সেখান থেকে নিজ বাড়িতে সৌদি মালিককে নিয়ে যান লালন শেখ।

এদিকে এদিকে প্রবাসী লালন শেখের সঙ্গে তার সৌদি মালিক (কফিল) গ্রামে আসার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে বেশ কয়েকদিন ধরে কাজুলিয়া গ্রামবাসীর মধ্যে চলছিল উৎসাহ উদ্দীপনা। সৌদি থেকে আসা নাগরিককে বরণ করে নিতে নেওয়া হয় ব্যাপক প্রস্তুতি। প্রবাসী লালন শেখের সাথে তার সৌদি মালিক (কফিল) বন্দর এনাজি আশসাই ও হেলিকপ্টার আসার খবর ছড়িয়ে পড়ে পুরো গ্রামে। এ সময় স্থানীয়রা ফুলের মালা দিয়ে বরণ করেন সৌদি প্রবাসী লালন শেখ এবং তার মালিক (কফিল) বন্দর এনাজি আশসাইকে। সকাল থেকেই স্কুল মাঠে ভীড় করে গ্রামবাসী। বাড়িতে পৌঁছানোর পর সৌদি নাগরিককে দেখতে লালন শেখের বাড়িতে ভীড় করেন উৎসুক জনতা। পরে গ্রামবাসীর সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন সৌদি নাগরিক বন্দর এনাজি আশসাই।

কাজুলিয়া গ্রামের রফিক শেখ বলেন, এর আগে কখনো কেউ আমাদের গ্রামে হেলিকপ্টারে করে আসেনি। আমাদের গ্রামের ছেলে লালন শেখের সঙ্গে এসেছেন তিনি। আমরা খুবই খুশি হয়েছি হেলিকপ্টার দেখে।

আবুল জানলাম শেখ বলেন, এবরাই প্রথম হেলিকপ্টার দেখলাম। দেখে ভাল লাগছে। হেলিকপ্টারে করে সৌদি নাগরিক এসেছেন তাকেও দেখেছি। এমনকি লালন শেখের বাড়ীতে গিয়ে তার সাথে খাবার খেয়েছি। তিনি এতজন বড়মাপের মানুষহলেও তার মধ্যে কোন অহংকার নেই।

সৌদি প্রবাসী লালন শেখ বলেন, আমার কফিল (মালিক) বন্দর এনাজি আশসাইকে আমার ভাতিজার বিয়ের দাওয়াত দিলে তিনি আসার আগওহ প্রকাশ করে। সেই সূত্রে তিনি আমার ভাতিজার বিয়ের দাওয়াত খেতে আমাদের বাড়িতে এসেছে। আমার ভাতিজাও আমার কফিলের প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে। তিনি আমাদের বাড়িতে দুই সপ্তাহের মত থাকবেন। পরে আমি আর আমার কফিল একসাথে সৌদি ফিরে যাবো।

নিজ কর্মীর বাড়ি বাংলাদেশে এসে কেমন লাগছে জানতে চাইলে সৌদি নাগরিক বন্দর এনাজি আশসাই বলেন, বাংলাদেশ আমার দ্বিতীয় বাড়ি। এখান মানুষ খুবই ভালো। এখানে আসতে পেরে খুবই ভালো লেগেছে। এখনকার মানুষের ভালবাসা আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি প্রায় দুই সপ্তাহ থাকবো। এখানকার প্রতিটি এলাকা আমি ঘুরে দেখবো। এছাড়া আমার এক কর্মীর বিয়ের দাওয়াতে অংশ নেব। এখান থেকে ফিরে আমার প্রতিষ্ঠানে এই এলাকার আরো কর্মী নিব আমি।

তিনি আরো বলেন, মানুষের আথিতেয়তায় আমি মুগ্ধ। তিনি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করারও আশা প্রকাশ করেন। #

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *