December 21, 2024, 11:37 am
স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ : সংবাদ প্রকাশের পর শিকলবন্দি থেকে মুক্ত হয়েছে ভিসা পাসপোর্ট ছাড়াই বিমানে ওঠা আলোচিত শিশু জুনায়েদ মোল্লা। না বলে আর কোথাও যাবে না, এমন আশ্বাস পেয়েই শিকল খুলে দেয়া হয়। তবে পড়াশোনা খরচ দিতে না পারার কারনেই বারবার পালিয়ে যেত বলে জানায় ওই শিশুটি। তবে পড়ালেখা শিখে পাইলট হতে চায় জুনায়েদ।
আজ শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জুনায়েদের বাড়ীতে গিয়ে দেখা যায়, খুলে দেয়া হয় জুনায়েদের পায়ের শিকল। এরপরই সে ঘরের বাইরে মুক্ত পরিবেশে ঘুরে বেড়ায়। বাড়ীর পাশের খালো গোসল করে জুনায়েদ। তবে এখনো জুনায়েদকে দেখতে এখনো বাড়ীতে ভীড় করছে এলাকাবাসী।
জানাগেছে, গত বুধবার সকালে ঢাকার বিমান বন্দর থানা থেকে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার পারইহাটি গ্রামের বাড়ীতে নিয়ে আসা হয় আলোচিত শিশু জুনায়েদ মোল্লাকে। এরপর বারবার পলানোর কারনে শিকলবন্দি করে রাখা হয়। জুনায়েদের এক পায়ে শিকল অন্য পাশ খুটির সাথে ছিল তালাবদ্ধ। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর খুলে দেয়া হয় শিকল। এরপর থেকে মুক্ত পরিবেশে আবারো ঘুর বেড়াতে পারছে ওই শিশুটি। তবে পরিবার থেকে পড়ালেখার খরচ দিতে না পারার কারনে মাদ্রাসা থেকে গালমন্দ শোনায় বারবার পালিয়ে যেতো শিশুটি। তবে এবার আর পালানো নয় পড়ালেখা শিখে পাইলট হতে চায় জুনায়েদ। ঘুরতে চায় দেশ বিদেশ।
শিকল বন্দি করা অমানবিক বলে মনে করেছে জুনায়েদের পরিবার। তবে আর কোথাও পালিয়ে যাবে না বলে আশ্বায় দেয় জুনায়েদ। ফলে সংবাদ প্রকাশের পর জুনায়েদকে শিকলবন্দি থেকে মুক্ত করা হয়েছে বলে জানায় জুনায়েদের পরিবার।
আলোচিত শিশু জুনায়েদ জানায়, মাদ্রাসায় পড়ার সময় আব্বার আছে কাগজ ও কলম কেনার টাকা চাইতাম। আব্বা পড়ালেখার খরচ দিতে পারতো না। খাতা–কলমের জন্য হুজুর মারতো। মার খাওয়ার ভয়ে মাদ্রাসা থেকেও মাঝে মধ্যে পালিয়ে যেতাম।
জুনায়েদ আরো জানায়, আমি পড়ালেখা শিখতে চাই। শিখে পাইলট হতে হয়ে বিমানে দেশ বিদেশ ঘুরতে চাই। সরকার যদি আমাতে সাহায্য করতো আমি পড়ালেখা শিখতাম।
জুনায়েদের চাচার ইউসুফ মোল্লা বলেন, জুনায়েদ পাগল নয় যে ওকে শিকল দিয়ে বেধে রাখবো। ওর শিকল খুলে দেয়া হয়েছে। ও এখন আগের মত ঘুরে বেড়াতে পারছে। ওই বিমানে ওঠার শখ ছিল। কিন্তু ধরা পড়ায় জুনায়েদের বিমানে চাড়ার স্বপ্ন পূর্ণ হয়নি। তাই বিমান কর্তৃপক্ষের কাছে জুনায়েদের ইচ্ছা পূরণ করার দাবী জানাই।
জুনায়েদের বাবা ইমরান মোল্লা বলেন, ‘ওর বয়স যখন ছয় বছর, তখন মাদ্রাসায় ভর্তি করে দিই। মাকে দেখার জন্য মন সব সময় ব্যাকুল থাকত। মাঝে মাঝে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে প্রথমেই তার মায়ের কাছে যেত। মা তাকে আশ্রয় দিত না। কষ্টে সে অন্যত্র যেত। সেখান থেকে খুঁজে নিয়ে আসতাম। মঙ্গলবার সকালে বাড়িতে নিয়ে এসে পায়ে শিকল দিয়েছিলাম যাতে ও আবার পালিয়ে যেতে না পরে। তরে খবর প্রকাশ হবার পর ওই পায়ের শিকল খুলে দিয়েছি।
গত সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত তিনটার দিকে নিরাপত্তাবেষ্টনী পেরিয়ে কুয়েত এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে উঠে পড়েছিল শিশু জুনায়েদ। রাত সোয়া তিনটার দিকে ওই ফ্লাইট উড্ডয়নের কথা ছিল। প্রায় ঘন্টার মত ওই ফ্লাইনের সিটে বসে ছিল জোনায়েদ। পরে এক যাত্রী উঠে অন্য সিটে বসতে বললে ধরা পরে পাসপোর্ট, টিকিট ও বোর্ডিং পাস ছাড়াই বিমানে উঠেছিল শিশুটি। পরে বিমানবন্দর থানা পুলিশ শিশুটিকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। #