December 27, 2024, 8:39 pm
ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা)।।
অবহেলিত একটি জনপদ পাইকগাছা উপজেলার চাঁদখালী ইউনিয়নের উত্তর গড়ের আবাদ গ্রাম। যেখানে কম-বেশি উন্নয়ন হলেও অবহেলিত রয়ে গেছে সড়ক ব্যাবস্থা।স্বাধীনতার পর আজ পর্যন্ত উন্নয়ন বি ত এই গ্রামের গ্রামীণ সড়ক ব্যাবস্থা।যার কারনে চলাচলের জন্য দূর্ভোগে রয়েছেন এত্র এলাকার হাজার হাজার মানুষ। জরুরি ভিত্তিতে রাস্তাটি সংষ্কারসহ পাকা করনের দাবী করেছে এলাকাবাসী। সরেজমিনে যেয়ে দেখা গেছে, গ্রামের বেহাল রাস্তা উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বদ্ধ নৈর নদীর পানি। অন্যদিকে অনেক কষ্ট করে কদর্মাক্ত রাস্তায় দিয়ে চলাচল করছে কিছু মাদ্রাসার পড়ুয়া শিক্ষার্থী। কোথাও কোথাও রাস্তার কিছু কিছু অংশ নৈর নদীতে ভেঙ্গে গেছে। এরকম অনেক চিত্র চোখে পড়েছে। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গ্রামকে শহর বানাতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধির অবহেলায় এখনও এলাকার চেহারা মান্ধাতার আমলের মত রয়েছে।
এখানে শত শত স্থায়ী পরিবারের প্রায় ২ হাজার মানুষের বসবাস। গ্রামটিতে ৪টি জামে মসজিদ, ২টি মহিলা মাদ্রাসা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র উপহার মুজিব বর্ষের ১৭ জন গৃহহীন দরিদ্র পরিবারের ঘর রয়েছে। স্বাধীনতার ৫২ বছর পার হলেও গ্রামের মাটির রাস্তায় ইটের সোলিং হয়নি। বৃষ্টির সময় থাকে হাঁটু কাঁদা। রেহাই পায় না এই এলাকা সহ অন্য গ্রামের মানুষ।
প্রতি বছর বৃষ্টি মৌসুমে গ্রামের মানুষের পড়তে হয় সীমাহীন দুর্ভোগে, বিপাকে পড়তে হয় স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীদের। যোগাযোগ ব্যবস্থা খারাপ থাকায় সমস্যায় পড়তে হয় ইমারজেন্সি রোগিদের।
হঠাৎ কোন ব্যাক্তি অসুস্থ হলে দ্রুত উপজেলা সদরে নেওয়া সম্ভব হয়না। এমনকি পল্লী চিকিৎসকেরাও অনুপযোগী রাস্তার জন্য সহজে কোন রোগীর বাড়িতে আসতে চায় না। চৌমুহনী বাজার থেকে কয়রা-পাইকগাছা প্রধান সড়ক গজালিয়া বাল্লা পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা।
এরমধ্য রশিদ সরদার, কামরুল ইসলাম সরদার ও আক্কাজ ঢালী মেম্বরের আমলে এক থেকে দেড় কিলোমিটার ইটের সলিং করে। তারও ইউপি সদস্যদের আত্মীয় বা কর্মীদের বাড়ীর সামনে। খন্ড খন্ড করে স্বজনপ্রীতি মাধ্যমে ইটের সলিং রাস্তা করা। যাহা এলাকার মানুষের উপকার হয়নি বলে অধিকাংশ স্থানীয়রা মন্তব্য করেন। বর্তমানে ইটের সোলিং রাস্তার ইট উঠে গর্তে পরিনত হয়েছে। বেহাল দর্শার জন্য স্বাভাবিক ভাবে যাতয়াত করা সম্ভব হয় না। গ্রামের রাজ্জাক সরদার বলেন মেম্বররা যদি যে কোন মাথা থেকে ইটের সোলিং বসাতেন তাহলে কিছুটা হলেও চলাচল করা যেত। বাদুড়িয়া ব্রীজ থেকে চৌমুহনী বাজার প্রায় ৩ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে ৩/৪ খন্ড মাটির রাস্তা পড়ে আছে । যার ফলে আমরা এখনও বৃষ্টিতে কাঁদা পানিতে চলতে খুবই দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। মুজিবর সরদার বলেন, আমরা খুবই অবহেলিত আছি। এখন প্রায় গ্রাম গঞ্জে রাস্তাঘাট ইটের সোলিং কিন্ত আমাদের আজও হাঁটু কাঁদায় চলতে হয়।
সরকারের গ্রাম কে শহরে রূপ দিবেন, তাহলে আমাদের অবহেলিত গ্রাম কি কোন নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধির চোঁখে পড়ে না। অনেক গ্রাম ফাঁকা রাস্তায় পিচ ঢালাই রাস্তা হয়েছে, আমাদের গ্রামে প্রায় ১ হাজার জনবসতি বাস করেন।
জয়নাল সরদার বলেন, আমাদের গ্রামের প্রত্যেক বাড়িতে অটোভ্যান আছে, অনেক ব্যক্তির নিজস্ব মটর সাইকেল, ইজিবাইক, নসিমন, করিমন ভ্যান গাড়ী আছে। যারা এর আয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। এসকল যান রেখে আসতে হয় অন্য গ্রামে। নাহলে রাস্তার পার্শ্বে পলিথিন কাগজ দিয়ে ঢেঁকে রাখতে হয়। অনেক সময় চুরির ঘটনা ঘটে। চলতি মাসে গত সপ্তাহে ভারি বৃষ্টিতে এ গ্রামের কয়েক জায়গা মাটির রাস্তা নিচু ও অবহেলিত রাস্তার উপর দিয়ে পানি ছাপিয়ে নৈর নদীতে যাচ্ছে। সরেজমিনে দেখা যায়, কাঁচা রাস্তা অবহেলিত থাকায় উত্তর গড়ের আবাদ গ্রামের বিল্লাল সানার বাড়ীর সামনে রাস্তা নিঁচু থাকায় রাস্তার উপর জাল ফেলে মাছ ধরছে তারা।
স্থানীয় ইউপি সদস্য নজরুল সরদার বলেন, চেয়ারম্যান কে একাধিক বার বলেছি। উত্তরগড়ের আবাদ গ্রামের কাঁচা রাস্তা খুবই অবহেলিত। রাস্তাটি সংস্কার জরুরি। কিন্তু তিনি কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। আমি চেষ্টা করছি, গোলজার মোল্লা বাড়ী থেকে বাদুড়ি ব্রীজ পর্যন্ত বাকী মাটির রাস্তা ইটের সোলিং করার। চাঁদখালী ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাদা আবু ইলিয়াস সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে, যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এব্যাপারে অবহেলিত কাঁচা রাস্তাটি তে ইটের সোলিং করে চলাচলের উপযোগীর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে স্থানীয় এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান সহ সংশ্লিষ্টদের কতৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী।