May 18, 2024, 1:09 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
সুজানগরের উন্নয়নমূলক কার্যক্রম পরিদর্শনে এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী পাইকগাছায় গাছ কাটতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পর্শে যুবকের মৃত্যু পাইকগাছায় সপ্তদ্বীপার সাহিত্য আসর অনুষ্ঠিত আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচন; পাইকগাছায় ৬ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী সহ মোট ১৯ প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণা জমে উঠেছে সুন্দরগঞ্জ সাহিত্য সংসদের নতুন কমিটি গঠন বরগুনার তালতলীতে তিন ফসলি জমি অধিগ্রহণের প্রতিবাদে মানববন্ধন রাজশাহীর আম চীন, রাশিয়া বেলারুশসহ বিভিন্ন দেশে যাবে-কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুস শহীদ শত ভাগ পাশের সাফল্যে আঙ্গারু এস.এ বালিকা বিদ্যালয় র‌্যাব-১২’র অভিযানে ২১৬ কেজি গাঁজাসহ ২ জন মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার, ১টি কাভার্ড ভ্যান জব্দ রায়গঞ্জে কুইজ প্রতিযোগীতায় শিক্ষার্থীদের পুরস্কার বিতরণ
পাইকগাছায় নার্সারীতে জোড় কলম তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছে শ্রমিকরা

পাইকগাছায় নার্সারীতে জোড় কলম তৈরীতে ব্যস্ত সময় পার করছে শ্রমিকরা

ইমদাদুল হক,পাইকগাছা,খুলনা।।
পাইকগাছার নার্সারী গুলিতে চারা উৎপাদনে মালিক ও শ্রমিকরা জোড় কলম তৈরীর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে।তিব্র গরম ও রোদের মধ্যে শ্রমিকরা মাথার উপর ছাতা দিয়ে কাজ করছে। মাতৃগুণ বজায় রাখা, দ্রুত ফলন, রোগ প্রতিরোধে ক্ষমতা বাড়ানো এবং অধিক ফলন পেতে অঙ্গজ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। গাছের চারা তৈরীর পদ্ধতির নাম কলম। এ কলম তৈরীতে রয়েছে নানা নাম ও পদ্ধতি। যেমন, গুটি কলম, শাখা কলম (কাটিং), চোখ কলম বা বাডিং। তবে কলম তৈরীতে গ্রাফটিং বা জোড় কলম, কাটিং বা উপজোড় কলম উল্লেখযোগ্য পদ্ধতি।

যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গাছ যৌন কোষ বা তার অঙ্গজ কোষ থেকে নতুন স্বতন্ত্র গাছ সৃষ্টি করে তাকে বংশবিস্তার বলা হয়। যেমন যৌন বংশবিস্তার ও অযৌন বংশবিস্তার। গাছ রোপনের মুল উদ্দেশ্য হলো ভাল, উন্নতমান ও মাতৃগুণ সম্পন্ন ফল পাওয়া। এ কারনে ফল গাছ রোপনের ক্ষেত্রে যৌন পদ্ধতির তুলনায় অযৌন পদ্ধতির চারা/কলম গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ পদ্ধতিতে উৎপাদিত চারা/কলম রোপন করলে মাতৃগুণ সম্পন্ন ফল পাওয়া যায়। গাছে তাড়াতাড়ি ফল ধরে এবং গাছ ছোট হয় বিধায় অল্প জায়গায় অনেক গাছ লাগানো যায়। অযৌন বংশবিস্তার পদ্ধতিগুলোর মধ্যে ব্লেফট গ্রাফটিং বা ফাটল জোর কলম একটি অন্যতম পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে একাধিক ফল গাছে কলম করা যায়। অন্যান্য জোড় কলমগুলোর তুলনায় ফাটল জোড় কলম পদ্ধতিতে কাটা স্থানের দুই পাশ দিয়ে জোড়া লাগে বিধায় জোড়াটি সবল হয় এবং সহজে জোড়া স্থানটি ভাঙ্গা সম্ভবনা থাকে না। তুলনা মুলক ভাবে এ পদ্ধতি অন্যান্য জোড় কলম পদ্ধতিগুলোর তুলনায় সহজ। সফলতার হার বেশি এবং খরচ ও কম পড়ে। এ কলম তৈরী করতে গ্রাফটিং চাকু, ব্লেড, সিকাচার, পলিথিন ক্যাপ, পলিথিন ফিতা, সুতলী, গাছের ডগা বা সায়ন এবং কলম তৈরীতে দক্ষ কারিগর বা মালির প্রয়োজন হয়। মে থেকে জুলাই পর্যন্ত কলম করার উপযুক্ত সময়। কারণ এ সময় বাতাসের আদ্রতা ও গাছের কোষের কার্যকারিতা বেশি থাকে। তাড়াতাড়ি জোড়া লাগে এবং সফলতার হারও বেশি থাকে।

উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে ছোট-বড় প্রায় ৫ শতাধিত নার্সারী গড়ে উঠেছে। যার উল্লেখযোগ্য সংখ্যা রয়েছে গদাইপুর গ্রামে। মৌসুম শুরুতে চারা তৈরীর জন্য নার্সারী মালিক ও কর্মচারীরা ব্যস্ত হয়ে ওঠে। জোড় কলম তৈরী করতে গাছের ডালের সঙ্গে গাছের ডাল জোড়া লাগিয়ে জোড় কলম তৈরী করা হয়। তেজপাতার সঙ্গে কাবাবচিনি, আম সঙ্গে আম, ছবেদার সঙ্গে খিরখাজুর, আতা সঙ্গে দেশী আতা জোড় দিয়ে জোড় কলম তৈরী করা হয়। কাঁটা জাতীয় কুল সহ বিভিন্ন ফলের চারা চোখ বসিয়ে বাডিং কলম তৈরী করা হয় এবং ফুল জাতীয় গাছের ডাল কেঁটে সরাসরি মাটিতে পুতে কমল তৈরী করা হয়।

জানাগেছে, উপজেলার বিভিন্ন নার্সারীতে চলতি মৌসুমে আম, পেয়ারা, জামসহ বিভিন্ন ফলের ১০ লাখ ও কুলের প্রায় ১৫ লাখ কলম তৈরী হচ্ছে। গদাইপুর গ্রামের নার্সারী মালিক হাবিবুর রহমান জানান, গত বছর তার নার্সারীতে উৎপাদিত চারা বিক্রি করতে না পারায় ক্ষেতে শুকিয়ে নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। এ বছরও তিনি নার্সারীতে চারা উৎপাদনে ব্যস্ত রয়েছে। হিতামপুর গ্রামের রজনীগন্ধা নার্সারীর মালিক সুকনাথ পাল জানান, তার নার্সারীতে দেড় লাখ জোড় কলম তৈরী করা হয়ে গেছে আর ৫০ হাজার তৈরীর কাজ চলছে। গদাইপুর গ্রামের অবস্থিত সততা নার্সারীর মালিক অঞ্জনা রানী পাল জানান তার নার্সারীতে বিভিন্ন জাতের কুলের প্রায় এক লাখ কলম তৈরী করছেন। শ্রমিকের অভাবে কলম তৈরী করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবে কলম তৈরীর সময় পার হয়ে গেলে এ মৌসুমের আর কলম তৈরী করা যাবে না। সে কারনে কলম তৈরীতে অধিক পয়সা খরচ হচ্ছে। নার্সারীতে বিভিন্ন জাতের হাইব্রীড জাত কাটিমন আম, মাল্টা, পিয়ারা, সফেদা, জামরুল। তাছাড়া এ সব কলমের মধ্যে থাই পেয়ারা, জামরুল, মালাটা, কদবেল, কমলালেবু, আমসহ বিভিন্ন জাতের কলম রয়েছে।

পাইকগাছা উপজেলা নার্সারী মালিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অশোক কুমার পাল জানান,বিগত বছর চারা বিক্রি না হওয়ায় ক্ষেতে চারা শুকিয়ে নস্ট হয়েছে। এতে নার্সারী মালিকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সে কারণে এবছর কলম কম হচ্ছে। তাছাড়া কলম তৈরীর শ্রমিক ঠিকমত না পাওয়ায় উচ্চ মূল্যে শ্রমিক নিয়ে কলম তৈরী করতে হচ্ছে। কারণ সময় চলে গেলে এ মৌসুমে আর কলম তৈরী করা যাবে না। গদাইপুর এলাকার তৈরী কলম বাংলাদেশের চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, রংপুর, সিলেট, বরিশাল, কুমিল্লা, রাজশাহী সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হচ্ছে। তবে ঠিকমত বাজার দর না পাওয়ায় নার্সারী মালিকরা আশানারুপ ব্যবসা করতে পারছে না।

নার্সারী ব্যবসায়ীরা জানান, চারা উৎপাদনে সরকারি ভাবে লোনের ব্যবস্থা করলে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে নার্সারী শিল্প গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম জানান, পাইকগাছার নার্সারী শিল্প খুলনা জেলা শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে। নার্সারী ব্যবসায়ীরা চারা বিক্রি করার আশানারুপ বাজার ধরতে না পারায় তারা কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। নার্সারী ব্যবসা করে মালিক, ব্যবসায়ীরা সাবলম্বী হচ্ছে। তেমনি নার্সারীতে নিয়জিত হাজার হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হচ্ছে। নার্সারীতে উৎপাদিত চারা সবুজ বননায়নে উল্লেখ যোগ্য ভূমিকা রেখে পরিবেশের ভারশাম্য রক্ষা করছে। তেমনি ভাবে দেশের আর্থ-সামাজিক অবদান।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD