দীর্ঘ পাঁচ বছর পরে স্বরূপকাঠি কাঠ বাজারের দায়িত্ব পেলো পৌরসভা

আনোয়ার হোসেন
স্বরূপকাঠি (পিরোজপুর) প্রতিনিধি //

স্বরূপকাঠি পৌরসভা সরকারি বিধি নিধান মেনেই ১৯৯৮সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত কাঠ বাজারের ইজারা আদায় করেন।কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী বাজারটি সরকারি তালিকায় গেজেট ভুক্ত হাটবাজারের লিষ্টে না থাকায়। ২০১৮ সালে বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার পৌরসভাকে ঐ কাঠ বাজারের ইজারা আদায় বন্ধ করে দেয়। অপরদিকে মেয়র মহোদয় এর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে, ২০২২সালের ৩১সে মার্চ ভূমি মন্ত্রণালয় কাঠ মহলটি কাঠ বাজার হিসেবে গেজেট ভুক্ত করে চিঠি পৌর সভাকে চিঠি পাঠান । তখন মেয়র মহোদয় কাঠ বাজারটির জেলা প্রশাসক ও বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে পুনরায় ইজারা আদায়ের জন্য আবেদন করেন।কিন্তু হটাৎ করে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে জেলা প্রশাসক কাঠ মহলটি ইজারার জন্য টেন্ডার আহ্বান করেন। তখন মেয়র মহোদয় কাঠ বাজারটি ফিরে আনার জন্য আইনের আশ্রয় নেয়। দীর্ঘ পাঁচ বছর ইজারা জটিলতা নিয়ে চলমান মামলায় বিজ্ঞ আদালত বিচার বিশ্লেষণ করে প্রাথমিক ভাবে স্বরূপকাঠি পৌরসভাকে খাস আদায়ের অনুমতি প্রদান করেন।

গত ১১ই মে বিজ্ঞ আদালত দেওয়ানী কার্যবিধি ৩৯/১/২ অর্ডার অনুযায়ী দরখাস্ত কারির আবেদনর পরিপ্রেক্ষিতে খাজানা আদায়ের অনুমতি প্রদান করেন । এবং মামলাটি চুড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দরপত্র ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে সর্বোচ্চ দরদাতাকে ইজারা প্রদানের নির্দেশ দেয়।ঐ আদেশে আরো উল্লেখ করা হয় উক্ত মকদ্দমাটি চুড়ান্ত নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত উক্ত কাঠ বাজারের ইজারা লপ্ত অর্থের যোক্তীক আয় ব্যায়ে ও জমার হিসাব তিন মাস পর পর আদালতে দাখিল করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন ।

এ দিকে কাঠ বাজার পৌরসভার হস্তগত হওয়ায় স্থানীয় পৌর জনসাধারণ ও ব্যাবসায়ীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে ফিরে পেয়েছেন তাদের মুখে হাসি দেখা যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরা জানান,আগে সহকারী কমিশনার এর মাধ্যমে খাজনা আদায় করতো কোন সমস্যা হলে তার কাছে কিছু বলার সুযোগ পেতাম না। এখন পৌরসভা খাজনা আদায় করবে তাদের সাথে মন খুলে কথা বলতে পারবো। আর এক ব্যবসায়ী জানান, এখন পৌর সভার মাধ্যমে খাজনা আদায়ের ফলে এলাকর কিছু উন্নয়ন হবে।কোন সুবিধা অসুবিধা হলে সাথে সাথে মেয়র সাহেবকে জানাতে পারবো।

স্বরূপকাঠি পৌর সভার মেয়র গোলাম কবির বলেন,এই কাঠ বাজারটি পৌর সভার ১নং ওয়ার্ডে অবস্থিত এটা পৌর সভার ন্যায্য দাবী যেটা পৌর সভা দীর্ঘ দিন যাবত খাজনা আদায় করতো। বাজারটি সরকারি গেজেট ভুক্ত না থাকায় মাঝে কিছু দিন সরকার খাস আদায় করেছে। এখন আল্লাহর রহমতে সেই সমস্যা আর নাই। ভূমি মন্ত্রণালয় এটাকে পৌর এলাকার কাঠ বাজার হিসাবে ঘোষণা করেছেন এবং তাই বিজ্ঞ আদালত গত ১১ই মে বিচার বিশ্লেষণ করে পৌর সভাকে খাজনা আদায়ের অনুমতি প্রদান করেন ।

উল্লেখ্য নব্বইর দশকের দিকে সরকার যখন সুন্দরীকাঠ কাঠের টেন্ডার দেয়া বন্ধ করে দিলে ব্যবসায়ীরা এর পর থেকে স্বরূপকাঠি সন্ধ্যা নদীর ও শীতলা খালের মোহনায় দেশীয় কাঠের ব্যবসা শুরু করেন । কালের বিবর্তনে দেশীয় কাঠের চাহিদা বেড়ে গেলে কাঠ বাজারটি আস্তে আস্তে সম্প্রসারিত হয়। এখন কাঠ বাজারটি স্বরূপকাঠির সর্ববৃহৎ কাঠের বাজারে পরিনত হয়েছে।

আনোয়ার হোসেন
স্বরূপকাঠি উপজেলা প্রতিনিধি।।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *