বি এম মনির হোসেনঃ-
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় নবজাতকের গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাস রোধ করে হত্যা করেছেন এক প্রসূতি। এ অভিযোগে স্বামী বাদী হয়ে থানায় মামলা করার পর ওই নারীকে গ্রেপ্তার করেছে আগৈলঝাড়া থানা পুলিশ। তবে তাঁর আচরণ দেখে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসক।
২০ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দুপুরে নবজাতকের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। মাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।আজ ভোরে আগৈলঝাড়ায় ওই নারীর শ্বশুরবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। সকালে স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেন তাঁর স্বামী। অভিযুক্ত নারী রুমা খানম (২৪)। তিনি উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের পূর্বপয়সা গ্রামের মিলন বখতিয়ারের (৩০) স্ত্রী।
মামলার পর রুমাকে গ্রেপ্তার করে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আগৈলঝাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় পুলিশ।এ বিষয়ে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারহানা ইসলাম সাংবাদিক দের বলেন, ‘ডেলিভারিতে তাঁর কোনো সমস্যা আমরা পাইনি। শারীরিকভাবে তিনি সুস্থ রয়েছেন। তবে তাঁর এমন আচরণ অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে। তাই তাঁকে বরিশালে কোনো মানসিক চিকিৎসককে দেখানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’ অভিযুক্ত রুমা খানম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থাকার সময় সাংবাদিক দের বলেন, ‘আমি নিজেই আমার বাচ্চাকে মেরে ফেলছি। আমার সেন্স ছিল না। এইটা কীভাবে হইছে বলতে পারি না। কিছুই বুঝতে পারি নাই। তা ছাড়া একটা মানুষ কেউ ইচ্ছা করে তার বাচ্চাকে মারে না!’ রুমা খানমের স্বামী মিলন বখতিয়ার একজন দিনমজুর সাংবাদিক দের জানান সাত বছর আগে তাঁরা ভালোবেসে বিয়ে করেন। পরে পরিবার মেনে নেয়। সুখী দাম্পত্য জীবনে দুটি মেয়েসন্তানের জন্ম হয়। এটি ছিল তৃতীয়বার। এবারও কন্যাসন্তান হয়েছে। তৃতীয়বারও কন্যাসন্তান হওয়ায় রুমা এমন কাণ্ড ঘটিয়ে থাকতে পারেন বলে মিলনের ধারণা। আগৈলঝাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ গোলাম ছরোয়ার দৈনিক হিরন্ময় পত্রিকার প্রতিনিধি বি এম মনির হোসেনকে বলেন, ‘উপজেলার বাকাল ইউনিয়নের পূর্বপয়সা গ্রামের মিলন বখতিয়ার ও রুমা খানমের পাঁচ ও দেড় বছর বয়সী দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে রুমা খানম আরেকটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। সন্তান জন্মের দুই ঘণ্টা পর নবজাতকের গলায় রশি পেঁচিয়ে হত্যা করেন তিনি। এক প্রতিবেশী সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুকে দেখতে গেলে শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় দেখেন। তখনই মৃত্যুর বিষয়টি প্রকাশ পায়।’ আগৈলঝাড়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ মাজহারুল ইসলাম দৈনিক হিরন্ময় পত্রিকার প্রতিনিধি বি এম মনির হোসেনকে জানান ঘটনাস্থলে পৌঁছে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে রুমা খানম নিজেই তাঁর সন্তানকে হত্যা করেছেন বলে স্বীকার করেছেন।

Leave a Reply