এস এম মিলন জয়পুরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
বর্তমান সরকারের উন্নয়নের রোলমডেল খ্যাত জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার প্রায় কোটি টাকার মূল্যের সরকারি খাস খতিয়ানভূক্ত পুকুর ভুয়া বন্দোবস্ত খতিয়ান ও মাঠ জরিপে রেকর্ড হয়ে বেহাত হয়ে যাচ্ছে। জলাশয় পুকুর দখলদারদের হাত থেকে বাদ পড়ছে না।
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার জিন্দারপুর ইউনিয়নের করিমপুর এলাকায় সরকারি সরগাড়া খাস পুকুর খতিয়ান মূলে ৮১শতক পুকুরের চারপাশে দখলে নেয়ায় এখন ৪০ শতকের জলাশয় হয়েছে।
করিমপুর গ্রামের একাধিক ব্যক্তি বলেন, এই খাসপুকুরটি ব্রিটিশ আমল থেকে আমাদের বাপ দাদারা পুকুরের পানি চাষাবাদের জন্য ব্যবহার করে আসছিল। এখন মাছ চাষের উপযোগী হওয়ায় এলাকার মাছ চাষিরা ইজারার মাধ্যমে ওই পুকুরটি ডেকে নিয়েছিল। দলীয় ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে ও তহশিলদারের অনিয়মের কারণে পুকুরটি ইজারা নিয়ে বর্তমান খাসপুকুরে মালিক হয়েছেনতাইজুল ইসলাম। আমরা চাই সঠিক তদন্ত করে সরকার রাজস্ব পাক এটি আমাদের প্রত্যাশা ৷
পুকুরটি উদ্ধারে করিমপুর গ্রামের ফজলুর রহমান বাদি হয়ে কালাই উপজেলা নির্বাহি অফিসার ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) এর নিকট লিখিত আবেদন দিয়েছেন। আবেদনে মৌজা করিমপুর জে, এল নং ৯৯ আর এস খতিয়ান ৮০২ দাগ নং ৩৪/৫৭/ জমির পরিমান ৮১ শতাংশ মালিকানা করা হয়েছে। ওই খাস পুকুরটি উদ্ধারের জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
পুকুর ও জলাশয়কে ধানী জমি দেখিয়ে ভুয়া বন্দোবস্তের মাধ্যমে খতিয়ান, মাঠ জরিপ হয়ে কয়েক হাত বদল হয়ে ভূমিদস্যু চক্রের হোতা তাইজুল পুকুর জলাশয় ভরাট করে এখন সরকারের সম্পত্তির মালিক বনে গেছেন এমন অভিযোগ উঠেছে।
এসব সরকারী সম্পত্তি উদ্ধারে প্রশাসনের কি কোন দায় নেই? এমন প্রশ্ন রাখেন সচেতন মহল।
সূত্র জানায়, উপজেলার করিমপুর মৌজার ১নং খাস খতিয়ানের ৩৪/৭৫, ৩৩/৫৫, ২১/৭৩, ১১৫৭/১৫৯৯ নং দাগের কোটি টাকা মূল্যের ৮১শতক সরকারী খাস খতিয়ানের জমি পূর্ব সরকার পক্ষে প্রদেশ পক্ষে- নামে রেকর্ড বিদ্যমান। যা আত্মসাৎ করার লক্ষ্যে ভুয়া বন্দোবস্তের মাধ্যমে ৫৭ দাগ-ক/ধানী ৭৯০০ দেখিয়ে ৮০২ নম্বর খতিয়ান খুলে মাঠ জরিপে খতিয়ান প্রনয়ন করা হয়েছে। এটি সম্পূর্ন বিধি বহির্ভূতভাবে সরকারি পুকুরটি এলাকার সিরাজুল, লিপু, আঃ হান্নান, নূরুজ্জামান সরকারিভাবে পুকুর লিজ নিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তাইজুল তহশিলদারকে ঘুষ দিয়ে ভুয়া রেকর্ড করে তাইজুলের বাবা লজিমদ্দিন মালিক হয়েছে৷
এ বিষয়ে ভুয়া ৫৭- দাগে /৭৯০০ বন্দোবস্তকারী তাইজুল ইসলাম বলেন, ’আমি একজন কৃষক বিষয়টি আমি ভাল জানি না, বাবার সাথে কথা বলে আমি আপনাকে ফোন করবো। কোন রিপোর্ট কইরেন না। আগামিকাল সকালে দেখা করব, পরে তাজুল ইসলাম এ প্রতিনিধিকে আরো বলেন, আমার বাবা ঐ খাস পুকুর ৯০ বছরের লিজ নিয়েছে । বর্তমান পুকুরটি ডিসিআর মূলে চাষাবাদ করে খাচ্ছি৷ খাসপুকুর বিষয়ে মামলা হয়েছে৷
ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা আবু বাসার বলেন, ’১০০-কে/৫৭-০৯৭৫ কেসটি ভুয়া। ৭৯০০ নম্বর নামে ভূমি অফিসে বিধি বহির্ভূত সরকারি সম্পদ উদ্ধারে মামলা করা হয়েছে। জেলা সেটেলমেন্ট অফিস এগুলো করেছে উল্লিখিত জমি পুকুর শ্রেনীর এবং রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি।’
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জান্নাতুল ফেরদৌসি বলেন, আমরা একটি তদন্ত প্রতিবেদন পাঠিয়েছি। রিপোর্ট আসলে যথাযথ ব্যবস্থাসহ পর্যায়ক্রমে বেদখল হওয়া সব সরকারী জমি উদ্ধার করা হবে এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।
জয়পুরহাটের কালাইয়ে সরকারি খাস জমি সংঘবদ্ধ ভূমিদস্যুর দখলে- পর্ব-১

Leave a Reply