প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণের ঘর পেয়ে বিয়ের স্বপ্ন দেখছেন সত্তরর্ধ্ব ধনবাড়ীর হামেদ উদ্দিন

হাফিজুর রহমান.টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধি::
ভূমিহীন পরিচয়টি খুব কষ্ট দিত সত্তরর্ধ্ব আবদুল হামেদ উদ্দিনকে। তিনি দিনমজুরি ও ছনের ঘর ঝাড়– তৈরী করে বিক্রি করেন। অভাবের সংসারে দিন এনে দিন খেতে চলে যায়। জমি কিনে বাড়ি করার মতো আর্থিক সামর্থ্যও ছিল না। জীবনের প্রায় অর্ধেকের বেশী সময়ই ধরে থাকছেন অন্যের আশ্রয়ে। সেই হামেদ এর দুঃখ ঘুচতে যাচ্ছে আজ। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় তিনি একটি আধা পাঁকা ঘর সহ দুই শতাংশ জমির মালিক হয়েছেন তিনি। তবে, শত কষ্টের মাঝে খুশির খবরও দিয়েছেন তিনি কারণ, নিজের ঘর জমি না থাকায় নিজের স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। তবে তিনি এখন প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘর পেয়ে এখন সে আবারো সুখে দুখে পাশে থাকার মত একজন জীবন সঙ্গী খুঁজছেন। বিয়ে করার স্বপ্ন দেখছেন বলেও তিনি জানান।

সরেজমিনে গিয়ে কথা হলে এমন করেই জীবনের কষ্টের কথা বলতেছিলেন টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলার যদুনাথপুর ইউনিয়নের মমিনপুর গ্রামের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্ধা হামেদ উদ্দিনের সাথে। এমন জীবনের গল্প রয়েছে আশ্রয়ণ প্রকল্পের অনেক বাসিন্ধাদের।

ধনবাড়ী উপজেলায় ঘর সহ ২ শতাংশ করে জমি পেয়েছেন ২৬৪ জন ভূমিহীন পরিবার। এর মধ্যে যদুনাথপুর ইউনিয়নের মমিনপুর গ্রামের এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে জমি ও ঘর পেয়েছে ১৬টি পরিবার।

মঙ্গলবার(২১ মার্চ২৩)ইং সকালে সেখানে গিয়ে আরও অনেকের অজানা গল্পগুলো জানা গেল। যেমন,জীবনে কোন দিন ভাবিনি পাঁকা দালান ঘর নিজের নামে জমি করতে পারমু। তবে স্বপ্ন ছিলো জমি সহ পাঁকা দালানের মালিক হয়ে স্বামী সন্তান নিয়ে দু-বেলা দু মুঠো খাবার খেয়ে শান্তিতে ঘুমানোর ঠিকানা। কিন্তু সেই স্বপ্ন এখন বাস্তব করে ২শতাংশ জমি সহ ১ পাঁকা বাড়ী দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখের বেটি হাসিনা। প্রাণ খুইল্যা দোয়া করি শেখ হাসিনার জন্য তারে আমরা আবারো সবাই ভোট দিমু নৌকায় আবারো যেন আল্লাহ তালা সরকার বানায়। শেখ হাসিনার আমলে অনেক সুখে শান্তিতে আছি। আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্ধাদের জন্য সরকার আধা পাঁকা ঘর সহ ২ শতাংশ জমি দিয়েছেন নিজের নামে। তাঁর ঘরে ঢুকে দেখা গেল, একটি রুমের দরজা নতুন পর্দা দিয়ে সাজানো, সাথে একটি স্টিলের বাক্স, ও রুমের ভিতরে গ্যাসের চুলায় রান্না হচ্ছে। নতুন ঘর পাওয়ায় খুশিতে তিনি স্টিলের বাক্সের সাথে মিল রেখে একই রংঙের টেবিলের উপরের পর্দা বসিয়েছেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা হাবীবুর রহমান সুমন জানান, উপজেলায় ঘর সহ ২ শতাংশ করে জমি পেয়েছেন ২৬৪ জন ভূমিহীন পরিবার। এর মধ্যে যদুনাথপুর ইউনিয়নের মমিনপুর গ্রামের এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে জমি ও ঘর পেয়েছে ১৬টি পরিবার। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে তার কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দুর্যোগ ও ত্রান ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সকল ধরণের সহযোগীতা করা হয় । সেই সাথে প্রত্যেক উপকার ভোগীদের ঘরে বিদুৎ লাইন সংযোগ করে দেওয়া হয়েছে। দুটি ব্লকে দুটি বিশুদ্ধ পানির নলকূপ স্থাপন করে দেওয়া হয়েছে। এবং কী বুববার(২২ মার্চ২৩)ইং উপজেলার আরো ১০ টি পরিবারের মাঝে জমি সহ ঘরের দলিল হস্তান্তর করা হবে। এই হস্তান্তর কার্যক্রম ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি ফারাহ ফাতেহা তাকমিলা জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা এক ইি জমি যাতে ফাঁকা না থাকে । সে লক্ষ্যে সারাদেশের আশ্রয়ণ প্রকল্পের কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ধনবাড়ী উপজেলায় ভূমিহীন পরিবারদের কে ঘর সহ জমির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই সকল ঘর পেতে কোন প্রকার অনিয়ম দুর্নীতি হয় নাই। সার্বক্ষণিক উপজেলা প্রশাসন থেকে আমরা খোঁজ খবর রাখছি। কিছুদিন পূর্বে আমাদের টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার স্যার এই আশ্রয়ণের বাসিন্ধাদের মাঝে এসেছিলেন। তিনিও সার্বক্ষণিক এই আশ্রণ প্রকল্পের বাসিন্ধাদের খোঁজ খবর রাখছেন।

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুনার রশিদ হীরা জানান, আমাদের ধনবাড়ী উপজেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন স্থানীয় সংসদ সদস্য বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক এমপি’র মাধ্যমে সেগুলো বাস্তবায়ন হচ্ছে। আমরা কৃষিমন্ত্রীর নেতৃত্বে সঠিকভাবে আশ্রয়ন প্রকল্পের ঘর সহ জমি অধিগ্রন ও সরকারের সকল কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।

ধনবাড়ী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: আসলাম হোসাইন বলেন, সরকারের দেয়া পাঁকা বাড়ী ও জমি পেয়ে খুশি এই আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্ধারা। এখানে বিদুৎ, বিশুদ্ধ পানি, ও স্যানিটেশন সহ উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পারিবারিক পুষ্টি বাগান ও হর্টি কালচার সেন্টার থেকে ফলজ গাছের চারা বিতরণ করা হয়েছে। পাশাপাশি সরকারী সকল ধরণের সহযোগীতা করা হচ্ছে।

এই আআশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে এসব পরিবার ছিন্নমূল জীবন থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে এমন টাই প্রত্যাশা সকলের।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *