ঢাকা মেডিকেলে চান্স পাওয়ায় মেধাবী শিক্ষার্থী রাতুলকে সংবর্ধনা

এম এ আলিম রিপন,সুজানগর(পাবনা)ঃ ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ১৭৬তম হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় মথুরাপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জেএসসি ও এসএসসি পাশ করা দরিদ্র পরিবারের সন্তান মেধাবী শিক্ষার্থী রাতুল হাসানকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। শনিবার মথুরাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মেধাবী ওই ছাত্রকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তার হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন পাবনা-২ আসনের সংসদ সদস্য আহমেদ ফিরোজ কবির এবং বেসরকারি টেলিভিশন মালিকদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স-অ্যাটকোর সভাপতি ও স্কয়ার ফুড অ্যান্ড বেভারেজ লিমিটেডের পরিচালক বীর মুক্তিযোদ্ধা অঞ্জন চৌধুরী পিন্টু। অত্র বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল ওহাব এর সভাপতিত্বে সংবর্ধনা এবং শেখ রাসেল স্মৃতি ফুটবল ও ক্রিকেট টুর্নামেন্টের সমাপনী অনুষ্ঠানে পাবনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আ.স.ম. আব্দুর রহিম পাকন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার হাবিবুর রহমান হাবিব,সুজানগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহীনুজ্জামান শাহীন, বেড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল হক বাবু, আটঘরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তানভীর ইসলাম, জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি মনির উদ্দিন আহমেদ মান্না, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক কামরুল হাসান মিন্টু, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন সম্পাদক কামরুজ্জামান উজ্জল, সুজানগর পৌর মেয়র রেজাউল করিম রেজা, জেলা আ.লীগের সদস্য আনিসুজ্জামান দোলন, মোস্তাক আহমেদ আজাদ, জেলা আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক আলী মূর্তজা বিশ্বাস সনি, যুগ্ন আহ্বায়ক শিবলী সাদিক, জেলা আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জি.রুহুল আমিন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শাহাদত হোসেন, সুজানগর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান কল্লোল ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছাঃ মর্জিনা খাতুন, দুলাই ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম শাহজাহান, তাঁতীবন্দ ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মতিন মৃধা, ভাঁয়না ইউপি চেয়ারম্যান আমিন উদ্দিন, মানিকহাট ইউপি চেয়ারম্যান শফিউল ইসলাম, রাণীনগর ইউপি চেয়ারম্যান জিএম তৌফিকুল আলম পিযুষ, আহম্মদপুর ইউপি চেয়ারম্যান কামাল হোসেন মিয়া, সাগরকান্দি ইউপি চেয়ারম্যান শাহীন চৌধুরী, সাতবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন, জাতসাখিনী ইউপি চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ,মথুরাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের, পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি ফেরদৌস আলম ফিরোজ, উপজেলা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান,স্বেচ্ছাসেবকলীগের যুগ্ন আহ্বায়ক ফজলুল হক চাঁদু, পৌর যুবলীগের সভাপতি জুয়েল রানা, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম তমাল ও সাধারণ সম্পাদক শেখ তুষার সহ বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় রাতুলের টেস্ট স্কোর ছিল ৮০ দশমিক ২৫ মেরিট স্কোর ২৮০ দশমিক ২৫ । তার ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র ছিল পাবনা মেডিকেল কলেজ। রাতুল হাসান সাধারণ এক দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান। কৃষক বাবা সহ পরিবারের সবার মুখ উজ্জ্বল করেছেন তিনি। ছোটবেলা থেকে রাতুলের মেডিকেলে পড়ার স্বপ্ন এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে। নিজের চেষ্টায়, পরিবারের সদস্যদের এবং চাচা আনোয়ার হোসেন লিটন ও মামা আব্দুর রাজ্জাক সহ শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় অদম্য মেধাবী এ শিক্ষার্থী নিজেকে নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। কোন বাঁধাই যেন দমিয়ে রাখতে পারেনি প্রত্যন্ত গ্রাম অ লে বেড়ে উঠা রাতুলের শিক্ষা জীবনের পথ চলাকে। অদম্য সেই রাতুল এবার ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। রাতুল পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার তাঁতীবন্দ ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অ ল বাড়ইপাড়া গ্রামের এক অতি সাধারণ পরিবারের সন্তান। বাবা মো.মনোয়ার হোসেন পেশায় একজন সাধারণ কৃষক ও মা মোছাঃ রেবেকা খাতুন গৃহিনী । দুই ভাইয়ের মধ্যে রাতুল বড়। ছোটবেলা থেকেই তিনি অদম্য মেধাবী ছিলেন। রাতুল বাড়ইপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১৪ সালে প ম শ্রেণীতে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপর মথুরাপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৭ সালে জেএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হন। এরপর ২০২০ সালে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি পাশ করেন। এসএসসি পাশ করার পর পাবনা সরকারি এডওয়ার্ড কলেজে ভর্তি হয়ে ২০২২ সালে এইচএসসি পরীক্ষায়ও তিনি জিপিএ-৫ পান। এছাড়া রাতুল শিক্ষাজীবনে সরকারি বৃত্তি সহ বিভিন্ন মেধা নির্বাচনী পরীক্ষায় কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জন করে। রাতুল বলেন, ঢাকা মেডিকেলে চান্স পাওয়ায় প্রথমেই মহান আল্লাহতায়ালার শুকরিয়া আদায় করছি। ছোটবেলা থেকেই আমার স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। আর সেই লক্ষ্যে আমি লেখাপড়া চালিয়ে গিয়েছি। সরকারি মেডিকেলে চান্স পেয়ে সত্যিই খুব ভালো লাগছে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, আমি যাতে একজন আদর্শবান ডাক্তার হয়ে নিজ গ্রামসহ আমাদের উপজেলার দরিদ্র অসহায় মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারি। এছাড়া তিনি আরো বলেন,আমি সাধারণ কৃষক পরিবারের একজন সন্তান হওয়ায় নিজে লেখাপড়ার পাশাপাশি মাঠে বাবার কৃষি কাজেও সহযোগিতা করতাম। মথুরাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল কাদের বলেন, রাতুল খুবই মেধাবী ছাত্র। সে জেএসসি এবং এসএসসি পরীক্ষায় আমাদের প্রতিষ্ঠান থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছিল। তার কৃতিত্বে আমরা গর্বিত। এর আগেও প্রত্যন্ত অ লের এ মথুরাপুর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পড়াশুনা করে মেধাবী ছাত্র সেলিম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সহ অনেক শিক্ষার্থী দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের চান্স পেয়েছিল। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল ওহাব বলেন, রাতুল শুধু তার পরিবার নয় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও গ্রামবাসীর মুখও উজ্জল করেছে।। তার মা এই বিদ্যালয়েই পড়াশুনা করেছে। এবং বর্তমানে রাতুলের একমাত্র ছোট ভাইও এই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীতে পড়াশুনা করছে । তার শ্রেণী রোল ০১।

এম এ আলিম রিপন
সুজানগর(পাবনা)প্রতিনিধি।।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *