January 15, 2025, 6:20 am
মোহাম্মদ বাবুল হোসেন পঞ্চগড়
২০১৫ সালে ছিটমহল বিনিময়ের পর পঞ্চগড় সদর উপজেলার বিলুপ্ত গাড়াতি ছিটমহলের প্রবেশ মুখেই গড়ে তোলা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আলীম মাদ্রাসা মাদ্রাসাটির নামকরণ করেন মফিজার রহমান নিজেই বড় আশা করি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সভাপতি দায়িত্বে রয়েছেন দায়িত্বে রয়েছেন এর মধ্যে ঐশ্বরিক ক্ষমতার বলে অধ্যক্ষ মোজাম্মেল কমিটি নিয়ে তেলেসমাতি কারবার শুরু হয়
শিক্ষক কর্মচারীদের পরিশ্রমে সাফল্যে দেখা মাদ্রাসাটিতে অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক শিক্ষক ও কর্মচারির হাজিরা খাতা গায়েব করার অভিযোগসহ মাদ্রাসা পরিচালনাতেও রয়েছে তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ।
সম্প্রতি গত ২২ শে ফেব্রুয়ারি অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মাদ্রাসাটির প্রতিষ্ঠাতা ও ছিটমহল বিনিময় সমন্বয় কমিটির সাবেক সভাপতি মফিজার রহমান।
অভিযোগে তিনি জানান, অধ্যক্ষ পূর্ণাঙ্গ ম্যানেজিং কমিটি নেই এডহক কমিটি মাদ্রাসা পরিচালনা করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে । মফিজার রহমান বলেন আমি বাংলাদেশ ভারতের সমন্বয় কমিটির সভাপতি ছিলাম তৎকালীন সময়ে আন্দোলনে সমাবেশ মিটিংয়ে বক্তব্য দিয়েছিলাম কোন একদিন সিট মহল স্বাধীন হলে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি ধরে রাখার জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে নামকরন করব পরবর্তীতে দিন হওয়ার পরে এলাকাবাসী সহ ও সকলকে আলোচনা কালে উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে আমাকে দায়িত্ব নেওয়ার দাবি ও আপত্তি জানায় তথাপিও অধ্যক্ষ মোজাম্মেল মাদ্রাসা পরিচালনায় বিভিন্ন অনিয়ম ও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় এন কারণে মাদ্রাসাটি অচল অবস্থা কর্মাগত এগিয়ে চলছে এন অবস্থা থেকে উত্তোলনের একমাত্র মাদ্রাসাটির শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মচারী ও এই মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীদের অভিভাবকগণ সহ সকলের মনোনীত প্রার্থীগণকে নিয়ে পূর্ণাঙ্গ ম্যানেজিং কমিটি গঠনের জন্য একটি অভিযোগ করেন।বিষয়টি আপনার জন্য পঞ্চগড় সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম প্রামাণিক সাথে একাধিক বার অফিসে গেলে খুঁজে পাওয়া যায়নি মোবাইলে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি ।
মফিজার রহমান অভিযোগে উল্লেখ করেন, অসত্য তথ্য প্রদান, তথ্য গোপন করা ‘বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮’ এর অনুচ্ছেদ ১৭.৩ এর পরিপন্থি। ১৭.৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে পূর্নাঙ্গ ম্যানেজিং কমিটি গঠণ না হওয়া পর্যন্ত উপজেলা শিক্ষা অফিসার সভাপতির স্থলে স্বাক্ষর করবেন। কিন্তু এসব নীতিমালা তোয়াক্কা না করে অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক কোন ক্ষমতাবলে গোপনে ম্যানেজিং কমিটি গঠনের চেষ্টা করছে তা বোধগম্য না। ইতিপূর্বেও এই অধ্যক্ষের বিভিন্ন দুর্নীতি ও ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন সংশ্লিষ্ট সকলে ।
মফিজার রহমান বলেন, আমি ছিটমহল স্বাধীন করে পরবর্তীতে এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করি। অথচ আমার অগোচরে অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক ধারাবাহিক ভাবে বিভিন্ন অনিয়ম ও ষড়যন্ত্র করেই চলছেন। এখনি তার ষড়যন্ত্রের লাগাম টেনে ধরতে না পারলে ভবিষ্যতে এই মাদ্রাসা শিক্ষা কার্যক্রম হুমকির মুখে পড়বে বলে মনে করি।
জানা গেছে, ছিটমহল বিনিময়ের পর পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের বিলুপ্ত গাড়াতি ছিটমহলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আলিম মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন ছিটমহল আন্দোলনের নেতা মফিজার রহমান। প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে মাদ্রাসাটিতে তার অবদান অসামান্য। এবতেদায়ী, দাখিল ও আলীম স্তরে মোট ৫৪ জন শিক্ষক-কর্মচারি নিয়ে পথচলা শুরু করে মাদ্রাসাটি। সকলের আন্তরিকতায় মাদ্রাসাটি সাফল্য পেতে শুরু করে। প্রতি বছর দাখিল ও আলিম পরীক্ষায় উল্লেখযোগ্য ফলাফল। সম্প্রতি মাদ্রাসাটি এমপিওভুক্ত হয়েছে।
মাদ্রাসার শিক্ষকরা জানান, মাদ্রাসাটি এমপিওভুক্ত হওয়ার পর থেকেই অধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক নানান ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। পুরনোদের বাদ দিয়ে নতুন করে নিয়োগ বাণিজ্য করতে চাচ্ছেন তিনি। তারা অভিযোগ বলেন, আমরা প্রতিষ্ঠানটিকে শুরু থেকে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছি। অথচ অধ্যক্ষ মহোদয় আমাদের সঙ্গে কোন পরামর্শ না করেই একক সিদ্ধান্তে চলেন। আমাদেরকে চাকুরিচ্যুত করার নীল নকশা আটছেন তিনি। আমরা ২০১৫ সাল থেকে কর্মস্থলের হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে আসছি। অথচ গত ১৬ ফেব্রুয়ারী মাদ্রাসায় হাজিরা খাতা না পেয়ে উপস্থিতির স্বাক্ষর করতে পারিনি। শুধু তাই নয় অধ্যক্ষ নিয়মিত প্রতিষ্ঠানেই আসেননা, শুধু বাইরে থেকে মাদ্রাসাটি ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করছেন।
মাদ্রাসার সহকারি মৌলবী শিক্ষক নুর নবী বলেন, পড়ালেখা শেষ করে বড় আশা নিয়ে এখানে যোগদান করেছি। অন্য কোথাও চাকরির চেষ্টা করিনি। শুরু থেকেই সময়, শ্রম এবং অর্থ দিয়ে এখানে লেগে আছি। এখন যদি আমার জায়গায় অন্য কাউকে চাকরি দেয়া হয়, তাহলে বেঁচে থাকাই কঠিন হবে।
তিনি বলেন, মারাত্মকভাবে হতাশায় ভুগছি। এরমধ্যেও নিয়মিত প্রতিষ্ঠানে আসতেছি। চাকরিরও বয়স শেষ যে অন্য কোথাও চেষ্টা করবো। গত একবছর ধরে এসব চিন্তা করতে গিয়ে ঘুমাতেও পারছিনা।
কমিটির নীল নকশা তৈরি করার জন্য উপাধ্যক্ষ এরশাদ আলী কাছ ,চাকরির বিলের বিষয়ে পিছনের দেওয়া তারিখ দিয়ে স্বাক্ষর করে নেন অধ্যক্ষ মোজাম্মেল একই ঘটনা রব্বানীর সাথে ও ঘটায় অধ্যক্ষ মোজাম্মেল।
এবিষয়ে মোজাম্মেলের মুঠো ফোনে কথা হলে বলেন কে কি বলে বলুক এগুলো তাদের ব্যাপার।
এদিকে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার
বরাবরে ওই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর পিতা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম পিতা মৃত আফাজ উদ্দিন ইয়ার পাড়া অধ্যক্ষ মোজাম্মেলের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আলিম মাদ্রাসার গোপন কমিটি এবং পছন্দমত প্রার্থী নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করার যে পায়তারা চালাচ্ছে তা বন্ধ করে স্বচ্ছ নির্বাচনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটির গঠনের অনুরোধ/ অভিযোগ করেন।
এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদুল হক এর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তদন্ত চলছে প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।