স্বরূপকাঠির ধলহার মিস্ত্রি বাড়িতে শ্রীশ্রী হরি মন্দির উদ্বোধন

স্বরূপকাঠি(পিরোজপুর) প্রতিনিধি //
“পূর্ণব্রহ্ম শ্রীশ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর তার দ্বাদশ আজ্ঞায় বলেছেন শ্রীশ্রী হরি মন্দির প্রতিষ্ঠা করো” তার সেই আজ্ঞার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে স্বৰ্গীয়া মনমোহিনী মিস্ত্রী মনস্থির করে ছিলেন হরিচাঁদ ঠাকুরের মন্দির স্থাপন করার।তার স্বর্গীয় পুত্র সুবাস চন্দ্র মিস্ত্রী’র শ্রীশ্রী হরি মন্দিরের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করেন তাঁর সহধর্মিণী শ্রীমতি দিপালী রাণী মিস্ত্রী ও তাঁর তিন পুত্র ‘সুশান্ত মিস্ত্রী, সুব্রত মিস্ত্রী, সুজিৎ মিস্ত্রী।
বুধবার ৯ই ফাল্গুন ২২সে ফেব্রুয়ারী রোজ দক্ষিণ ধলহারে মিস্ত্রি বাড়িতে বাগেরহাট জেলার মোড়লগঞ্জের লক্ষীখালির গোপাল সাধুর বংশধর যোগ্য উত্তরসূরী মতুয়া মাতা শ্রীমতি কানন বালা ঠাকুরানী ‘শ্রীশ্রী হরি মন্দির উদ্ভোধন করেন।এ সময় স্বর্গীয় মনমোহিনী মিস্ত্রি ও সুবাস চন্দ্র মিস্ত্রির পরিবারের লোকজন আত্মীয় স্বজন এবং বিভিন্ন উপজেলার মতুয়া সম্প্রদায়ের হাজার হাজার ভক্তরা উপস্থিত ছিলেন। উদ্ভোধনের সময় সুবাস মিস্ত্রির বড় ছেলে সুশান্ত মিস্ত্রি বলেন, মাতামহ স্বৰ্গীয়া মনমোহিনী মিস্ত্রী মনস্থির করে ছিলেন বাড়ীতে হরিচাঁদ ঠাকুরের মন্দির স্থাপন করার, পরবর্তীতে আমার স্বর্গীয় পিতা সুবাস চন্দ্র মিস্ত্রী’র শ্রীশ্রী হরি মন্দিরের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করেন আমার মা শ্রীমতি দিপালী রাণী মিস্ত্রী ও আমারা তিন ভাই, আমি সুশান্ত মিস্ত্রী, সুব্রত মিস্ত্রী, সুজিৎ মিস্ত্রী মিলের তাদের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করি এবং মতুয়া মাতা শ্রীমতি কানন বালা ঠাকুরানী হাত দিয়ে এই শ্রী শ্রী হরি মন্দির উদ্ভোধন করি।
উল্লেখ্য, শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ১৮১২ খ্রিষ্টাব্দের ১১ই মার্চ অবিভক্ত বাংলার গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার ওড়াকাঁন্দির সাফলা ডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার মাতা-পিতার নাম অন্নপূর্ণা বৈরাগী ও যশোমন্ত বৈরাগী। তার প্রতিষ্ঠানিক ভাবে কোন শিক্ষা লাভ করেনি। কিন্তু প্রেম-ভক্তির কথা সহজ-সরলভাবে প্রচার করতেন। বৈষ্ণব বাড়িতে জন্ম হওয়ার কারণে শাস্ত্র আলোচনার মাধ্যমে হিন্দু ও বৌদ্ধ শাস্ত্রের সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেন, বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করার সুযোগে অভিজ্ঞতা জ্ঞান অর্জন করেছিলেন । তার প্রচলিত সাধন পদ্ধতিকে বলা হতো মতুয়াবাদ। তার দুই ছেলে গুরুচাঁদ ঠাকুর ও উমাচরণ ঠাকুর। রুচাঁদ ঠাকুরের পিতা শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের মৃত্যুর পর মতুয়া ধর্মের উন্নতিসাধন, শিক্ষার প্রসারে মনোনিবেশ করেন। শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের জীবনী নিয়ে কবি রসরাজ তারক চন্দ্র সরকার। শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর কলি যুগের শ্রীবিষ্ণু’র একজন বিশেষ অবতার যা তার অনুসারিরা(ভক্তরা) সকলে বিশ্বাস করেন এবং তাকে বলা হয় পতিতপাবন। তাঁর ভক্তরা তাঁকে শ্রীচৈতন্যদেব এবং গৌতম বুদ্ধের যৌথ অবতার বলে মনে করতো। তাঁর প্রচারিত মতুয়া ধর্মে কোনো দেব-দেবীর স্থান নেই। ভক্ত ও অনুসারীদের উদ্দেশ্যে তিনি একটি বাণী প্রচার করেছিলেন ‘মুখে হরি নাম কৃষ্ণ নাম হাতে কাম’। হরিবোল কথাটির অর্থ এখানে শ্রী হরী বিষ্ণু বলা হয়েছে। হরিচাঁদ কখনো নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার কথা বলেননি। হরি চাঁদ ঠাকুর ১২৮৪ বঙ্গাব্দ ১৮৭৭ সালের ২৩ ফাল্গুন মৃত্যু বরন করে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *