November 21, 2024, 9:05 am
আলিফ হোসেন,তানোরঃ
রাজশাহী-১ সংসদীয় আসনে সাধারণ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ দলীয় সাংসদ, রাজশাহী চেম্বার অবকমার্সের সাবেক সভাপতি, সিআইপি, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সম্পাদক এবং সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী গণমানুষের নেতা আলহাজ্ব ওমর ফারুক চৌধুরীকে বিতর্কিত করতে তার বিরুদ্ধে ফের মানহানিকর, মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত খবর প্রচারের অভিযোগ উঠেছে। রাজশাহীর বিতর্কিত ও চিহ্নিত একই সোর্সের বরাত দিয়ে একই গণমাধ্যমে একই গণমাধ্যম কর্মী এই জঘন্য অপকর্ম শুরু করেছে বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।
এদিকে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে জনমনে তীব্রক্ষোভ ও অসন্তোসের সৃষ্টি হয়েছে, উঠেছে সমালোচনার ঝড়। অন্যদিকে দায়িত্বশীল গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীকে
নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়েছে, প্রশ্ন উঠেছে তাদের দায়িত্বশীলতা নিয়েও, বইছে মুখরুচোক নানা গুঞ্জন। সুত্র বলছে, জনগণের সরাসরি ভোটে একটানা তিনবারের নির্বাচিত একজন
সাংসদকে নিয়ে অর্থের বিনিময়ে এমন মানহানিকর ও মিথ্যা বানোয়াট খবর প্রচার দন্ডনীয় অপরাধ বলে মনে করছেন আমজনতা।
জানা গেছে, সম্প্রতি ‘পবিত্র ধর্মীয় গ্রন্থে হাত রেখে নৌকার পক্ষে শপথ করালেন এমপি’ এমন শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর জনমনে এসব ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার সুত্রপাত হয়েছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। সুত্র জানায়, জেলা আওয়ামী লীগের বিবদগামী বির্তকিত এক নেতার প্রলোভনে পড়ে, আওয়ামী লীগের কিছু নেতা ও জনপ্রতিনিধি, দীর্ঘদিন যাবত এমপির বিরোধীতা করার নামে সাধারণ নির্বাচন, জেলা পরিষদ, উপজেলা, পৌরসভা ও ইউপিসহ প্রতিটি নির্বাচনে
নৌকার বিরোধী করে আসছে।কিন্তু নৌকার বিরোধীতা করতে গিয়ে তারা রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রায় জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এখন তারা বুঝতে পারছে মুল স্রোতের বিপরীতে লড়াই করে বেশী সময় টেকা যায় না। এছাড়াও রাজশাহী-১ আসনে ফারুক চৌধুরীর কোনো বিকল্প নাই, তার বিরোধীতা আত্মঘাতীর সামিল। তাদের মধ্যে এমন উপলব্ধি হবার পর তারা স্বেচ্ছায় এমপির কাছে গিয়ে নিজেদের ভুল শিকার করে শোধরানোর সুযোগ চেয়ে প্রতিশ্রুতি দেন। আগামিতে রাজনৈতিক জীবনে তারা আর কখানো নৌকার বিরোধীতা করবেন না। প্রত্যক্ষদর্শী সুত্র জানায়, তাদের এমন প্রতিশ্রুতির প্রেক্ষিতে, সাংসদ তাদের কাছে প্রশ্ন রাখেন। আবারো কোনো বিপদগামীর প্রলোভনে পড়ে আগামিতে আপনারা যে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ বা নৌকার বিরোধীতা করবেন না সেই বিষয়ে আপনারা কতটুকু নিশ্চিত। সাংসদের এমন প্রশ্নের উত্তরে কয়েকজন জনপ্রতিনিধি অতি উৎসাহী হয়ে স্বেচ্ছায়
(প্রতিকী) ধর্মীয় গ্রন্হ হাতে নিয়ে শপথ করেন। অথচ এই সাধারণ ঘটনাকে ফুলিয়ে-ফাপিয় তিলকে তাল করে সাংসদের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হয়।
স্থানীয় রাজনৈতিক বিশ্লেষকগণের অভিমত, এসব খবর সঠিক নয়। কারণ এমপি ইচ্ছে করলেই তাদের তার পক্ষে নিয়ে আশার ক্ষমতা রাখেন না। যদি সেটা সম্ভব হতো তাহলে তিনি বিগত দিনে যতো নির্বাচন হয়েছে, সেসব নির্বাচনে তাদের নৌকাবিরোধীতার সুযোগ দিতেন না। এমনকি এমপির নির্বাচনেও তারা বিরোধীতা করেছেন। কাজেই এমপি যদি তাদের নিজের পক্ষে নেয়ার ক্ষমতা রাখতেন। তাহলে এমপির নিজের নির্বাচনে এমপি তাদের নিজের পক্ষে নিতে শপথ করাতে পারতেন, তাই নয় কি ? এটা তো সহজেই অনুমান করা যায় এর জন্য রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ হবার প্রয়োজন নাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় আওয়ামী লীগের কয়েকজন জৈষ্ঠ নেতা জানান, ওমর ফারুক চৌধুরী টানা তিনবার রাজশাহী-১ আসনের এমপি থাকার কারণে এখানে নেতাকর্মীদের ওপর
তার একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে, ফলে তার কোনো বিকল্প নাই, তিনি আবারো নৌকার টিকেট পাচ্ছেন এটা প্রায় নিশ্চিত। কাজেই জনপ্রতিনিধিদের নিজের পক্ষে রাখতে কোরআন শরিফে হাত রেখে শপথ করানোর মতো কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি। আবার যাদের কথা বলা হয়েছে তারা নিজেরাই যেখানে বলছে এমন ঘটনা ঘটেনি। সেখানে তৃতীয় পক্ষ কেনো এমন ঘটনা প্রমানে মরিয়া ? তাদের নেপথ্যে যারা রয়েছে তারা কারা কি তাদের উদ্দেশ্য ? তাছাড়া কারো ইচ্ছের বিরুদ্ধে কাউকে কোনো শপথ করানো যায় না। এটা এমপিবিরোধী চক্রের অপপ্রচার। বিএনপি-জামায়াতের কাছে আর্থিক সুবিধা নিয়ে তাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্যই আওয়ামী লীগ নামধারী কিছু রাজনৈতিক বেঈমান এসবের নেপথ্যে রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, ‘ওরা শপথ করেছে, ওরাই ভালো বলতে পারবে। এটা কি আমি বলতে পারব ? কেউ কি বলেছে যে তাঁদের লাঠি ধরে শপথ করানো হয়েছে ? আমি কীভাবে বলব কেন শপথ করেছে! তাঁদের মন চেয়েছে, তাঁরা করেছেন। তাঁদের মন চেয়েছে সামনের দিনে ঐক্যবদ্ধ থাকবে, দলের সঙ্গে, নৌকার সঙ্গে থাকবে এবং আমার সঙ্গে থাকবে, এটাও বলেছেন।’ সংসদ সদস্য আরও বলেন, ‘কয়েকজন আগে আমার বিরোধিতা করেছে। সেই জন্যই তাঁরা মনে করেছে, তাঁদের শুদ্ধ হওয়া দরকার, শপথ নেওয়া দরকার। তবে কাউকে জোর করে শপথ করানো হয়নি।’ কাউকে জোর করে শপথ করানো যায় না।#