গোপালগঞ্জ বশেমুরবিপ্রবিতে কর্মচারী নিয়োগের নামে লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ

বাদাল সাহা,
স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মাস্টাররোলে কর্মচারী নিয়োগ দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে একটি সিন্ডিকেট। গত কয়েকদিন ধরে আকাশ শিকদারকে চাকরির জন্য চার লাখ টাকার ব্যাংক চেক দেয়ার ছবি ও অসংখ্য ক্ষুদে বার্তার স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

এসব কল রেকর্ডে এক ব্যক্তি ও তার স্ত্রীর সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের বরখাস্ত হওয়া কর্মচারী আকাশ শিকদারসহ একাধিক কর্মচারীর টাকা লেনদেনের বিষয়ে কথা বলতে শোনা যায়। এ পর থেকেই বিসযটি টক অব দ্যা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিনত হয়েছে। চলছে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড়।

জানাগেছে, এক ব্যক্তিকে মাস্টাররোলে চাকরি দেয়ার কথা বলে চার লক্ষ টাকা নেন আকাশ শিকদার। তার সাথে জড়িয়ে পড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত একাধিক ব্যক্তি। শুধু এক ব্যক্তির থেকেই ৪ লাখ টাকা নেয়নি চক্রটি। তাদের কথোপকথনের রেকর্ড থেকে দেখা যায় এমন ৪-৫ জনের চাকরির জন্য কাজ করছেন তারা।

এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তীব্র সমালোচনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সরব রেখেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। চলছে আলোচনা আর সমালোচনা।

এদিকে এ ঘটনা স্বীকার করে আকাশ শিকদার টাকা নিয়েছেন জানিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী বলেন, টাকাটা আমি নেইনি। নিয়েছেন আকাশ। আমার ভুল হয়ে গেছে। আমি আর দ্বিতীয়বার এসবে জড়াব না। আমাকে এর মধ্যে জড়িয়ে ফেলেছে ওরা।

এ ঘটনার মূল অভিযুক্ত আকাশ শিকদারকে একাধিকবার মুঠোফোনে কল দেয়া হলে তিনি ফোন বন্ধ করে দেন। নিয়োগ দেয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া এই আকাশ শিকদার ২০২১ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি ৬৩ পিস ইয়াবাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে থেকে গ্রেফতার হন। এরপর তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তবে কর্মচারী সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বেশ কিছুদিন ধরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা যায়।

নাম না প্রকাশ করার শর্তে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে মাদক ব্যবসার মতো অভিযোগ থাকা কিংবা মাদকসহ গ্রেফতার হওয়ার পরও তেমন কিছু না হওয়ায় নিয়োগের নামে টাকা আত্মসাৎ করার সাহস দেখিয়েছে এই কর্মচারী। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের তীব্র সমালোচনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সরব রেখেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবি প্রক্টর ড. মো: কামরুজ্জামান বলেন, কল রেকর্ড শুনে আমি হতভম্ব। বিশ্ববিদ্যালয় পড়াশোনার জায়গা। এটা বাণিজ্যের জায়গা না। দ্রুত তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আমরা ভিসি স্যারের সাথে কথা বলব।

এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে জানিয়ে রেজিস্ট্রার মো: দলিলুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। দ্রুতই তদন্ত কমিটি গঠন করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মিটিংয়ে থাকায় গোপালগঞ্জ সঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি ড. একিউএম মাহবুবের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে তার দফতর থেকে জানানো হয়েছে ফাঁস হওয়া কল রেকর্ড সম্পর্কে ভিসি অবগত হয়ে বিষয়টি নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেছেন। #

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *