May 5, 2024, 10:09 am

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
চারঘাটে পানির স্তর নেমে যাওয়ায় পানির তীব্র সংকট কয়েক যুগ পর নদীর উপর সেতু নির্মাণের উদ্বোধন করাায় এমপির প্রতি খুশী এলাকাবাসী কেমিস্ট এন্ড ড্রাগিষ্ট সমিতি ২০২৪-২০২৬ নির্বাচনে ঔষধ ব্যবসায়ী সম্মিলিত পরিষদের প্রার্থীদের পূর্ণ প্যানেলে ভোট দিন শার্শা উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী অধ্যক্ষের বাড়ির সামনে বোমা বিস্ফোরণ কাছাকাছি কোনও পানির উৎস না থাকায় আগুন নেভাতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস, রাতভর জ্বলবে সুন্দরবন নড়াইলে গাঁজাসহ চারজন গ্রেফতার আসলে এটা রেল লাইন নয় কুষ্টিয়ায় শ্রমজীবী মানুষের মাঝে শরবত, বিশুদ্ধ পানির বোতল ও খাবার স্যালাইন বিতরণ স্বরূপকাঠিতে স্বধীনতা বিরোধীদের মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার তৎপরতা বন্ধের দাবীতে মুক্তিযোদ্ধাদের মানববন্ধন পাইকগাছা বাজারের তৃষ্ণার্ত মানুষের জন্য শীতল শরবত পানির ব্যবস্থা করলেন শুকুরুজ্জামান
নড়াইলের চারদিকে তাকালে যেন সবুজের মাঝে হলুদের সমাহার সরিষা ফুলের মৌ-মৌ সুঘ্রাণ

নড়াইলের চারদিকে তাকালে যেন সবুজের মাঝে হলুদের সমাহার সরিষা ফুলের মৌ-মৌ সুঘ্রাণ

উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে:

নড়াইলের চারদিকে তাকালে যেন সবুজের মাঝে হলুদের সমাহার সরিষা ফুলের মৌ-মৌ সুঘ্রাণ। নড়াইলে সরিষার ফুলে ফুলে দুলছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন
সরিষা ফুলে ফুলে ভরে গেছে ফসলের মাঠ। চারদিকে তাকালে যেন সবুজের মাঝে হলুদের সমাহার। কখনও কখনও সরিষার খেতে বসছে পোকাখাদক বুলবুলি, ফিঙে আর শালিকের ঝাঁক। কিছুটা প্রতিকূল আবহাওয়া সত্বেও সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা এবার ছাড়িয়ে গেছে। এ বছর প্রায় নয় হাজার ২শ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে নয় হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে।
কম সময় ও স্বল্প খরচের বিপরীতে লাভ বেশি হওয়ায় পতিত জমিতে সরিষা উৎপাদনে ঝুঁকেছেন নড়াইলের কৃষকরা। এতে কৃষকদের লাভের পাশাপাশি দেশে ভোজ্যতেলের ঘাটতি মিটবে বলে মনে করছে কৃষি বিভাগ। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান, সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, নড়াইলের বিল অঞ্চলে চলছে সরিষা চাষের বিপ্লব। জেলার সর্বত্র মাঠে মাঠে চোখ জুড়ানো থোকা থোকা হলুদ ফুলের সমারোহ। মাঠগুলো যেন হলুদ চাদরে মোড়া। ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বদলে গেছে প্রকৃতির রূপ। পৌষের বিন্দু বিন্দু শিশির ভেজা মাঠভরা সরিষা ফুলের মৌ-মৌ সুঘ্রাণ ও সৌরভ চারদিকে। সবুজ গাছের হলুদ ফুল শিশির ভেজা শীতের সোনাঝরা রোদে ঝিকমিক করছে। যেন প্রকৃতি সেজেছে হলুদবরণ সাজে। হলুদ রঙের আভার সাথে বাতাসে ভাসছে মৌ মৌ গন্ধ। সরিষা ফুলে মৌমাছিরা গুন গুনিয়ে মধু আহরণ করছে।
নড়াইলের যেকোনো এলাকায় প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে সোনাঝরা ফুলের সীমাহীন মাঠ। আঁকাবাঁকা মেঠো পথ কিংবা ছোট-বড় সড়কের দুপাশে দিগন্ত হারানো হলুদের সমারোহ। হলুদে হলুদে সজ্জিত সরিষার প্রতিটি ফুলে দুলছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন। এমন চোখ জুড়ানো দৃশ্য দেখতে প্রকৃতিপ্রেমীরা ভিড় করছেন, ছবি তুলছেন,ভিডিও ধারণ করে আপলোড করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এছাড়া সরিষা খেতে মধু চাষ করে বাড়তি আয়ও করছেন কৃষক। ফলে সরিষার ব্যাপক ফলনে গ্রামীণ অর্থনীতিতে দিচ্ছে সম্ভাবনার অমীয় হাতছানি।
জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ৯ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করে। মৌসুমের শুরুতে নিম্নচাপের প্রভাবে বৃষ্টি হওয়ায় সরিষা আবাদে লক্ষমাত্রা অর্জনে ঝুঁকি দেখা দেয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাঠকর্মীদের তৎপরতা ও পরামর্শে কৃষকরা আবাদের লক্ষমাত্রার চেয়ে ১৫ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। সূত্রমতে,গত বছর সরিষার বাজারমূল্য আশানুরূপ হওয়া, কৃষি প্রণোদনার আওতায় জেলার কৃষককে বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রদাণ এবং কৃষি বিভাগের তৎপরতার কারণে কৃষকরা বেশি জমিতে সরিষা আবাদ করায় লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল জাতের বারি-১৪ ও বারি-১৫ এবং স্থানীয় জাতের সরিষা জেলায় বেশি আবাদ হয়ে থাকে। সরিষা চাষে প্রতি বিঘা জমিতে ব্যয় হয় ৫-৬ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে প্রতি বিঘা জমিতে ১২-১৫ হাজার টাকা লাভ করা যায়। সরিষা খেতে ‘জাত’ পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য অনুমোদিত কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়। সরিষা খেতে মৌমাছি ও প্রজাপতির আনাগোনা বেশি হলে সহজে পরাগায়ণ হয়। এতে ফলন অনেকাংশে ভালো হয়। ফলন ভালো হলে প্রতি বিঘা জমিতে ৬-৭ মণ সরিষা পাওয়া যায়। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার সরিষার বাম্পার ফলনের মাধ্যমে দিন বদলের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা।
নড়াইল সদরের কাড়ার বিলের সরিষা চাষী আনজুম ইসলাম, রবীন্দ্র নাথ বিশ্বাস ও শরিফুল আলম জানান,‘সাধারণত প্রতিবছর আমন ও ইরি এই দুই ফসলই আমরা কৃষকরা আবাদ করতাম। বাকি বেশিরভাগ সময় জমি পতিত পড়ে থাকত। এবার সেই পতিত জমিতে আমরা কৃষকরা সরিষার আবাদ করেছি। জমিতে সরিষা রোপণ করা থেকে শুরু করে পরিপক্ব হওয়া পর্যন্ত সময় লাগে দেড় থেকে দুই মাস। এছাড়া সরিষা চাষে রোপণ থেকে শুরু করে পরবর্তীতে বাড়তি তেমন কোনও খরচ নেই। শুধুমাত্র জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয়। এতে বাড়তি কোনও সেচ দিতে হয় না, যার ফলে সরিষা চাষে আমরা কৃষকরা বেশ লাভবান হচ্ছি। এবছর সরিষার গাছ ভালো হয়েছে। ভালো ফুল ফুটেছে বলে ভালো ফলনও আশা করা যায়।
নড়াইল জেলা কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দীপক কুমার রায় বলেন, জেলার তিনটি উপজেলায় এবার ৯ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ হয়েছে ৯ হাজার ২১৫ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছে। ভোজ্যতেলের আমদানি কমানোর লক্ষে পরিকল্পিতভাবেই দেশে সরিষার আবাদ বাড়ানো হচ্ছে তেলের ক্ষেত্রে দেশকে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার অংশ হিসেবেই সরিষার চাষ বাড়ানো হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সরিষা চাষ করে মানুষ শুধু তেল-ই তৈরি করে না। এই সরিষা ভাঙ্গিয়ে খৈল ও গাছ থেকে ভূষি তৈরি হয় যা গরুর ভালো খাদ্য এবং ভালো জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। তার মতে, প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে এবার বাম্পার ফলন হবে বলে তিনি আশা করছেন। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD