এস.এম.সাইফুল ইসলাম কবির, বিশেষ প্রতিনিধি:
বাংলাদেশের রাজনীতি ও গণতন্ত্রের অমর প্রতীক, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া আজ ৩০ ডিসেম্বর ভোর ৬টায় ঢাকার এভার কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
তার মৃত্যু দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে গভীর শোকের ছায়া ফেলেছে। দেশের রাজনীতি, গণতন্ত্র এবং সাধারণ মানুষের জন্য এটি এক অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এই ক্রান্তিকালে বাংলাদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক মানুষ যেন এক মুহূর্তের জন্য থমকে গেছে, অনুভব করছে একজন অদম্য নেত্রীকে হারানোর বেদনাদায়ক শূন্যতা।
বাগেরহাটে শোকের ছোঁয়া
বাগেরহাট-৪ (মোরেলগঞ্জ-শরণখোলা) সংসদীয় আসনের বিএনপির মনোনীত প্রার্থী বাবু সোমনাথ দে মরহুমার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। মঙ্গলবার (৩০ ডিসেম্বর) সকালে মোরেলগঞ্জ পৌর ও উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত শোক সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সকল স্তরের নেতা-কর্মীরা। সভার সভাপতিত্ব করেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি শহিদুল হক বাবুল।
শোক সভায় প্রধান অতিথি বাবু সোমনাথ দে বলেন:
“দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য আজীবন সংগ্রাম করে যাওয়া আপসহীন নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকাল জাতির জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তিনি ছিলেন গণতন্ত্রের প্রতীক, স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের অবিসংবাদিত নেতা। তার নেতৃত্ব, সাহস ও ত্যাগ চিরকাল জাতির মনে থাকবে। আজকের এই শোক শুধুমাত্র বিএনপির নয়, এটি পুরো দেশের শোক। দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক মানুষ তার মৃত্যুতে ব্যথিত।”
শোক সভায় আরও বক্তব্য রাখেন পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল মজিদ জব্বার, নেতা মোঃ আফজাল হোসেন জমাদ্দার, নেতা মতিউর রহমান বাচ্ছু, পৌর বিএনপির সভাপতি শিকদার ফরিদুল ইসলাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক হোসেন সামাদ, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিলন সহ বিএনপির সকল অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। যুবদল, ছাত্রদল, শ্রমিকদল, সেচ্ছাসেবকদল, তাঁতি দল ও মৎস্যজীবী দলের নেতাকর্মীরাও শোক প্রকাশ করেন।
বাবু সোমনাথ দে মরহুমার রুহের মাগফিরাত কামনা করে বলেন:
“আজ আমরা শুধু এক নেত্রীকে হারাইনি; হারালাম একটি আদর্শ, হারালাম দেশের গণতন্ত্রের এক অবিচ্ছেদ্য প্রতীককে। তার দৃষ্টান্ত ও সংগ্রাম নতুন প্রজন্মকে পথ দেখাবে। আমরা সবাই মহান আল্লাহর দরবারে মরহুমার জন্য দোয়া করি।”
বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক জীবন
বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক অমর নাম। তিনবারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশের নেতৃত্ব প্রদান, কঠোর ও আপসহীন নীতি-নৈতিকতা, এবং গণতন্ত্রের রক্ষায় তার অবদান দেশের মানুষের মনে অম্লান। তিনি ছিলেন স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের এক অদম্য নেতা, যার সাহস ও দৃঢ়তার জন্য তিনি সমালোচনা ও সমর্থন উভয়েই সমানভাবে সম্মানিত ছিলেন।
তার নেতৃত্বে বিএনপি দেশের রাজনীতি ও প্রশাসনে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। তিনি নারী নেতৃত্বের এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, যা নতুন প্রজন্মকে প্রেরণা জোগাবে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক নেতা নয়, তিনি ছিলেন দেশের মানুষের জন্য এক আদর্শ ও প্রতিশ্রুতিশীল ব্যক্তিত্ব।
দেশজুড়ে শোকের আবহ
বাগেরহাটসহ সারাদেশে বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে শোকের আবহ বিরাজ করছে। বিভিন্ন স্থানে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন, শোক পতাকা উত্তোলন, প্রার্থনা ও দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে। স্থানীয় মানুষও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার নেতৃত্ব, সাহস এবং দেশের জন্য দেওয়া ত্যাগ স্মরণ করছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই ক্ষতি একটি শূন্যতা তৈরি করেছে, যা সহজে পূরণ করা সম্ভব নয়। বেগম খালেদা জিয়ার অবদান শুধুমাত্র রাজনৈতিক নয়, এটি গণতন্ত্র, নারী নেতৃত্ব এবং দেশপ্রেমের এক জীবন্ত দৃষ্টান্ত।
আহ্বান ও সম্মিলিত শোক
বাগেরহাটে অনুষ্ঠিত শোক সভায় সকল স্তরের নেতা-কর্মীরা দেশের নাগরিকদের একজোট হয়ে মরহুমার আত্মার শান্তি কামনা করতে এবং দেশের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষায় দৃঢ় সংকল্পী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মৃত্যু বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক যুগের সমাপ্তি নির্দেশ করছে, কিন্তু তার ত্যাগ, সাহস ও নেতৃত্ব চিরকাল দেশের মানুষের মনে অম্লান থেকে যাবে।
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালে বাবু সোমনাথ দে’র গভীর শো-ক

Leave a Reply