এম এস সাগর,
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা খাদ্যগুদামে চাষির নাম ব্যবহার করে ধান সরবরাহ প্রভাবশালীদের। চাল বিক্রিতে কেজিতে ৩০পয়সা হারে কমিশন নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল আউয়ালের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা খাদ্যগুদামে স্থানীয় আভ্যন্তরীণ আমন ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযান ২০২৫-২৬খ্রী. অর্থবছর হিসেবে ২৬নভেম্বর থেকে শুরু হয়ে ধান-চাল সংগ্রহ অভিযান চলে ২২ডিসেম্বর পর্যন্ত। এই সময়কালে ফুলবাড়ী খাদ্যগুদামে সংগ্রহ করা হয় ১১০মেট্রিক টন ধান ও চাল। কাগজে-কলমে বলা হয়েছে ৩৬জন প্রান্তিক চাষি এই পরিমাণ ধানের জোগান দিয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, ধানের তালিকায় চাষিদের নাম থাকলেও খাদ্যগুদামে বিক্রি করেননি এক ছটাক ধান। তাঁরা জানেনও না, কে বা কারা তাঁদের নাম ব্যবহার করে ধান সরবরাহ করেছেন। আবার চাল বিক্রির সময় মিলারদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে কেজিতে ৩০পয়সা হারে কমিশন। অনেকটা ওপেন-সিক্রেটে এমন অনিয়মের সঙ্গে ধান-চাল সংগ্রহ করেছেন খাদ্যগুদামের কর্মকর্তারা।
অনুসন্ধানে মিলেছে, চাষিদের নাম ব্যবহার করে ভুয়া তালিকা দেখিয়ে গুদামে ধান সরবরাহ করেছেন হাতেগোনা ৫-৬জন প্রভাবশালী মধ্যস্বত্বভোগী। উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল আউয়ালের যোগসাজশে সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ীরা এসব ধান সরবরাহ করেছেন। এমনকি তাঁরা চাষিদের নাম ভাঙিয়ে কৌশলে ধানের দামও তুলে নিয়েছেন।
ফুলবাড়ীর নাওডাঙ্গা, শিমুলবাড়ী, ভাঙ্গামোড় ইউনিয়নের আদম আলী, আঃ রহমান, মনির উদ্দিন, আঃ সবুর, জয়নাল আলী বলেন, আমরা গোডাউনে ধান বিক্রি করতে গেলে বিক্রি করতে পারি না। নানা কারণে ধানের খুঁত ধরে রিজেক্ট করে দেওয়া হয়। এ জন্য কয়েক বছর ধরে ধান দিই না। কিন্তু এবারের তালিকায় আমাদের নাম আছে কি-না জানি না।
শুধু তাই নয়, এবার মিলারদের কাছ থেকেও চাল কেনার সময় কেজিপ্রতি বসানো হয়েছে ৩০পয়সা হারে কমিশন। কমিশন বাণিজ্যে রাজি না হলে হয়রানির অভিযোগও রয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মিলের মালিক জানান, গুদামে চাল বিক্রির সময় কমিশন বাণিজ্য অনেকটাই ওপেন-সিক্রেট। এ বছর কেজিপ্রতি চালে ২০থেকে ৩০পয়সা হারে কমিশন নির্ধারণ করা হয়। চাল বিক্রির সময় কর্মকর্তাদের খুশি না করলে নানাভাবে হয়রানি করা নতুন ঘটনা নয়। এবারও তাঁদের খুশি করতে কমিশন দিতে হয়েছে। না হলে ট্রাকভর্তি চাল দিনের পর দিন পড়ে থাকে।
উপজেলা খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল আউয়াল বলেন, অফিসে আসেন কথা হবে বলেই মুঠোফোন ফোন বন্ধ করে দেন।
কুড়িগ্রাম জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ কাজী হামিদুল বলেন, ‘এ বিষয়টি উপজেলা কর্মকর্তাই ভালো বলতে পারবেন। এই দায় আমার নয়।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক অন্নপূর্ণা দেবনাথ বলেন, অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

Leave a Reply