ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা)।।
পাইকগাছার গ্রামাঞ্চলে তীব্র শীতে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছে মানুষেরা।শীতের সকালে খড়-কুটো দিয়ে আগুন পোহানো গ্রামের প্রাকৃতিক দৃশ্য। পৌষের শীতে সবাই গরমের পোশাকে জবুথবু।অনেকের পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র না থাকায় শীতে কস্ট পায়। তাদের সূর্য ওঠার সঙ্গে-সঙ্গে বাড়ির আঙিনায় সকাল সন্ধ্যায় আগুন পোহানোর দৃশ্য দেখা যায়। প্রচণ্ড শীতে আগুন পোহানোর দৃশ্যটি সবার কাছে পরিচিত, সেটা হলো শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে আগুন পোহানো। এটা নতুন কিছু নয় পূর্বে থেকেই। এমন চিত্র শুধু গ্রামেই দৃশ্যমান।খুলনার পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের পাশে মেইন সড়ক তার ধারে গ্রামে বৃদ্ধরা খড়-কুটো দিয়ে আগুন ধরিয়ে চারপাশে ৪-৫ জন মিলে আগুন পোহাতে দেখতে পাওয়া যায়। কেউ দাঁড়িয়ে কেউ বসে, যে, যেভাবে পারছেন আগুনের তাপ পোহাচ্ছেন। শৈত্যপ্রবাহে নাজেহাল অবস্থা সবার। হাড়কাঁপানো ঠাণ্ডায় সবাই জবুথবু- শিশু থেকে বৃদ্ধ সবার একই হাল। শীত থেকে যেন কারও বাঁচার সাধ্য নেই।
এবারে হঠাৎ করেই শীত বেশি পড়তে শুরু করেছে। তার সাথে যোগ হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। শীতের সময় শীত পড়বে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু একনাগাড়ে এতদিন ধরে সাধারণত শৈত্যপ্রবাহ থাকে না। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম হচ্ছে। ফলে তাপমাত্রা দ্রুত নিচে নেমেছে। প্রচণ্ড ঠান্ডা বাতাস বয়ে যাওয়ায় জনসাধারণের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বৃদ্ধ, নারী ও শিশুরা। শীতবস্ত্র ও খাবারের সংকটে হাজার-হাজার দরিদ্র মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। জেলাজুড়ে এক সপ্তাহ শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন তারা।আগুন পোয়াতে আসা শহিদুল ইসলাম বলেন, আগুন তাপানোর আয়োজনটা সাধারণত করে থাকে বাচ্চারাই। যদিও সে আয়োজন উপভোগ করে সবাই। তবে আগুন পোহাতে গিয়ে গাঁয়ের মানুষের দুর্ভোগও কম না। তারপরও শীতের প্রকোপ সহ্য করতে না পেরে মানুষ আগুন পোহায়। শীতের সকাল সন্ধ্যায় আগুন পোহাতে আমরা অনেক আনন্দ পাই। এটা নতুন কিছু নয়, আগুন পোহানো এটা পুরাতন প্রথা। অন্য বছরের তোলনায় এ বছর শীত একটু বেশি। তাই এমনিভাবে প্রতিদিনই গ্রামের ছেলেরা একত্রিত হয়ে আগুন পোহাই। কলেজ শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, দুই- তিন দিন ধরে সূর্যের চোখ দেখা যাচ্ছে না। প্রচণ্ড শীতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে গ্রামের মানুষ।প্রতিদিন বেড়েই চলছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন ক্লিনিকগুলোতে ঠান্ডাজনিত রোগীদের ভিড়। কোথাও কোথাও সরকারি উদ্যোগে কম্বল বিতরণ করা হলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. সুজন কুমার সরকার বলেন, তীব্র শীতে শিশু-বৃদ্ধরা নিউমোনিয়া ও ব্রঙ্কাইটিস, জ্বর, সর্দি কাশি ও শ্বাসকষ্টসহ ঠান্ডাজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। শীতে আগুন পোহাতে বেশি দেখা যায় গ্রামাঞ্চলে। তবে আগুন পোহানো থেকে বিরত থাকাই ভালো। শীতে হাতে পায়ে মোজা ও ৪-৫ টি পাতলা গরম কাপড় পরলে শরীরের জন্য ভালো। প্রায়ই সংবাদপত্রে সে খবর উঠে আসে। পুড়ে দগ্ধ, পুড়ে মৃত্যু পর্যন্ত হয় মানুষের।
প্রেরকঃ
ইমদাদুল হক,
পাইকগাছা খুলনা।

Leave a Reply