হেলাল শেখঃ ঢাকার আশুলিয়ায় ৫৬ রাউন্ড গুলি ও ৩টি অস্ত্রসহ গ্রেফতার হওয়া সেই জলিল ভিন্ন নামে ছাত্র জনতার নিহত পরিবারের আত্মীয় পরিচয় দিয়ে ভুয়া মামলা করার তথ্য ফাঁস। এবার “বেড়িয়ে আসছে থলের বিড়াল”। জলিল নিজের মোবাইল নাম্বার দিয়ে সায়েব আলী সেজে একটি হত্যা মামলা করেছে, যে ঘটনায় সে নিজে আশুলিয়ার রাজু গ্রুপের চেয়ারম্যান রাজু আহমেদের সাথে থেকে সাভার আশুলিয়ায় গুলাগুলি করে। সেই মামলা থেকে নিজেকে রেহাই পেতে নিজে বাদী সেজে সাংবাদিকসহ সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে।
উল্লেখ্য, সাভারের আশুলিয়ায় জমি সংক্রান্ত ঘটনার জেরে এক ব্যবসায়ীকে মারধর করে অপহরণের ঘটনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপের মুলহোতাসহ দুইজনকে আটক করেছে র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল। এ সময় তাদের নিকট থেকে ২টি বিদেশী পিস্তল, ১টি বিদেশী রাইফেল ও ৩টি ম্যাগাজিনসহ ৫৬ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
গত (০৮ নভেম্বর ২০২৩) বিকেলে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন সে সময়ে র্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান। এর আগে ওইদিন মঙ্গলবার (০৭ নভেম্বর ২০২৩ইং ) রাতে আশুলিয়ার চারাবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- সুনামগঞ্জ জেলার সদর থানার দপগ্রাম এলাকার আব্দুল খলিলের ছেলে আব্দুল জলিল (৩০) ও ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলার বাঘের কান্দা এলাকার মৃত শরিফ উদ্দিনের ছেলে লাল মিয়া (৩৩)। তারা উভয়ের আশুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতো। এদের মধ্যে আব্দুল জলিল আশুলিয়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ ও ভূমি দস্যূ একাধিক ভুয়া মামলার ভুয়া বাদী গ্রুপের মুলহোতা বলে জানায় র্যাব।
র্যাব জানায়, একটি অপহরণের অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল আশুলিয়ার চারাবাগ এলাকা থেকে অপহৃত ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে এবং অপহরণকারী চক্রের মূল হোতা জলিল’সহ দুইজনকে আটক করতে সক্ষম হয়। এ সময় জলিলের কাছ থেকে গুলি ভর্তি একটি অবৈধ বিদেশী পিস্তল উদ্ধার করা হয়। পরে এ ঘটনার অধিকতর তদন্তে, অত্যাধুনিক অস্ত্র নিয়ে বিভিন্ন পজিশনে রয়েছে তাদের এ ধরনের চারটি ছবি উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে, ছবিতে দৃশ্যমান অস্ত্রগুলো উদ্ধার করতে র্যাব-৪ অভিযান শুরু করে এবং গুলিসহ আরো দুইটি অত্যাধুনিক বিদেশী পিস্তল এবং রাইফেল উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। উদ্ধারকৃত বিদেশী পিস্তল এবং রাইফেল গুলো রাজু আহমেদ নামের একজনের নিবন্ধিত। যে এলাকায় চাঁদাবাজ ও ভূমিদস্যু হিসেবে পরিচিত। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত জলিল জানায় যে, রাজু তার নামে নিবন্ধিত অস্ত্রগুলো বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রমের জন্য জলিল ও তার সহযোগীদের ভাড়া দিয়ে থাকে।
বর্তমানে বিভিন্ন ভাবে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে রাজুর বৈধ অস্ত্রগুলো জলিলসহ অন্যান্য বিএনপির সন্ত্রাসীদের কাছে ভাড়া দিয়ে অবৈধ ভাবে ব্যবহার হচ্ছিলো। রাজু এ ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রমের লভ্যাংশ ভোগীয় বটে। র্যাবের জিজ্ঞাসাবাদে জলিল আরো জানায় যে, সে বিরোধী রাজনৈতিক দলের একজন সক্রিয় কর্মী, কিন্তু সূত্র জানায় এই জলিল কখনো আওয়ামী লীগ, কখনো বিএনপি, কখনো ২০২৪ এর জুলাই বিপ্লব, কখনো জামায়াতে ইসলামী পরিচয়দানকারী। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে অস্থিতিশীল করতে এবং তার অপরাধমূলক কার্যক্রম নির্বিঘ্নে সংঘটিত করতে জলিল সদা সক্রিয় রয়েছে। সে সময় র্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র, চাঁদাবাজী, ভূমি দখল, মারামারীসহ একাধিক মামলা রয়েছে। ভবিষ্যতে এরূপ অস্ত্রধারী শীর্ষ সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে র্যাব-৪ এর সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান। এই জলিলই ভিন্ন নাম সায়েব আলী তার মোবাইল নাম্বার দিয়ে অপরাধ করছে। এই চক্র সক্রিয় ভাবে লাখ লাখ কোটি কোটি টাকা মামলা বাণিজ্য করছে বলে দেশ টিভি ও যমুনা টিভির ৩৮ মিনিটের নিউজ প্রকাশ করা হয়, যা বিস্তারিত তথ্য আশুলিয়া থানার ওসি সাহেব ও এসআই আনোয়ার হোসেনকে দেয়া হয়।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর ২০২৫ইং) আশুলিয়া থানার (এসআই) আনোয়ার হোসেন জানান, সায়েব আলী জলিলের করা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তিনি, সঠিক ভাবে তদন্ত করে এই ভুয়া বাদীকে গ্রেফতার করার তাকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগীসহ সচেতন মহল।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুবেল হাওলাদারকে তথ্য দেওয়া হলে তিনি জানান নোট করে রাখা হচ্ছে। সঠিকভাবে তদন্ত করে ভুয়া বাদী সায়েব আলী জলিলসহ এই সিন্ডিকেটের সবাইকে গ্রেফতারের জন্য ওসি সাহেবের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন ভুক্তভোগীসহ সাধারণ মানুষ ও সচেতন মহল।

Leave a Reply