গোদাগাড়ীর এক সময়ের আ-লোচিত ইউএনও নাজমুল ইসলাম সরকার হলেন চাঁদপুর জেলার ডিসি

মোঃ হায়দার আলী রাজশাহী থেকেঃ ছেলেকে এক সময়ের রাজশাহীর গোদাগাড়ীর ইউএনও নাজমুল ইসলাম সরকারকে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে পদায়ন করায় গোদাগাড়ীতে বইছে আনন্দের বন্যা। অনেকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে ফেসবুকে ছবি পোষ্ট করেছেন। রাষ্ট্রপতির অনুমতিক্রে উপসচিব
আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষিত স্মারক নং ০৫.০০.০০০০.১৩৯.১৯.০০১.২৫.৪২৩ তারিখ তারিখ ৯/১১/২৫ ইং পরিচালক প্রধান উপদেষ্টার মোঃ নাজমুল ইসলাম সরকার (১৬৫৭৫) কে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে।

মোঃ নাজমুল ইসলাম সরকার ছিলেন গোদাগাড়ীর একজন সৎ, যোগ্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), যিনি ২০২০ সালের জুন মাসে গোদাগাড়ী থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় বদলি হন। তার বদলির পর আলমগীর হোসেন গোদাগাড়ীর ইউএনও হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

তিনি গোদাগাড়ী উপজেলায় ০৮/১২/২০২৯ হতে ০৯/০৬/২০২০ ইং সাল পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন। গোদাগাড়ী উপজেলায় থাকাকালীন বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কার্যক্রম এবং সরকারি দায়িত্ব পালন করেছেন, যেমন বার্ষিক আর্থিক ও প্রশাসনিক প্রতিবেদন ২০১৮-২০১৯ ’ তৈরিতে অবদান রাখেন। তিনি দলীয় বিবেচনায় ভিজিএফ, ভিজিডি, টাবিখার নামের তালিকা বাতিল করে গোদাগাড়ী উপজেলার ৯ টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভায় সরকারী কর্মকর্তাদের ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করে সুবিধাভোগীদের জাতীয় পরিচয় পত্র দিয়ে
অন লাইন ডাটাবেজ তৈরী করেন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হন। ফলে প্রকৃত হকদার গণ এ সুবিধা পেয়ে ছিলেন। রাজনৈতিক ক্যাডার, রাজকীয় পরিবার, পাকা বাড়ী, হোন্ডার মালিক, নেতা, উপনেতা,পাতিনেতাদের কার্ড বাতিল হয়ে যায়। ফলে তিনি নেতা পাতিনেতাদের বিরাগভাজন হয়েছিলেন। এতে তিনি দমে যান নি। তিনি একটি অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যেখানে একটি বাড়ি থেকে ৬৭ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়, যার ফলে একজন আওয়ামী লীগ নেতাকে স্বপনকে আটক করে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল। 
রিশিকুল ইউপির চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম টুলু ৩ জন দুস্থের ভিজিডি কার্ডের সুবিধা আত্নসাৎ করায় তার নিকট হতে ৫ গুন বেশী চাউল আদায় করে তাকে ক্ষমা করেন। এখানে কয়েকজন প্রভাবশালী এমপি, উপজেলা চেয়ারম্যান তদবির করে কোন লাভ হয় নি। তিনি গোদাগাড়ী ও চাঁপাই নবাবগঞ্জ সদর উপজেলায় কয়েকজন মেধাবী শিক্ষার্থী ২০০০ টাকা করে নিজস্ব থেকে মাসিক বৃত্তি দিয়েছেন বলে জানান মহিশালবাড়ী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হায়দার আলী। তিনি বলেন, আমার স্কুলের জন শিক্ষার্থী নিয়মিত পেয়েছে।

তিনি গোদাগাড়ীর প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সহপাঠ্যক্রমিক কার্যক্রমে উৎসাহ দিয়ে ছিলেন। তিনি গোদাগাড়ীর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস বন্ধ করে শিক্ষক কর্মচারীগণ সাফিনা কিংবা রাজশাহীর বিজিবি পার্কে কথিত শিক্ষক মিলন মেলা, পিকনিক করার যে রীতি চালু ছিল সে বন্ধ করার জন্য সকল শিক্ষক নেতাদের মিটিং করে ছুটির দিনে করার জন্য নির্দেশনা দিয়ে শিক্ষাবান্ধব ইউএনও পরিনত হন। এ ধরনের সাহসী ইউএনও দেশে বিরল।

মহিশালবাড়ী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় এর মেধাবী ছাত্রী, ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক রুমি বলেন নাজমুল ইসলাম সরকার স্যার খুব ভাল মনের মানুষ ছিলেন। তিনি পড়া লিখার পাশাপাশি উপজেলার শিক্ষার্থীদের খেলাধুলার ব্যপারে বেশ সচেতন ছিলেন। আমরা রাজশাহীর কালেক্টরেট মাঠে সেমি ফাইনাল ক্রিকেট খেলার জন্য রেডি হচ্ছিলাম তখন স্যার আমাদের সাথে দেখা করেন উৎসাহ দেন এবং ১৭শ টাকা দিয়ে বলেছিলেন আমার বেতনের টাকা দিলাম তোমারা ভালভাবে খেলবে গোদাগাড়ী, রাজশাহী জেলা, তথা দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে। রুমি আরও বলেন, স্যার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সুন্দর গান গায়তেন। আমাদের স্যারের গাওয়া কয়েকটি গান মুখস্থ হয়ে গিয়ে ছিল।

বাসুদেবপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ মজিবুর রহমান বলেন ইউএনও স্যার খুব ভালো ছিলেন ১ পয়সা উৎকোচ নিতেন না কাউকে নিতে দিতে না। তিনিই অফিসে লিখেছেন আমি ও আমার অফিস দুর্নীতিমুক্ত। একই মন্তব্য করেন চয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমএন রিদওয়ান ফেরদৌস, গোগ্রাম আর্দশ বহুমূখি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম।

মোঃ হায়দার আলী
রাজশাহী।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *