ময়মনসিংহ সদরে প্রতি-যোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাবী খুজছে সদর উপজেলা প্রশাসন

আরিফ রববানী ময়মনসিংহ।।
শিক্ষার মানোন্নয়নে সিটি করপোরেশনসহ ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ১১ইউনিয়ন ও ৯ ক্লাস্টারের ১০টি কেন্দ্রে ১৯০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মাঝে মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা চূড়ান্ত ধাপের পরীক্ষা শুরু হয়েছে। আর এই প্রতিযোগিতামোলক পরীক্ষার মাধ্যমে মেধাবীদের খুজছে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা প্রশাসন ।

বৃহস্পবার (৬নভেম্বর) উপজেলা প্রশাসনের সার্বিক তত্বাবধানে ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সহযোগিতায় ৯ক্লাস্টারে একযোগে শুরু হওয়া এই মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতার পরীক্ষার পুলিশ লাইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম। এসময় তিনি পরীক্ষা কেন্দ্র ঘুরে ঘুরে দেখেন। অপর দিকে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মনিরুল হক ফারুক ও উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে আরেকটি টিম নওমহল মডেল স্কল কেন্দ্র সহ বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।

পরে এক মতবিনিময়ে জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বলেন-শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে দেশের ব্যতিক্রমী প্রতিভাধর ও সৃজনশীল ছাত্র-ছাত্রীদের শনাক্ত করতে
তাদেরকে জাতীয় মেধা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া এবং ভবিষ্যতে বিদেশে মেধাবৃত্তির জন্য সুপারিশ করা।
বিজয়ীদের বিশেষ মেধাভিত্তিক বৃত্তি প্রদান করার মাধ্যমে উৎসাহিত করতে মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা পরীক্ষার গুরুত্ব রয়েছে। তিনি বলেন-মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা হলো বাংলাদেশ সরকারের একটি বার্ষিক আয়োজন, যার লক্ষ্য হলো সারাদেশ থেকে প্রতিভাবান শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করা এবং তাদের মেধার বিকাশ ও স্বীকৃতি দেওয়া।

এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল ইসলাম প্রিন্স, সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবু ইউছুফ খান, সহকারী কমিশনার ভূমি সৈয়দা তামান্না হুরায়রা,সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাদ্দাম হোসেন,পরীক্ষার দায়িত্ব পালনকারী ট্যাগ অফিসার ভেটেনারি সার্জন পুলিশ লাইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রতিভা চক্রবর্তী।

জেলা প্রশাসক আরও বলেন, শিক্ষাক্ষেত্রে সার্বিক পরিবর্তন হয়েছে। বাংলাদেশে শিক্ষা ব্যবস্থা অনেক এগিয়েছে। সব পরিবারের ছেলেমেয়েরা এখন স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। তিনি বলেন, শিক্ষাকে একটি সৃজনশীল ধারায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। এজন্য শিক্ষকদের পাঠদানের কৌশল, শ্রেণীকক্ষের পরিবেশ বদলাতে হবে। শিক্ষার লক্ষ্য হচ্ছে, পড়ার আগ্রহ ও মেধা বিকাশের সুযোগ তৈরি করা এবং নিজের শক্তিকে কাজে লাগানোর চেষ্টা করা । শুধুমাত্র পাঠ্যবইয়ের শিক্ষায় নিজেদের সীমাবদ্ধ না রেখে নিজেকে পরিপূর্ণ বিকাশের সুযোগ নিতে হবে।

তিনি বলেন প্রতিটা মানব-সন্তান বিস্ময়কর প্রতিভা নিয়ে জন্মায়। সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করতে পারার মধ্যেই রয়েছে জীবনে সাফল্য কিংবা ব্যর্থতা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের হাত ধরেই আমরা নিজেকে জাগাই, বড় হই। এ ধরনের প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ বাড়াবে উল্লেখ করে তিনি বলেন- এতে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা ছোটবেলা থেকেই প্রতিযোগিতামূলক চেতনায় গড়ে উঠবে।”

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মনিকা পারভীন বলেন, “আজকের এই আয়োজন শিক্ষার্থীদের জ্ঞানচর্চার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তাদের দক্ষতা যাচাইয়ের সুযোগ পেয়েছে, যা ভবিষ্যতে তাদের আত্মবিশ্বাসী হতে সহায়তা করবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল ইসলাম প্রিন্স বলেন-মেধা প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীর জীবনে অনেক সুফল বয়ে আনে। এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস, অধ্যবসায়, মনোযোগ এবং প্রতিযোগিতার মানসিকতা গড়ে তোলে, যা তাদের ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে এবং তা অর্জনে অনুপ্রাণিত করে। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজেদের জ্ঞান, মেধা ও সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটাতে পারে এবং এর ফলে তারা ভালো ফলাফল অর্জন করে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হয়। তিনি বলেন- ছোটবেলায় প্রাথমিকে আমিও এ ধরনের মেধা প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেছিলাম। আমার নিজের অভিজ্ঞতা কে কাজে লাগিয়ে বর্তমান প্রজন্মের শিশুদের আগামী দিনের জন্য তৈরী করে তুলতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামীতে আরো পদক্ষেপ নেওয়া হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল ইসলাম প্রিন্স জানান-দেশের আগামীর স্বপ্ন ও সম্পদদের সঠিক পথে পরিচালিত করতে সুস্থধারার প্রতিযোগিতা ও প্রাথমিক শিক্ষার সার্বিক মানোন্নয়নে উপজেলা প্রশাসন বদ্ধপরিকর।

নওমহল ক্লাস্টারের দায়িত্ব প্রাপ্ত সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার (এটিও) সাদ্দাম হোসেন জানান- ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনসহ উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের ৯টি ক্লাস্টারের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা মেধা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে।তার মাঝে নওমহল ক্লাস্টারের ২৩ স্কুলের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা এই পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। তিনি জানান- তার মাঝে পুলিশ লাইন স্কুল কেন্দ্রে -১৬ টি স্কুলের ৩৬০জন শিক্ষার্থী ও নওমহল মডেল স্কুল কেন্দ্রে ৭,টি স্কুলের ২০১ জন শিক্ষার্থী এই মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *