থানচিতে ভিজিডি/ভিডব্লিউবি নারীদের সঞ্চয়ের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

মথি ত্রিপুরা।
থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি:

বান্দরবানের থানচিতে ভিজিডি ও ভিডব্লিউবি কর্মসূচির উপকারভোগী দরিদ্র নারীদের সঞ্চয়ের টাকা ফেরত না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের অফিস সহকারী প্রয়াত এমরান হোসেনের বিরুদ্ধে।
ভুক্তভোগী নারীরা জানান, ২৩-২৪ চক্রের দুই বছর ধরে প্রতি মাসে ২২০ টাকা সঞ্চয় টাকা জমা নিলেও নির্ধারিত সময়ে সেই টাকা ফেরত না দিয়ে নানা অজুহাতে ঘুরিয়ে দিচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। সম্প্রতি বেশ কয়েকজন উপকারভোগীদের টাকা ফেরত দিলেও ১হাজার ২শত ২৪ জন নারীদের সঞ্চয় টাকা ফেরত না দিয়ে অফিস সহকারী প্রয়াত এমরান হোসেন তাদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন এবং টাকা পরে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন। পরে তিনি হঠাৎ মারা যান।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সচেতন এলাকাবাসীরা সঞ্চয় টাকা ফেরত না পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা দ্রুত তদন্ত করে আত্মসাতের ঘটনার দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

ভুক্তভোগী নারীরা বলেন,
“আমরা দারিদ্র্য থেকে একটু উন্নতির আশায় সঞ্চয় করেছিলাম। এখন সেই টাকাও ফেরত পাচ্ছি না। কর্মকর্তারা শুধু আশ্বাস দিচ্ছেন, কিন্তু টাকা দিচ্ছেন না

এই নিয়ে বলিপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াঅং মারমা বলেন, আমার ইউনিয়নের ১নং ও  ৩নং ওয়ার্ড এবং ২নং ওয়ার্ড আংশিক সঞ্চয় টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। বাকি ৪, ৫, ৬, ৭, ৮, ৯ নং ওয়ার্ড গুলো এখনো সঞ্চয় টাকা পায়নি।
এই নিয়ে থানচি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অংপ্রু ম্রো বলেন, আমার ইউনিয়নের আরো ৬৯ হাজার টাকা সঞ্চয় বাকি রয়েছে, বাকিগুলো সব দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, রেমাক্রি ও তিন্দু ইউনিয়ন পরিষদের ভিজিডি ও ভিডব্লিউবি মহিলাদের সঞ্চয়ের টাকা ফেরত দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা (অঃদা) আয়েশা আক্তার বলেন, আমি বিষয়টি জেনেছি, তবে সঞ্চয় টাকা ফেরত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। অফিস সহকারী হঠাৎ মারা যাওয়ার কারণে তা বিলম্ব হচ্ছে। এখন আমি থানচিতে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছি, উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সাথে আলোচনা করে এ মাসের কাজ শুরু করতে পারলে আগামী মাসে সবার সঞ্চয় টাকা ফেরত দিতে পারবো। সবার সঞ্চয় টাকা অবশ্যই ফেরত দেওয়া হবে।
এই নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ-আল-ফয়সাল বলেন, অভিযোগের সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে। তবে প্রমাণ পেলে প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, ভিজিডি (ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট) ও ভিডব্লিউবি (ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট) কর্মসূচি সরকারের একটি দারিদ্র্য বিমোচন কার্যক্রম, যার মাধ্যমে দরিদ্র নারীদের খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি সঞ্চয়ের মাধ্যমে স্বনির্ভর হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়। একজন মহিলার প্রতি মাসে ২২০ টাকা করে দুই বছরের ৫হাজার ২শত ৮০ টাকা সঞ্চয় জমা দিতে হয়। কিন্তু সেই কর্মসূচির সঞ্চয় টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠায় এখন প্রশ্ন উঠেছে তদারকি ব্যবস্থার স্বচ্ছতা নিয়ে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *