রাজশাহী থেকে মোঃ হায়দার আলীঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় শুক্রবার ও শনিবাবের থেকে শুরু হওয়া অবিরাম ভারী বর্ষণে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। শ শ হেক্টর জমির আমন ধান পানিতে তলিয়ে গেছে। হঠাৎ শুরু হওয়া ঝড় ও বৃষ্টিতে উপজেলার রিশিকুল, পাকড়ী, দেওপাড়া, মাটিকাটা ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ধান, টমেটো, ফুলকপি, পাতাকপি, শাকসবজিসহ মৌসুমি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া নিম্নাঞ্চল, চরাঞ্চল এবং পদ্মার তীরবর্তী বিল চড়াই, কমলাপুরের বিল, বিল পাতিকলা, দুর্গাদহ বিল, সিধনা মহিশালবাড়ী, বিলের ফসলি জমি পানিতে ডুবে গেছে। এতে বোরো ধানের পাশাপাশি সরিষা, টমেটো এবং অন্যান্য শীতকালীন ফসলও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, রবি মৌসুমে বোরো ধান ভালো ফলন আশা করা হয়, কিন্তু হঠাৎ এই দুর্যোগ তাদের সমস্ত শ্রম, সেচ এবং বিনিয়োগ নষ্ট করে দিয়েছে। মাঠে কৃষকদের কান্না দেখে অনেকের কষ্ট হচ্ছে।
গোদাগাড়ী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, ৮০ হেক্টর জমির ধান, ১১৫ হেক্টর জমির সরিষা, মরিচ, সবজি পানিতে ডুবে গেছে। যদি আর বৃষ্টি না হয় আর দ্রুত জমি পানি নেমে যায় তবে ক্ষতি পরিমান কমে আসবে। বেসরকারি তথ্যমতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান সাড়ে ৩০০ হেক্টর হবে।
“ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক জরিপের তথ্য অনুযায়ী বোরো ধানের উল্লেখযোগ্য অংশ পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নির্ধারণের জন্য মাঠ পর্যায়ে পর্যবেক্ষণ চলছে। জরিপ শেষে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন উপজেলা ও জেলা কৃষি বিভাগে পাঠানো হবে।”
কৃষকরা দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা, ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের আর্থিক সহায়তা, সহজ শর্তে পুনরুদ্ধার ঋণ এবং তৎক্ষণাৎ জরুরি কৃষি সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী কৃষকগণ।
উপজেলার সাধারণ কৃষকরা উল্লেখ করেন, গোদাগাড়ীর কৃষি দেশের খাদ্য নিরাপত্তা ও আঞ্চলিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তবে হঠাৎ এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ তাদের টিকে থাকার লড়াইকে কঠিন করে তোলে। “এই ধাক্কা থেকে ফিরে আসতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার সাহায্য ছাড়া আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়,”
দেওপাড়া ইউনিয়নের ১০০ হেক্টরের বেশী ধান পানিতে ডুবে গেছে। পানি দ্রুত নেমে গেল ক্ষতি তেমন হবে হবে না। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা অতুনু সরকার। তিনি জানান উপজেলা কৃষি অফিসে সব এলাকার ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন করে রিপোর্ট তৈরি করে জমা দেয়া হয়েছে।
উপজেলার ( ভারপ্রাপ্ত ) কৃষি অফিসার মোসাঃ রিতা পারভীন বলেন, কিছুক্ষন আগে ফসলের মাঠ থেকে আসলাম। ৮০ হেক্টর জমির আমন সম্পূন্ন ভাবে নিমজিত হয়েছে, সরিষা ক্ষতি হয়েছে ১৫ হেক্টর কিছু মরিচ, সবজির ক্ষতি হয়েছে। তবে তিনি আরও জানান, সময় আছে সরিষা রিকভার করতে পারবেন কৃষকগণ। আবার বপন করবেন শুধু বীজ ও হালচাষের ব্যয় বাড়বে।
ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের পরই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আর্থিক সহায়তার জন্য নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল আহমেদ জানান, আমি ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার পরিদর্শন করেছি ঝড় বৃষ্টিতে আমন ধান, সরিষাসহ মৌসুমি ফসলের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। হঠাৎ ভারী বৃষ্টিতে শতাধিক লোক পানিবন্ধী হয়েছে। সব চেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে রিশিকুল, পাকড়ী, দেওপাড়া, মাটিকাটা ইউনিয়নে। কৃষি অফিস ক্ষতির তালিকা করলে তাদের ব্যপারে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে।
মোঃ হায়দার আলী
রাজশাহী

Leave a Reply