নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী : রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী এলাকায় পদ্মা নদীর পাড়ে মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে। কয়েকদিন ধরে স্থানীয়রা নদীর পানিতে ও তীরবর্তী বালুতে বুদবুদের মাধ্যমে গ্যাসের উপস্থিতি লক্ষ্য করছেন।
মঙ্গলবার পানি কমার পর স্থানীয়রা বুদবুদের স্থানে দিয়াশলাই জ্বালিয়ে দেখেন, বালুর ওপর আগুন জ্বলছে। এ ঘটনা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে এবং পরদিন অনেক মানুষ গ্যাসের উৎস দেখতে ভিড় করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল আহমেদ এ খবর পাওয়ার পর ফায়ার সার্ভিসের একটি দল পাঠান। তারা নদীর তীরে বুদবুদের সত্যতা নিশ্চিত করেন। পরে বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানকারী প্রতিষ্ঠান বাপেক্সকে জানানো হয়।
শনিবার বাপেক্সের ব্যবস্থাপক (জিওলজি) এসএম নাফিফুন আরহাম, উপ-ব্যবস্থাপক ইমামুল ইসলাম ও পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক রাসেল কবীর প্রেমতলীতে যান। তাদের সঙ্গে ছিলেন, ইউএনও ফয়সাল আহমেদ ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামসুল ইসলাম।
বাপেক্সের দল নদীপাড়ের গ্যাস ডিটেক্টর ব্যবহার করে মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি শনাক্ত করেন এবং বুদবুদের স্থানগুলো থেকে তিন বোতল গ্যাস সংগ্রহ করেন। তারা অন্তত অর্ধশত স্থান থেকে বুদবুদের উৎপত্তি লক্ষ্য করেন। নদীর অপার তীরে নৌকায় গিয়ে আরও কয়েকটি স্থান থেকে গ্যাসের বুদবুদের উপস্থিতি দেখেন।
ইউএনও ফয়সাল আহমেদ জানান, গ্যাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর জায়গাটি সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়েছে এবং সেখানে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বাপেক্স পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করবে।
বাপেক্সের ভূতাত্ত্বিক জরিপের দলপ্রধান এসএম নাফিফুন আরহাম বলেন, ‘আমরা ডিটেক্টরের মাধ্যমে মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি শনাক্ত করেছি। সংগ্রহ করা গ্যাস ল্যাবে পরীক্ষা করা হবে, যেটি নিশ্চিত করবে এটি খনিজ গ্যাস নাকি উদ্ভিদ ও মাটির পচন থেকে উৎপন্ন অল্প পরিমাণ গ্যাস।’
তিনি আরও বলেন, ‘অতীতে এই এলাকায় সার্ভে হয়েছে কি না তা যাচাই করা হবে। পর্যাপ্ত গ্যাস মজুদ থাকলে তা ভবিষ্যতে উত্তোলন করা সম্ভব।’
স্থানীয়দের মধ্যে এ নিয়ে উচ্ছ্বাস থাকলেও প্রশাসন ও বাপেক্স সতর্ক অবস্থান নিয়েছে। গ্যাস শনাক্ত হওয়া এলাকার নিরাপত্তা এবং ভবিষ্যৎ গবেষণা ও সম্ভাব্য উত্তোলন কার্যক্রম পরিকল্পিতভাবে পরিচালিত হবে।
মোঃ হায়দার আলী
নিজস্ব প্রতিবদক,
রাজশাহী।।

Leave a Reply