আরিফ রববানী ময়মনসিংহ।।
মাত্র আট দিনের মাঝে নিখুত তদন্তের মাধ্যমে ময়মনসিংহে নদীতে ভাসমান লাশের পরিচর সনাক্ত করে এই হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করে ঘটনার সাথে জড়িত দুই আসামিকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার করেছে কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ। নিহত আবু সাঈদ কোতোয়ালি মডেল থানা এলাকার অষ্টধার ইউনিয়নের বাসিন্দা। এর আগে ২২ অক্টোবর সকালে উপজেলার মন্নাছের গুদারাঘাটের পাশে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে ভাসমান অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পাওনা টাকা চাওয়াতে একই এলাকার মোঃ আবু রায়হান (২৮) ও মোহাম্মদ ইয়াসিন (২৫) নামক দুই হত্যাকারী তাকে পেটের ভুড়ি বের করে ব্রহ্মপুত্র নদীতে ভাসিয়ে দেয়। পরে তাদের কে কেরানীগঞ্জ থেকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
পুলিশ জানায়- পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে এক পৈশাচিকভাবে হত্যা করা হয় আবু সাঈদকে। নৃশংসতার চূড়ান্ত রূপে তার পেট চিরে ভুঁড়ি বের করে ব্রহ্মপুত্র নদীতে ফেলে দেয়া হয় লাশটি। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনায় জেলা পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম এর নির্দেশে, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আবদুললাহ্ আল মামুন এর তত্তাবধানে কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি) মোহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে, পুলিশের নিরলস তৎপরতায় অবশেষে রহস্যের জট খুলে এবং কোতোয়ালি মডেল থানার এস আই মোঃ মাহবুব ফকির ও এ এস আই মোঃ হুমায়ন কবীর সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে গ্রেপ্তার হয়েছে মূল দুই আসামি — মোঃ আবু রায়হান (২৮) ও মোহাম্মদ ইয়াসিন (২৫),তারা উভয়েই সদর উপজেলার অষ্টধার ইউনিয়নের নিমতলা গ্রামের বাসিন্দা। গ্রেপ্তারের পর তারা আদালতে হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, পাওনা টাকা চাওয়া নিয়েই আবু সাঈদের সঙ্গে রায়হান ও ইয়াসিনের বিরোধ তৈরি হয়। একপর্যায়ে তারা আবু সাঈদকে কৌশলে ডেকে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে, তারপর পেট চিরে ভুঁড়ি বের করে নদীতে ভাসিয়ে দেয়, যাতে লাশ দ্রুত নষ্ট হয়ে যায় এবং শনাক্ত করা না যায়। পরে মন্নাছ এর গুদারাঘাটের পাশে ভাসমান অবস্থায় লাশ দেখতে পেয়ে এলাকাবাসীর ৯৯৯ কল এর মাধ্যম কোতোয়ালী মডেল থানা পুলিশ জানতে পারেন চর দড়িকুষ্টিয়া নামাপাড়া অজ্ঞাত ব্যক্তির লাশ ভাসমান অবস্থায় নদীতে পড়ে রয়েছে । পুলিশ সেখান থেকে আবু সাঈদ এর মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরে সিআইডি ফিঙ্গারপ্রিন্ট এর মাধ্যমে লাশের পরিচয় সনাক্ত করতে সক্ষম হযে ৩০ শে অক্টোবর দুপুর সাড়ে বারোটায় ঢাকা কেরানীগঞ্জ থেকে ১ নং আসামি মোঃ আবু রায়হান ও ইয়াসিন কে গ্রেফতার করে পুলিশ। এব্যাপারে নিহতের ভাই জসিম উদ্দিন কোতোয়ালী মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে যার থানার সিসি নং- ১০৪৭- জিডি নং ২৫৭০। পুলিশ জানায় গ্রেপ্তার আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে, এবং তারা হত্যার কথা অকপটে স্বীকার করেছে।
কোতোয়ালী ওসি মোহাম্মদ শিবিরুল ইসলাম বলেন, আমরা জনগনের সেবা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই রাত-দিন কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি, অপরাধ দমন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় পুলিশ সবসময় সজাগ রয়েছে, আমি চাই জনগণ যেনো পুলিশকে বন্ধু ও নিরাপত্তার প্রতীক হিসেবে দেখে। তিনি আরও জানিয়েছেন-এই ঘটনায় তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। ঘটনায় আরও কেউ জড়িত থাকলে তাদেরকেও দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
তবে এই নৃশংস ঘটনায় এলাকাজুড়ে শোক, ক্ষোভ ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়দের দাবি—এদের সর্বোচ্চ শাস্তি হোক,ভবিষ্যতে আর কেউ যেনো এমন অমানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে না পারে।

Leave a Reply