জি.এম স্বপ্না,সিরাজগঞ্জ :
সিরাজগঞ্জের সলঙ্গা থানার মধ্যপাড়া ভরমোহনী গ্রামের যুবক জাকির হাসান।বর্তমানে তার বয়স ৩০ বছর।ভূমিহীন দরিদ্র পিতা আব্দুল খালেক এক সময় রাজমিস্ত্রি ছিলেন।মাত্র একটি টিনের ঘর ছাড়া আর কোন ভিটেমাটি নেই।বয়সের ভারে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্হ অবস্থায় কর্মহীন।১ ভাই ২ বোন মিলে জাকিরের ৫/৬ জনের পরিবার।সলঙ্গা সরকারি প্রাইমারি স্কুল হতে পঞ্চম শ্রেণী পাশ করে জাকির।আর্থিক দৈন্যতার কারণে সলঙ্গা ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে কারিগরি শাখায় ভর্তি হয় সে।২০২৪ সালে জিপিএ-৪.১০ পেয়ে এসএসসি পাস করে।বাবার অসুস্থতায় ২টি বোনের পড়াশোনাসহ অক্ষম পিতার সংসার পরিচালনার দায়ভার চাপে জাকিরের ঘাড়ে।সলঙ্গা বাজারে অবস্থিত সলঙ্গা আদর্শ ইসলামী আদর্শ কেজি স্কুলে ২ হাজার টাকা বেতনে শুরু হয় জাকিরের পিয়ন পদে কর্ম জীবন।সামান্য বেতনে সংসার চালাতে না পেরে বিকেল ৪ টা হতে রাত ৮টা পর্যন্ত শুরু করে জাকির ভ্রাম্যমান চা বিক্রি।বাড়িতে চা তৈরি করে ফ্লাক্সে ভরে চায়ের কাপ আর পানি নিয়ে উচ্চস্বরে চা গরম,চা গরম বলতে বলতে ছুটে চলে দোকানিদের ঘরে ঘরে আর অলিতে গলিতে।শুধু তাই নয়,সুন্দর কন্ঠের গায়ক ছাত্র জাকির।যাকেই চা খাওয়াবে তাকেই গানের একটি কলি গেয়ে শুনাবে।দৃঢ় মনোবল অদম্য সাহস আর বুদ্ধিমত্তার হার মানাতে পারেনি জাকিরকে।পড়াশুনা যেন তার জীবনের শখ।এভাবেই বেড়ে ওঠা অদম্য জাকির আবারো এইচএসসিতে ভর্তি হয় মুরাদপুর ফাজিল মাদরাসা বিএম শাখায়।দিনে পিয়নের চাকরি বিকেলে চা বিক্রি আর রাত জোগে পড়াশুনা চলতে থাকে জাকিরের।অসুস্থ্য কর্মহীন পিতার একমাত্র ছেলে জাকির এভাবেই অভাব নামের সংসার চালাতে থাকে। ইতিমধ্যেই ২ বোনকে লেখাপড়া করিয়ে বিনা যৌতুকে বিয়ে দিয়েছে জাকির।অসুস্থ বাবা-মার চিকিৎসা,সংসার খরচ, নিজের পড়াশুনা চালাতে হিমশিম আর নিদারুন কষ্টে চলতে হচ্ছে জাকিরকে।তাইতো জীবন সংগ্রামের এক উজ্জ্বল নাম সলঙ্গার অদম্য ছাত্র,চা বিক্রেতা জাকির।মাত্র ১টিনের ঘরে বসবাস করতে হচ্ছে পরিবারের সবাইকে নিয়ে।এভাবেই আলাপচারিতায় সদা হাস্যজ্জল জাকির জানায় তার পরিবারের করুণ কাহিনী।তাই সমাজের বিত্তবান,ধনাঢ্য ও মানবিক সংগঠন গুলোকে একটি ঘরসহ আর্থিক সহযোগিতার বিনীত অনুরোধ জানান অদম্য শিক্ষার্থী জাকির।
জীবন সংগ্রা-মের এক উজ্জ্বল নাম চা বিক্রেতা জাকির

Leave a Reply